somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মানুষ

২১ শে নভেম্বর, ২০০৯ রাত ৮:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

”এ সমাজে যারা খাটে তারা কিছু অর্জন করে না। আরযারা সবকিছু পাই তাদের খাটতে হয় না” - কথাগুলো আলকাছ চেয়্যারম্যান এর বেলায় একে বারেই সত্যি নয়। আলকাছ চেয়্যারম্যান এর পিতৃ প্রদত্ত নাম ছিল আক্কাস। সে খান থেকে কবে কখন আলকাছ হয়ে গেল তা কেউ জানে না। আজ প্রায় ১২ বছর হল হরিণপাতা ইউনিয়নের চেয়্যারম্যান আলকাছ চেয়্যারম্যান। এ ইউনিয়নের এক রকম রাজা তিনি। না চাইতেই সব পান। কিন্তু এই ৫৮ বছর বয়সে এসেও তার পরিশ্রমের শেষ নেই। অত্যাচারী এবং অত্যাচারীত শ্রেণী সর্বদাই পরস্পরের প্রতিপক্ষ হয়ে থেকেছে। অবিরাম লড়াই চালিয়েছে ক্‌খনও প্রকাশ্যে কখনো বা আড়ালে। আমাদের আলকাছ চেয়্যারম্যান এক সময় অত্যাচারীত দের দলেই ছিল। তবে সে মুক্তিযুদ্ধের আগের কথা। মুক্তিযুদ্ধের সময় বেশ কিছু ঘটনা চক্রে তার হাতে প্রচুর সম্পত্তি এসে পড়ে। বুদ্ধিমান লোক সুযোগ হাত ছাড়া করে না। আলকাছ সাহেব ও হঠ্যাৎ করে নিজের সত্তাকে বিকিয়ে দিয়ে ধনীদের কাতারে নাম লিখিয়ে ফেলেন। তার পর সেই ধন আগলে রাখা আর তা বাড়ানোর কলা কৌশল এক সময়ের ভূমিহীন কে আজকের আলকাছ চেয়্যারম্যান এ পরিণত করেছে। আলকাছ সাহেবের সাত ছেলে চার মেয়ে। সকলেই আজ বেশ প্রতিষ্ঠিত। সমাজে নিজ নিজ অবস্থান শক্ত করেছে। আজকের সমাজ পরিবার প্রথা থেকে তার ভাবালু ঘোমটা টাকে ছিড়ে ফেলে পারিবারিক সম্বন্ধকে নিছক আর্থিক সর্ম্পকে পরিণত করেছে। আলকাছ সাহেবের বেলায়ও তাই। তার সন্তানেরা কেউ তার কাছে থাকে না। তার চার বউ এর তিন জন ইতিমধ্যে গত হয়েছেন। ছোট বউকে নিয়ে তার বর্তমান সংসার। আর কাছের মানুষ বলে তার এক ছোট ফুফাতো ভাই। যে ছায়ার মত আগলে রাখে তাকে। চেয়্যারম্যান সাহেবের সকল সুকীর্তি-কুকীর্তির স্াথী। ইউনিয়নে তার ও তার ছেলেদের দাপটও কম নয়। কোন শ্রেণীর উপর অত্যাচার বজায় রাখতে হলে তার জন্য এমন একটা অবস্থা নিশ্চিত করতে হয় যাতে তার দাসোচিত অসিত্মত্ব টুকু অন্তত চালিয়ে যেতে পারে। হরিণপাতা ইউনিয়নে সে রকম একটা অবস্থা সৃষ্টি করে রেখেছে আলকাছ চেয়্যারম্যান। ইউনিয়নের অর্ধেকের বেশী জমি তার। উনি নিজেও জানেন না ওনার কত জমি। কিন্তু ভিতরের খবর হল তার সবচেয়ে কাছের লোক ফুফাতো ভাই মিজান মিঞা প্রায় সব জমিই নিজের নামে করে ফেলেছে। তবে খুব সাবধানে আর কৌশলে। আলকাছ চেয়্যারম্যান বেচেঁ থাকলে তার প‍ক্ষ এ সমপত্তি কোন দিন ভোগ করার সুযোগ নেই। আজ তার আশা পূরণ হতে চলেছে। আলকাছ চেয়্যারম্যান মৃতূ শয্যায়। ১১ ছেলে-মেয়ের কেউ পাশে নেই। মিজান মিঞার দেরী সহ্য হচ্ছে না। আলকাছ চেয়্যারম্যানের যেন কই মাছের জান। এই যায় যায় তো আবার ফিরে আসে। ধর্য্যর বাধঁ ভেঙ্গে মানুষ অমানুষ হয়ে যায়। মিজান মিঞা ভেবে চিনেত্ম ঠিক করেছে আজ রাতে সে আলকাছ চেয়্যারম্যান কে মেরে ফেলবে। কি ভাবে মারবে তাও ঠিক করা। তার কাছে মানুষ মারা নতুন কিছু না। আলকাছ চেয়্যারম্যান এর কথায় কম মেয়েকে এ ইউনিয়নে সে বিধবা করেনি। তবে কোথায় যেন একটা সাহসের অভাব। মনের কোন অংশ যেন সায় দিচ্ছে না। একদিন এই আলকাছ চেয়্যারম্যান তাকে প্রায় শূণ্য থেকে তুলে এনে আশ্রয় দিয়েছিল। প্রতিটি মানুষের ভিতর দুটো সত্তা থাকে। একটি মানুষ সত্তা আর একটি অমানুষ সত্তা। শেষ পরযন্ত অমানুষ সত্তার ই জয় হল। এই ঘরে এখন কেউ নেই। বিছানায় আলকাছ চেয়্যারম্যান ঘুমিয়ে আছে। পাশে বসে আছে মিজান মিঞা। স্বিধান্তহীনতায় ভুগছে। হাতের কাছেই বালিশ। মুখে চেপে ধরলেই সব সমস্যা মিটে যায়। মিজান মিঞা বালিশ হাতে নিল। এই প্রথম তার হাত কাপঁছে মানুষ মারতে গিয়ে। অজানা আশঙ্কায়। অমানুষ সত্তাটা যদিও জেগে উঠেছে। ঠিক এ সময় হঠ্যাৎ বিদ্যূৎ চলে গেল। সমস্ত ঘর অন্ধকার। মানুষের মানুষ হওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান এই অন্ধকারের। অন্ধকারকে জয় করতে গিয়েই আজকের মানব সভত্যা। আবার এই অন্ধাকারের মানুষ হয়ে যাই অমানুষ ... ... . . . . . . . . . ।
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×