সুমুদ ফ্লোটিলা কি এবং কেন.......
“Global Sumud Flotilla” (গ্লোবাল সামুদ ফ্লোটিলা) হলো একটি আন্তর্জাতিক নাগরিক উদ্যোগ, যা ২০২৫ সালে গাজা অবরোধ (Israeli blockade of Gaza) ভাঙার এবং গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে শুরু করা হয়েছে। বিস্তারিত বিবরণঃ
“Sumud” শব্দটি আরবি থেকে নেওয়া, যার মানে “অটলতা / স্থিরতা / জেদ”।
Global Sumud Flotilla (GSF) মূলত একটি সেচ্ছাসেবী (non-profit / সিভিল সোসাইটি) প্রয়াস, যেখানে অনেক ছোট জাহাজ (ভেসেল) মিলে গঠন করা হয়েছে।

এর মূল উদ্দেশ্যঃ
★গাজা অবরোধ ভাঙা, অর্থাৎ সাগরপথে গাজায় পৌঁছতে বাধা দেয়ার চেষ্টা করা।
★গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া।
★আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ করা, গাজায় যে সংকট চলছে তা আন্তর্জাতিক ন্যায্য আইন ও মানবিক অধিকার পরিপন্থী।
★বিশ্বব্যাপী সাধারণ মানুষকে একত্রিত করে “ন্যায্যতা” এবং “মানবিক করিডোর” প্রতিষ্ঠার দাবি তোলা।
সুমুদ ফ্লটিলার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ইসরায়েলের অবৈধ অবরোধ ভাঙা, গাজায় মানবিক সাহায্য (খাবার, ওষুধ, চিকিত্সা) পৌঁছে দেওয়া, গণহত্যা উন্মোচন করা।

গঠন ও অংশীজনঃ
GSF জন্ম নেয় ২০২৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে, বিভিন্ন গ্রাসরুট (grassroots) এবং মানবাধিকার/সোলিডারিটি সংগঠনের মিলিত উদ্যোগে। এই উদ্যোগে অংশ নেওয়া প্রধান সংগঠনগুলোঃ
★ Freedom Flotilla Coalition (সাবেক বেশ কিছু ফ্লোটিলা মিশনে কাজ করেছে)।
★ Global Movement to Gaza (GMTG)।
★ Maghreb Sumud Flotilla (উত্তর আফ্রিকার অংশীদার)।
★ Sumud Nusantara (আশিয়া থেকে অংশগ্রহণকারী, বিশেষ করে মালয়েশিয়া ও অন্যান্য দেশ)।
অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ও পরিধিঃ
৪৪টির বেশী দেশ থেকে প্রতিনিধি থাকবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। প্রায় ৫০টির মতো জাহাজ (small vessels) অংশগ্রহণের কথা বলা হয়েছে।
১৫,০০০+ জন স্বেচ্ছাসেবকভাবে অংশগ্রহণের জন্য নিবন্ধন করেছেন। যারা ৬টি মহাদেশ থেকে এসেছে, অস্ট্রেলিয়া, নর্থ এন্ড সাউথ আমেরিকা, আফ্রিকা, ইয়োরপ এবং এশিয়া। যেসব মুসলমান দেশের মানুষ এতে অংশগ্রহণ করেছে সেগুলো হলো, তুরস্ক, তিউনিশিয়া, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়ায় ইত্যাদি।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ফটো জার্নালিস্ট, এক্টিভিস্ট এবং মানবাধিকার ব্যাক্তিত্ব শহীদুল আলম, বাংলাদেশ থেকে সমুদ ফ্লোটিলায় অংশগ্রহণ করেছেন। (শ্রদ্ধেয় শহীদুল আলম আমার তিন ব্যাচ সিনিয়র ক্যাডেট, ঝিনেদা ক্যাডেট কলেজে। আমার সৌভাগ্য আমি তার সাথে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে একসাথে আন্দোলনে সংগ্রামে সহযাত্রী এবং কিছুদিন একসাথে কেন্দ্রীয় কারা হাসপাতালে ছিলাম)।
যাত্রা ও প্রস্তুতিঃ
শুরুতে ৪ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করার কথা ছিল টিউনিসিয়ার অংশ, তবে কিছু বিষয় বিবেচনা করে
যাত্রার সময়সূচি কিছুটা পরিবর্তিত হয়। প্রাথমিক ভাবে কিছু জাহাজ ৩০-৩১ আগস্ট ২০২৫ তারিখে জেনোয়া ও বার্সেলোনা থেকে যাত্রা শুরু করেছে। পরবর্তী ধাপে তিউনিসিয়া (Tunis) থেকে অংশগ্রহণ করেছে।
যাত্রার পথপ্রদর্শক এবং সাপোর্ট হিসেবে “Emergency” নামক একটি নন-গভর্নমেন্টাল সংগঠন তাদের “Life Support” জাহাজ সহ যুক্ত হয়েছে, যা জরুরি সহায়তা ও উদ্ধার অপারেশন পরিচালনায় সক্ষম।
প্রতিবন্ধকতা ও ঘটনাঃ
যাত্রার পথে কিছু জাহাজ ড্রোন হামলার শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। ড্রোন, বিস্ফোরণ ও যোগাযোগ বিঘ্ন ঘটেছে- কিছু অংশগ্রহণকারী বলেছে তারা রাতে বিস্ফোরণ শুনেছেন এবং অচেনা ড্রোনকে দেখে আক্রমণ আশংকা প্রকাশ করেছেন। “আক্রমণ” ও “পরিবহন” প্রতিবন্ধকতার কারণে যাত্রা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে হয়েছে।
গাজার সমুদ্রতীরের কাছাকাছি পৌঁছাতে গেলে ইস্রায়েলি নৌবাহিনী বা জাহাজ দ্বারা বাঁধা দেওয়া এবং আটক করার খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।
সমর্থন ও প্রতিক্রিয়াঃ
অনেক দেশ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা এই উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছে। শ্রম ইউনিয়ন ও জনসাধারণ অনেক পর্যায়ে এই ফ্লোটিলাকে সমর্থন জানাচ্ছেন।
ইতালি, স্পেন সুমুদ বহরকে নির্দিষ্ট দূরত্ব পর্যন্ত নিরাপত্তা দিচ্ছে। তুরস্ক, পাকিস্তান, স্পেনসহ একাধিক দেশ “GSF-এর নিরাপত্তা” বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


