কিছুদিন আগে কালের কন্ঠ পত্রিকায় এমনই একটি খবর পড়ে মন ভালো হয়ে যায়। শেয়ার করব করব করেও করা হচ্ছিলনা। আজ করলাম। আবিস্কারগুলো হয়ত দুনিয়া কাঁপানো কিছু না.।কিন্তু তাঁদের কাজগুলো অনেক বেশি প্রশংসা করার মত..
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিক্যাল ফিজিক্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক খোন্দকার সিদ্দিক-ই-রব্বানীর সঙ্গে ১৫ জন তরুণ বিজ্ঞানী
"ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্স থেকে অনার্স করার পর অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার বৃত্তি পেয়েছিলেন। বিভাগের চেয়ারম্যান সিদ্দিক-ই-রব্বানীর কাছে গেলেন সুপারিশের জন্য। বিদেশ না গিয়ে তাঁর সঙ্গে কাজ করতে পরামর্শ দিলেন স্যার। ফলে বিদেশ যাওয়া হয়নি আবদুল আলামিনের_'সেদিন বিদেশ না গিয়ে যে কত ভালো করেছি আজ বুঝতে পারছি।' তিনি স্বপ্ন দেখেন গবেষণা করে এমন প্রযুক্তির উদ্ভাবন করবেন, যাতে সাধারণ মানুষ সহজেই চিকিৎসাসেবা পেতে পারে। তাঁর মতো আরো অনেকেই আছেন এই বিজ্ঞানীদের দলে, যাঁরা নানা প্রলোভন তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে কাজ করছেন দেশের মানুষের জন্য। প্রত্যন্ত এলাকায় সহজলভ্য চিকিৎসা উপকরণ পোঁছে দেওয়াই তাঁদের লক্ষ্য। সে লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিক্যাল ফিজিক্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খোন্দকার সিদ্দিক-ই-রব্বানীর নেতৃত্বে কাজ করে যাচ্ছেন ১৫ তরুণ বিজ্ঞানী। এরই মধ্যে তাঁরা দেশীয় পদ্ধতিতে উদ্ভাবন করেছেন টেলিমেডিসিনসহ পল্লী চিকিৎসাব্যবস্থা।
অন্ধকারে চলার পথে সামনে কী আছে তা বোঝার জন্য বাদুড় যে পদ্ধতিতে চলে, সেই অ্যালোকেশন পদ্ধতিতে 'আল্ট্রাসাউন্ড' নামক একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন ঢাবির অ্যাপ্লাইড ফিজিঙ্রে ছাত্র শাহরিয়ার ইকবাল এবং বায়োমেডিক্যালের এমফিল গবেষক তৌহিদুল ইসলাম। তাঁদের এই যন্ত্রটি সংযুক্ত থাকবে সানগ্লাসের সঙ্গে। সানগ্লাসের দুই পাশের দুই দণ্ডে দুটি মাইক্রোফোন রিসিভার ও ট্রান্সফার লাগানো থাকবে। আরেকটি যন্ত্র ঘড়ির বেল্টের আদলে যেকোনো বেল্ট দিয়েই লাগানো থাকবে অন্ধ ব্যক্তির হাতে। তার চলাচলের সময় সামনে চার মিটারের মধ্যে যদি গর্ত, উঁচু, নিচু বা অন্য কোনো বাধা থাকে, রিসিভার যন্ত্র আলট্রাসাউন্ড সিস্টেম পদ্ধতিতে গ্রহণ করে তা হাতে বাঁধা ট্রান্সফার যন্ত্রটিতে প্রদান করবে। ফলে হাতে ভাইব্রেশন সৃষ্টি হবে এবং তিনি সতর্ক হবেন। এই যন্ত্রের দাম মাত্র এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকা।
অনেক ডায়াবেটিসের রোগীর পায়ের নিচের নার্ভ নষ্ট হয়ে যায়। ফলে পায়ে ক্ষত সৃষ্টি হলে তাঁরা টের পান না। এসব রোগীর জন্য 'কম্পিউটারভিত্তিক পেডোগ্রাফ মেশিন' উদ্ভাবন করেছেন এম এ হাবিব। এই মেশিন পরে হাঁটলে পায়ের তলার চাপের বিশ্লেষণসহ ছবি তুলে ডায়াবেটিস রোগীরা পায়ের ক্ষত সৃষ্টি হওয়া থেকে রক্ষা পাবেন। এই যন্ত্র বিদেশ থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকায় আমদানি করতে হয়। আমাদের দেশের বিজ্ঞানীরা এটি আবিষ্কার করেছেন মাত্র ছয় লাখ টাকায়।
কানে শুনতে পারেন না এমন মানুষের জন্য মোবাইল ফোনে ব্যবহারোপযোগী হিয়ারিং যন্ত্র বানিয়েছেন পরশ। দাম ৫০০ থেকে এক হাজার টাকা। যাঁদের নিয়মিত হাত-পা ঘামে, তাঁদের জন্য 'অ্যান্টি-সোয়েট' মেশিন উদ্ভাবন করেছেন জওশন আরা।
এ ছাড়া আমাদের দেশের এই তরুণ বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন কম্পিউটারভিত্তিক ইসিজি যন্ত্র, ডিজিটাল মাইক্রোস্কোপ, ডিজিটাল এঙ্-রে ভিউয়ার, স্টেথিস্কোপ ও কল্পোস্কোপ। এগুলো সবই তাঁরা পল্লী চিকিৎসাব্যবস্থার অংশ হিসেবে বানিয়েছেন। ফলে প্রত্যন্ত গ্রামে বসেই রোগ নির্ণয় সম্ভব হবে। এই তরুণ উদ্ভাবকরা আরো বানিয়েছেন ফোকাসড ইম্পিডেন্স মেথড (এফআইএম) ও ডিএফএল মেথড। যার মাধ্যমে ফুসফুস, স্তন ক্যান্সার, হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি নির্ণয় করা যাবে।
নেপথ্যে যাঁরা
অধ্যাপক খোন্দকার সিদ্দিক-ই-রব্বানীর নেতৃত্বে কাজ করেছেন ১৫ তরুণ বিজ্ঞানী_আলামিন, বদিউজ্জামান, আবীর, ইমতিয়াজ, জিহাদ, এহসান, হাবিব, আবদুল কাদির, শাহরিয়ার, তৌহিদ, জেবিন, পরেশ, জওশন এবং রোমানা।
স্বল্পমূল্যে দেশীয় প্রযুক্তিতে উদ্ভাবন
ডিজিটাল ইসিজি,
স্টেথিস্কোপ,
ডিজিটাল এঙ্-রে মেশিন,
কল্পোস্কোপ,
ডিজিটাল মাইক্রোস্কোপ,
কম্পিউটারভিত্তিক
ইএমজি,
নার্ভ কন্ডাকশন যন্ত্র,
কম্পিউটারভিত্তিক পেডোগ্রাফ,
আল্ট্রাসাউন্ড যন্ত্র,
হিয়ারিং অ্যাইড,
পানি বিশুদ্ধকরণ যন্ত্র,
হ্যান্ড প্রোসথেসিস
এবং দুটি রোগ নির্ণয়পদ্ধতি এফআইএম ও
ডিএলএফ।
সূত্র: কালের কন্ঠ
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুলাই, ২০১১ রাত ৯:৫৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



