সব আলো বন্ধ করে শুয়েছিলাম। ভোরের দিকে ঘুম পাচ্ছিল। ঘড়িতে দেখলাম কয়টা বাজে। হিসাব করার চেষ্টা করলাম ঢাকায় এখন কয়টা বাজে। মাথা ভালো মতন কাজ করছিল না। ভোরের আলোর সাথে মিশে ছিল ভয়াবহ এক শূন্যতা। সন্ধ্যার আকাশের সাথে এই আকাশটার কোথায় যেন মিল আছে। মহাপুরুষ হতে পারিনি বলে ঘুম,ক্ষুধার মত জৈবিক ব্যাপার গুলো এখনো কাটিয়ে উঠতে পারিনি। প্রচন্ড ক্লান্তিতে ঘুম আসছিল। সব ক্লান্তি যেন একসাথে জড়ো হল চোখের পাতায়। চোখ জুড়ে আর কিছুই ছিল না, প্রিয় কোন মুখ ছিল না, ছিল শুধু সহস্র মাইল হেঁটে আসার ক্লান্তি।
ঘুম থেকে উঠে শুরু হল নতুন দিন। বেশ রোদ উঠেছে। ভাবছিলাম ভালোইতো হল। বোহেমিয়ান একটা মানুষকে ভালোবাসা যায় কিন্তু সংসার করতে গেলে সেই মানুষটা খুব একটা সুবিধার হওয়ার কথা না। ইয়ারফোনে দুঃখ দুঃখ টাইপের কিছু গান চলছিল। শুনতে ইচ্ছা হচ্ছিল,বব ডিলানের ইট্স অলরাইট। প্লেলিস্টে খুঁজে পেলাম না। অযথা বাজতে থাকল, জন ডেনভারের ফ্লাই অ্যাওয়ে। পোর্টসমাউথ থেকে এক বন্ধুর আসার কথা ছিল রাতে। কিছু কেনাকাটা করতে হবে। একা একা সারা দুপুর সুপারশপ গুলোতে ঘুরলাম। একটার পর একটা সারি পেরোচ্ছি আর ভরে ফেলছি আমার ট্রলি। সেল্ফ পে থেকে পে করলাম। চেক আউটে বসে থাকা মানুষটার কৃত্রিম হাসি দেখতে হলনা। বাসায় এসে একা একা অক্টোপাস রান্না করলাম। একা একা খেয়ে দেয়ে একা একা একটা সিগারেট।
পুরো সন্ধ্যাটা কাটিয়ে দিলাম উদভ্রান্তের মতো হাঁটাহাঁটি করে। তারপর অপেক্ষা করছিলাম বন্ধুর জন্য। রাতের ভিক্টোরিয়া স্টেশন আলোতে ঝলমল করছিল। স্টেশনের রেস্তোরা গুলোর কোন টেবিলটাতে আমরা কবে বসেছিলাম সব যেন মনে আছে। টেবিলের অন্য প্রান্তে বসে সেদিন আর কেউ হাসছিল না আমার কথায়। সামনের চেয়ারটা যেন মহাশূন্যের মত ফাঁকা। বন্ধু বাস থেকে নেমে জিজ্ঞেস করল,কেমন আছিস? আমার নির্বিকার উত্তর, ভালো আছি। হেরে যাওয়ার গল্প সবাইকে শুনাতে নেই। সবাই বিরক্ত হ্য়।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই অক্টোবর, ২০০৯ সকাল ৯:১৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




