আরভিং ৷
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের একটি বর্ধিষ্নু শহর ৷ এখানের একটি হোটেলে হিসাবরক্ষকের দায়ীত্বে কাজ করছেন এক প্রবীন বাংলাদেশী ৷ ১৯৯৯ সাল ৷ কয়েক দিন পর কার্য্যস্থলে আরও একটি নতুন মুখ এসে উপস্থিত ৷ বাংলাদেশী ৷ সিলেট থেকে ৷ বয়সে তরুন ৷ ২১/২২ বছর বয়স হবে ৷ আলাপ সূত্রে প্রবীন জানতে পারলেন- বড় ভাই ভিসা করে নিয়ে গেছে ৷ বি, এ, পাশ ৷ চট্টগ্রামে লেখাপড়া করেছে ৷
অভিজ্ঞতার কথা জিজ্ঞাসা করায় সোজাসুজি বললো - কোন কাজ করিনি ৷ চট্টগ্রামের এক প্রভাবশালী মন্ত্রীর চামচা ছিলাম ৷ ওই মন্ত্রী ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম গেলে হয় বিমান বন্দরে নয়তো রেল ষ্টেশনে জিন্দাবাদ দিয়ে অভিনন্দন জানাতাম ৷ দু তিন দিন পর আবার দেখা ৷ হাতে একটা বলপেন ও খাতা ৷ প্রবীন ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলেন - কেমন আছো ? এই কথাটা ইংরেজীতে কিভাবে বলবেন - জানতে চাইলো ৷
বললেন - হাউ আর ইউ ?
না, আমেরিকানরা কথ্য ভাষায় যেভাবে বলে সেটা বলুন ৷
বললেন - হাউ ডি - ?
প্রবীন লক্ষ করলেন মুখস্ত করার জন্য ক্থাগুলো খাতায় লিখে নিচ্ছে ৷ মনের সংশয় ও দ্বিধা দূর করার জন্য প্রবীন বললেন -
তুমি তো বলেছিলে যে তুমি বি,এ,পাশ ?
প্রত্যুত্তরে জানালো - সত্যি বলতে কি, আমি পড়াশুনা করে বি,এ, পাশ করিনি ৷ - তা হলে ? -আমি পটিয়া স্কুলে ভর্তি হই - বলে চললো তরুন ৷ ওখান থেকে ৪৫০০.০০ টাকা ঘুষ দিয়ে ম্যাট্রিক সার্টিফিকেট বের করি ৷ তারপর ওখানকার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিন হাজার টাকা দিয়ে
বি,এ, পাশ সার্টিফিকেট বের করি ৷ আমার বি,এ, পাশের মুল্য মোট ট. ৭৫০০.০০ ৷ তারপর বললো - এদেশে এসে আজ আমার সত্যিকার মূল্য বুঝতে পারছি ৷ কথপোকথনের ফাঁকে প্রবীনের মানষপটে ভেসে উঠলো ১৯৯০ সালের একটি চিত্র ৷ কাতারে আমেরিকান দূতাবাসে গিয়েছেন ‘ বার্থ সার্টিফিকেট ‘ জমা দিতে ৷ বাংলাদেশে সত্যায়িত করা কপি দেখে কর্মকর্তা বললেন - ‘ আপনাদের দেশে টাকা দিয়ে যেকোনো ডকুমেন্ট বানানো যায় , এটা আমরা জানি ৷ এই সত্যায়িত কপি আমাদের নীতিগত ভাবে নিতে হয় বলেই গ্রহন করছি ৷ কিন্তু এর সত্যতা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে ৷’ প্রতিবাদ করার মত কোন বক্তব্য সেদিন তার মুখে ছিল না ৷ শুধু ভাবছিলেন বিদেশীদের চোখে বাংলাদেশের ভাবমূর্ত্তির কথা ৷

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



