গৌরব আর ঐতিহ্যর ৯০ বছর পেরিয়ে আজ ৯১ বছরে পা দিলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
শুভ জন্মদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
আমাদের প্রিয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৯০টি বছর পেরিয়ে গেছে।
এটি দেশের সর্বপ্রাচীন ও সর্ববৃহৎ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শুধু এ অঞ্চলে নয়, বিশ্বজুড়ে রয়েছে এর খ্যাতি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ইতিহাস, সেটা গৌরবের ইতিহাস। এই বিশ্ববিদ্যালয় যে ভূমিকা পালন করেছে, সেটা অসাধারণ। ১৯২১ সালের পরে আমাদের দেশে আরো বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে কাজ করেছে। এর কারণ কেবল এটা নয় যে এর আয়তন বড় অথবা এখানে শিক্ষার্থীসংখ্যা অধিক, শিক্ষকও প্রচুর। মূল কারণ হচ্ছে, এই বিশ্ববিদ্যালয় বুদ্ধিবৃত্তিক, সামাজিক, রাজনৈতিক জীবনে যে ভূমিকা পালন করেছে, সেই ভূমিকা আমাদের দেশের অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে পালন করার সুযোগ ঘটেনি। এমনও দেখা যাবে, পৃথিবীর খুব কম বিশ্ববিদ্যালয়ই আছে, যাকে এত বড় দায়িত্ব নিতে হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক ও রাজনৈতিক ভূমিকাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এক হিসেবে অনন্য সাধারণ।
শুধু জাতীয় উন্নয়ন কেন, বিশ্ব জ্ঞান ও ভান্ডারেও রয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ অবদান। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক এস এন বোস বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের সঙ্গে যৌথভাবে ‘কোয়ান্টাম স্ট্যাটিস্টিকস তত্ত্ব’ প্রণয়ন করেন (১৯২৪),
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত আমাদের দেশের বিজ্ঞানী অধ্যাপক মাকসুদুল আলমের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিভাগের অধ্যাপক হাসিনা খান ও অধ্যাপক জেবা ইসলাম সিরাজ এঁরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল তরুণ শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় (যাঁদের মধ্যে প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিভাগ এবং জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা অন্তর্ভুক্ত) পাটের জন্ম-রহস্য (জিনম সিকোয়েন্সিং) আবিষ্কার করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন।
সুদীর্ঘ ৯০ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ দেশকে অনেক কিছু দিয়েছে। দিয়েছে দেশ-বিদেশে অনেক খ্যাতি ও গৌরব। অর্জন করেছে অনেক দুর্লভ সম্মান। প্রতিষ্ঠিত করেছে দেশ-বিদেশে আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান পণ্ডিত ও গবেষক। আজ দেশের নানা প্রশাসনে, হাইকোর্ট ও সুপ্রিমকোর্টে এবং দেশের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোয় রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও অতীতের ছাত্র-শিক্ষকরা। এছাড়া আন্তর্জাতিকভাবেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী ছাত্র-শিক্ষকরা। বিশ্বের সেরা সম্মান নোবেল বিজয়ও এনেছেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র প্রফেসর ড. ইউনূস। এছাড়া রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নানা জায়গায় রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও আগেকার তুখোর ও মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা। এটি সত্যিই আনন্দের বিষয়। ছাত্র-শিক্ষক অনেকেই প্রাণ দিয়েছেন, শহীদ হয়েছেন দেশের জন্য।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালনের রেওয়াজ থাকলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৮৩ সালে প্রথমবারের মতো এ দিবস উদযাপন করে। তবে ২০০৭ সালের ১ জুলাই থেকে নিয়মিত প্রতি বছর দিনটি উদযাপন করা হচ্ছে। ৯০ বছরে এ নিয়ে ১১ বারের মতো বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন করা হচ্ছে।
উৎসবমুখর পরিবেশে এবার বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন করা হচ্ছে। গোটা ক্যাম্পাস সেজেছে বর্ণিল সাজে।
দিবসটিকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রয়েছে নানা আয়োজন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। অনেক সমস্যা এবং ব্যর্থতা ও আছে এই বিশ্ববিদ্যালয়টির। তবে বিশাল একটি অর্জনের পথে এসব কোনো কিছুই বড় প্রতিবন্ধকতা নয়। আমরা সকলেই আশা করি খুব দ্রুতই এসব প্রতিকূলতা দূরে ঠেলে ১০০ বছর উদযাপন এর দিকে এগিয়ে যাবে আমাদের প্রাণের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ।
আবারও
শুভ জন্মদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়...........
: বিভিন্ন গণমাধ্যম এ প্রকাশিত নিবন্ধ ও প্রতিবেদন এর আলোকে লিখিত।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



