কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সভাপতি কবি রাগিব হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রবীণ সাংবাদিক বীর মুক্তিযোদ্ধা সালেহ চৌধুরী ,সম্মানিত অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ আসমা আব্বাসী। কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য কবি আবদুর রাজ্জাকের জন্মশত বার্ষিকীতে তার স্মৃতির উদ্দেশ্যে নিবেদিত সাহিত্য সম্মেলনের সেমিনারে মূল বিষয় `সিলেটের লোক সাহিত্য: গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়' শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট গবেষক প্রফেসর নন্দলাল শর্মা। কেমুসাস'র সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক সেলিম আউয়াল ও সম্মেলনের সদস্যসচিব আবদুল মুকিত অপি'র যৌথ উপস্থাপনায় সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কেমুসাস সাধারণ সম্পাদক হারুনুজ্জামান চৌধুরী , আলোচনায় অংশ নেন গবেষক সৈয়দ মোস্তফা কামাল, গবেষক আবদুল হামিদ মানিক, গবেষক তরফদার মোঃ ইসমাইল, ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জুবায়ের সিদ্দিকী (অবঃ)। কবি আবদুর রাজ্জাকের পরিচিতি ফায়যুর রহমান ও প্রফেসর আবদুল আজিজের পরিচিতি কবি নাজমুল আনসারী উপস্থাপন করেন। সভার শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন সাহিত্যকর্মী গোলাম ইউসুফ সাগর এবং অতিথিদের ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান এডভোকেট আজিজুল মালীক চৌধুরী, এডভোকেট মুজিবুর রহমান চৌধুরী, কবি লাভলী চৌধুরী, সৈয়দ মিসবাহ উদ্দীন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশিষ্ট লোক গবেষক মুস্তাফা জামান আব্বাসী বলেন, আমাদের এ দেশ লোক সাহিত্যের লীলাভূমি। এদেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে আছে সাহিত্যের ভান্ডার। সাহিত্য মানুষের মনের দরজাকে খুলে দেয়। আব্বাস উদ্দিন, আব্দুল আলীম, রাধারমন, দুরবীন শাহর মত অনেক গুণী কবি শিল্পীকে ধারণ করেছে এ দেশ। সাহিত্য সংস্কৃতির সুন্দরতম বিকাশ ঘটেছে সুরেলা ছন্দে ছন্দে। আমাদের লোক সাহিত্য হৃদয়ে আকঁড়ে ধরতে হবে। একে পৌঁছে দিতে হবে প্রতিটি মানুষের মনের কোণে। এর বিকাশ লালনে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সিলেট সাহিত্যের উর্বর ভূমি। এ সংসদ তার আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে শাহজালাল (রাঃ) পূণ্যভূমি থেকে দেশের প্রতিটি কোনায়। এখানে অসংখ্য সুফি সাধক তাঁদের জ্ঞান ও আর্দশের আলোয় আলোকিত করেছেন চারপাশ। হযরত শাহজালাল (রহঃ) ও তাকে সাথীদের চেতনা আন্দোলন এদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রার হাতিয়ার।
সাংবাদিক সালেহ চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, এ সংসদ জ্ঞানের বিকাশে ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। আজকের এ সাহিত্য পুরস্কার প্রদান সত্যিই প্রশংসনীয়। প্রফেসর আব্দুল আজিজ একাধারে কৃতি শিক্ষক ও লেখক। তিনি একজন কল্যাণকামী মানুষ।
আসমা আব্বাসী তাঁর বক্তব্য বলেন, কেমুসাস সাহিত্যের সুন্দরতম প্রতিষ্ঠান। লেখক কবি সাহিত্যিকদের এক অপূর্ব মিলনকেন্দ্র। এ সংসদ দেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের চাইতেও ব্যতিক্রম। দীর্ঘদিন থেকেই সংসদে আসার স্বপ্ন দেখছিলাম। তিনি দেশের তরুনদের মধ্যে ধর্মীয় শিায় বীজ বুপনের আহবান জানান। তিনি বলেন, ধর্মকে বাদ দিয়ে জীবন হয় না।
প্রফেসর আব্দুল আজিজ তাঁর বক্তব্যে বলেন, সাহিত্য ও সংস্কৃতির অগ্রযাত্রায় কেমুসাসের ভূমিকা অনন্য। কেমুসাসের এ সাহিত্য পুরস্কার আমার জন্য গর্ব ও আনন্দের। এ অর্জন আমার জীবনের অন্যান্য সব অর্জনের চাইতে বড় অর্জন। প্রবীন ও নবীন লেখকদের পৃষ্টপোষকতার মাধ্যমে কেমুসাস তার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে তা স্মরণীয় হয়ে থাকবে কালের পাতায়।
সৈয়দ মোস্তাফা কামাল তার বক্তব্যে বলেন, লোক সাহিত্য আমাদের মূল্যবান সম্পদ। এ সম্পদ জ্ঞান অর্জিত। লোক সাহিত্য লালনে আমাদের অধিক মনযোগী হওয়া প্রয়োজন। এর জন্য ব্যাপক গবেষণা ও পরিশ্রমের প্রয়োজন রয়েছে। নতুন প্রজন্মকে মূল মূল্যবোধের সাথে পরিচয় ঘটাতে হবে। সুন্দর সাহিত্যের লালনেই এ সমাজ প্রস্ফুটিত হয়ে উঠবে। সুন্দর সাহিত্যের লালন ও পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে এ দেশ এগিয়ে যাবে সামনের দিকে।
আবদুল হামিদ মানিক তার বক্তব্য বলেন, সাহিত্য ও সংস্কৃতির লালন একটি জাতি সত্ত্বার পরিচয় বহন করে। এদিকে থেকে লোক সাহিত্যের গুরুত্ব অনেক বেশি। এ সাহিত্য সর্বসাধারণের মধ্যে বর্ধিত। লোক সাহিত্যের সাথে আমাদের মূল শিকড় প্রোথিত। লোক সাহিত্যে রয়েছে জ্ঞানের গভীরতা, চমৎকার পর্যবেণ আর সুন্দর পরিবেশন। পরিবর্তনশীল বিশ্বের সাথে এগিয়ে চলার পাশাপাশি আমাদের শিকড়ের সন্ধানী হতে হবে।
সাধারণ সম্পাদক হারুনুজ্জামান তার বক্তেব্য বলেন, আমরা জ্ঞানের উৎকর্ষতা চাই। কেমুসাস দীর্ঘ সময় ধরে দেশের প্রাচীনতম সাহিত্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে সাহিত্যের চর্চা ও বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। আমাদের নতুন প্রজন্মকে গর্বিত উত্তরাধিকার হিসেবে তাদেরকে সাহিত্যে ও জ্ঞান সাধনায় মনোযোগী করে তুলতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে কবি রাগিব হোসেন চৌধুরী শিল্পী আব্বাস উদ্দিনের কেমুসাস পরির্দশনের কথা প্রসঙ্গ উলেখ করে বলেন, কেমুসাস দেশের একটি গর্বিত প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠান অনেক গূণী ব্যক্তি জন্ম দিয়েছে। আমরা আমাদের দেশকে অনেক দুর এগিয়ে নিতে চাই সাহিত্য সাধনার মাধ্যমে জ্ঞান চর্চার মাধ্যমে।
মূল প্রবন্ধে প্রফেসর নন্দলাল শর্মা বলেন, সিলেট লোক সাহিতের চর্চার বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিক একাডেমী গবেষণা শুরু হয়েছে। আমাদের এই গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ের আলোয় বিভাষিত হোক বিশ্বের ফোকলোর জগৎ তরুন গবেষকদের কাছে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ৮:১১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



