মানুষের সৌন্দর্যঃ চেহারায় নয়, চরিত্রে.....
সৃষ্টিকর্তার অপার সৃষ্টিতে বৈচিত্র্য আছে, কিন্তু সত্যিকারের সৌন্দর্য লুকিয়ে থাকে অন্তরে। সৃষ্টিকর্তা তাঁর অগাধ প্রজ্ঞায় সৃষ্টি করেছেন মানুষ ও সমস্ত প্রাণ। কারও গায়ের রং উজ্জ্বল, কারও চোখ গভীর, কারও মুখে মিষ্টি হাসি। কিন্তু কেউই নিজের চেহারা বেছে নিতে পারে না- এটি পুরোপুরি সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছা। তাই মানুষের আসল সৌন্দর্য কখনোই মুখে নয়, মনের গভীরে।

চেহারা চোখে পড়ে, কিন্তু চরিত্র হৃদয়ে ছোঁয়।
মনের সৌন্দর্য গড়ে ওঠে শিক্ষা, জ্ঞান, ধর্মীয় মূল্যবোধ, পরিবার ও পারিপার্শ্বিকতার আলোকে। একটি শিশুর জন্ম হয় নিষ্পাপভাবে, কিন্তু সময় ও সমাজই তাকে শেখায় কোনটা সঠিক আর কোনটা ভুল। সেই শেখার পথেই গড়ে ওঠে একজন মানুষের আসল রূপ- তার ব্যবহার, বিনয়, সততা ও মানবতার মধ্য দিয়ে।

অনেক সময় বাহ্যিক চাকচিক্যের আড়ালে অন্ধকার!
আজকের সমাজে আমরা বাহ্যিক সৌন্দর্যের পেছনে ছুটি- ফর্সা ত্বক, দামি পোশাক, বাহারী সাজগোজ। অথচ একজন দুশ্চরিত্র, নীতিভ্রষ্ট, লোভী মানুষ যখন প্রভাবশালী হয়, তখন তার ছায়া ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজ- সব জায়গায় শুরু হয় নৈতিক অবক্ষয়।
মানুষ তখন মুখে হাসে, কিন্তু অন্তরে বিষ জমে।
চরিত্রহীনতার ছোঁয়ায় সমাজ ধীরে ধীরে হারায় তার আত্মা।
আমরা প্রতিদিন দেখি শিক্ষিত অমানুষ, ধর্মজ্ঞানী কিন্তু নির্মম মানুষ এবং বিজ্ঞ কিন্তু বিবেকহীন ব্যক্তিত্ব। তবুও আমাদের হুশ ফেরে না; আমরা নিজেদের চরিত্র শুদ্ধ করি না। বরং অন্যের দোষে আনন্দ পাই, নিজের ভুল ঢাকি আত্মপ্রবঞ্চনার অজুহাতে।
আশার আলোঃ অন্তরের সৌন্দর্য।
তবুও সব কিছু শেষ হয়ে যায়নি। এখনও অনেক মানুষ আছেন, যাদের সৌন্দর্য চেহারায় নয়, চরিত্রে- যারা অন্যের দুঃখে কাঁদে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করে, নিজের অবস্থান থেকে সত্যের পক্ষে দাঁড়ায়। তাদের মতো মানুষই সমাজকে বাঁচিয়ে রাখে, ভালোবাসার আলোয় ভরিয়ে দেয় পৃথিবীকে।
বাহ্যিক সৌন্দর্য একদিন হারিয়ে যায়- রঙ ফিকে হয়, মুখে ভাঁজ পড়ে। কিন্তু চরিত্রের সৌন্দর্য কখনো মরে না। মানুষের স্বভাব চরিত্র বেঁচে থাকে মানুষের মনে, স্মৃতিতে, শ্রদ্ধায়।
চেহারার নয়, চরিত্রের মানুষ হোন- তবেই আপনি সত্যিকার সুন্দর।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


