somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বৃষ্টির আনন্দে স্বপ্ন ভঙ্গের যাত্রা!

২৫ শে মে, ২০১৩ রাত ১২:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইট পাথরের এই শহরে বসবাস করা মানুষগুলোর কাছে, বৃষ্টি মানেই এক অন্যরকম ভালোলাগা। মনের ভিতর অন্যরকম এক আনন্দ বয়ে চলা। সাথে যদি ঝড় বাতাস উঠে তাতেও খুব একটা কমতি হয় না এই আনন্দের। পথ চলতে চলতে গ্রাম থেকে শহরে আসা এই আমার ভিতরও কখন পরিবর্তনটা চলে এসেছে, নিজেও ঠিক ঠাক বলতে পারি না। গ্রামের এক কৃষক পরিবার থেকে সেই যে ২২ বছর আগে পড়াশুনার জন্য বাড়ির বাইরে চলে আসা, তারপর থেকে শহুরে মানুষ বনে গেলাম। বাবা-ঠাকুরদাদা'রা শিক্ষক ছিলেন সেই সূত্রে অবশ্য কৃষক পরিবারের পাশাপাশি শিক্ষক পরিবারের সন্তান হিসেবেও একটা বাড়তি পরিচয় আছে বৈকী।
সে যাই হোক, ঐ যে বললাম ২২ বছরে একটু একটু করে শহুরে মানুষ বনে গেলাম। অন্য আর দশজনের মত আমারও বৃষ্টি এলে অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করতে শুরু করলো। অথচ শৈশবে এই রকম কত বৃষ্টি গায়ের উপর দিয়ে গেছে, ঠিকমত কখনো বুঝতেও পারি নি। গরুর পাল মাঠে ছেড়ে দিয়ে পাঁহারা দেয়া, কাঁদা মাখামাখি করে দৌড় ঝাপ করার মধ্যে সেদিনও হয়তো একধরনের ভালোলাগা ছিল। তবে সেটা ভদ্রপল্লির এই মানুষগুলোর ভালোলাগার মত ছিল না হয়তো। বৃষ্টি এলেই বাবার মুখটা গম্ভীর হতে দেখতাম, দেখতাম দুঃশ্চিন্তা করতে...বৃষ্টির সাথে যদি ঝড় বাতাস উঠে সেই ভয়ে! জমিতে পাঁকা ধান...ঝড় বাতাস হলে জমিতেই মিশে যাবে সেই ধান, বৃষ্টি যদি বেশী হয় ডুবে যাবে সেই ধান। মরিচ-বেগুনের জমি বৃষ্টির জল জমলেই মরে যাবে সব গাছ। এইসব ভেবে ভেবে বাবা'র মুখটা মলিন হয়ে যেতো। ছোট মানুষ তাই খুব একটা না বুঝলেও, কিছুটা বুঝতাম বাবা'র মুখের দিকে তাকালে। তবে সেই বয়েসেও বড্ড ভাবিয়ে তুলতো...বাবা সরকারী চাকুরী করে, বড় দাদা সরকারী চাকুরী করে তারপরেও যদি এই অবস্থা হয় তাহলে যাঁরা শুধু কৃষির উপর নির্ভর তাঁদের কি হবে? ভাবতাম, তবে কোন কূলকিনারা খুঁজে পাইনি কোনদিন।
আজ আমি মধ্য বয়েসে। তখন ঠিক ঠাক না বুঝলেও শহুরে এই জীবনে আজ আমি ঠিকই বুঝি, একটি কৃষি পরিবার বা একজন কৃষকের সেদিনের সেই হাহাকারগুলো। তাই বৃষ্টি এলে, ঝড় বাতাস উঠলে সবাই যখন আনন্দে নাচানাচি করে....আমি ভাবি, গ্রামের সেই কৃষি পরিবারগুলোর কথা। এই বুঝি ডুবে গেলো তাঁদের কষ্টের ফলানো ফসল। এই বুঝি ঝরে গেলো তাঁদের ঋন করে, ঘাম ঝড়িয়ে তিন মাসে গড়ে তোলা স্বপ্ন!
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×