somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইসরাতীন : মুআম্মার আল-গাদ্দাফী (পর্ব ১)

৩০ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ১:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শু ভ্র গ্র ন্থ
ইসরাতীন

বর্তমান পৃথিবীর দীর্ঘস্থায়ী এবং প্রায় সমাধানহীন সংকটগুলোর অন্যতম মধ্যপ্রাচ্য সংকট। ব্যমান শুভ্রন্থটি সেই সংকটের একটি বিজ্ঞানসম্মত, নিরপে, চূড়ান্ত এবং কার্যকরী সমাধান নির্দেশ করে, নির্দেশ করে সেই পথ যার মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্য সহিংসতা ও যুদ্ধের ধ্বংসস্তুপ থেকে বেড়িয়ে আসতে পারে।

শুভ্র গ্রন্থে প্রস্তাবিত সমাধানকে জোরাল করা এবং তার ন্যায্যতা প্রমাণ করার জন্য ইতিপূর্বে আরব এবং ইহুদী উভয় প যে সব প্রস্তাব উত্থাপন করেছে, আন্তর্জাতিকভাবে যে সব পদপে নেওয়া হয়েছে তা উল্লেখ করা হয়েছে। শুভ্র গ্রন্থের প্রস্তাবিত সমাধানই হতে পারে এই সংকটের একমাত্র সমাধান। এ ছাড়া অন্য কোনো উপায়ে এর সমাধানের প্রচেষ্টা ব্যার্থতায় অবসিত হতে বাধ্য।

ফিলিস্তীন

ধ্রুপদি ইতিহাস ও ধর্মগ্রন্থগুলো এই নামেই উল্লেখ করেছে এই অঞ্চলটিকে। শব্দটি মূলত নির্দেশ করত ফিলিস্তিনের আদি অধিবাসীদের। ওল্ডটেস্টামেন্টের সৃষ্টিতত্ত্ব, ইউশা, ডিউট্যারন্যামি ইত্যাদি গ্রন্থে তার স্বীকৃতি মেলে। ওল্ডটেস্টামেন্টের বিভিন্ন অধ্যায়ে তাছাড়াও, এনাকাইম, রাফাইম, কানানাইটস, জেবুসাইটস্, হিটাইটস্, ফিনিশীয়ান.. ইত্যাদি নাম উল্লেখিত হয়েছে। যেমন প্রস্থান অধ্যায়ে এসেছে : "ফেরাউন যখন ইহুদি জাতিকে মুক্ত করে দিল ঈশ্বর তখন তাদের ফিলিস্তীনের পথ দেখান নি।"

বৃটিশ প্রতিনিধিত্বের গোটা পর্বে প্রস্তাবনামূলক যাবতীয় ফাইলপত্রে ফিলিস্তীন নামটিই ব্যবহৃত হয়েছে। সেটা এমনকি জায়োনিস্ট আন্দোলনের কট্টর সমর্থকরাও স্বীকার করেন। উদাহরণত: 'হারাট জায়োনিস্ট মুভমেন্ট' এর প্রতিষ্ঠাতা এবং জাতীয় জায়োনিষ্ট সমরিক প্রতিষ্ঠানের অন্যতম অধিনায়ক Shuuel Katz । যেমন এক স্থানে তিনি বলেছেন :

"সে সময়কার পৃথিবীর সবগুলো জায়োনিষ্ট প্রতিষ্ঠানের গায়ে কোনো না কোনো ভাবে ফিলিস্তীন নামটা ছিল। উদাহারণত: সেই সময়ের অন্যতম প্রধান জুইশ ব্যাংকের নাম ছিল : "এঙ্গলো প্যালেস্টাইন ব্যাংক"। জুইশ ফাউন্ডেশন ফান্ডের নাম ছিল 'প্যালেস্টাইন ফাউন্ডেশন ফান্ড'। 'প্যালেস্টাইন শ্রমিক ফান্ড'ও ছিল একটি জুইশ প্রতিষ্ঠান। তখন উদ্বাস্তু ক্যাম্পগুলোতে ফিলিস্তিনী সংগীত বলে যে সব গান গাওয়া হত সেগুলো ছিল মূলত জায়োনিস্ট স্তোত্র।" তিনি আরো বলেন : "সে সময় বিদেশ ভূমিতে আমরা 'ফিলিস্তিনী.. উৎসব নামেই ..... উৎসব উদযাপন করতাম। 'প্যালেস্টাইন পোষ্ট' ছিল মূলত একটি জায়োনিষ্ট পত্রিকা। এই পত্রিকাটিই ছিল তখন জায়োনিস্ট ঐক্য আন্দোলনের প্রধান মুখপত্র।" অবশেষে Shuuel বলেন : "যাকে আজ ইজরাইল রাষ্ট্র বলা হচ্ছে, তার প্রতিষ্ঠার পরই কেবল ফিলিস্তীন নামটি উঠে যেতে থাকে।"

স্যামুঈল স্বীকার করেছেন যে, তাবারিয়াতে হিব্রু ভাষার ব্যবহার শুরু হয় কেবল দশম শতকে। এমনকি মার্কিন রাষ্ট্রপতি জড়ড়ংবাবষঃ ১৯৪৪ সালে লিখিত জর্ডানের প্রিন্স আব্দুল্লার চিঠির উত্তরে বলেছিলেন : আমি আনন্দ ও দৃঢ়তার সাথে জানাচ্ছি, ফিলিস্তীন এবং ফিলিস্তীন সংক্রান্ত মৌলিক কোনো অবস্থা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে, আরব এবং ইহুদীদের সাথে মতবিনিময় করা ছাড়া আমেরিকা কোনো সিদ্ধান্ত নিবে না।

নাম সংক্রান্ত এই আলোচনা বাদ দিয়ে সাধারণভাবে বলা যায়, এই এলাকার আর দশটা দেশের মত ফিলিস্তীনের ইতিহাস জুড়ে ছড়িয়ে আছে অজস্র যুদ্ধ-বিগ্রহের কাহিনী, ইতিহাসের বিভিন্ন পর্বে তার চারদিক থেকে নানান মানব ঢল এসে ছাড়িয়ে পড়েছে ফিলিস্তিনের পবিত্র ভূমি জুড়ে, তাতে বাস করেছে অগন্য জনগোষ্ঠী, নৃ-সমপ্রদায় ও মানব জাতি, তাদের কেউ এসেছে যোদ্ধা বেশে, ভিন অভিবাসী হয়ে কেউ কেউ।

সুতরাং ঐতিহাসিক দৃষ্টি কোণ থেকে বিচার করলে বলা যায়, এই অঞ্চলে বসবাসরত জনগোষ্ঠী ও সমপ্রদায়গুলোর কারো এই দাবি করার অধিকার নেই যে ফিলিস্তীন এককভাবে তার, ফিলিস্তীনের ভূমি বা তার নির্দিষ্ট কোনো অঞ্চলের উপর তার অধিকার অন্যদের তুলনায় অগ্রগণ্য। কেউ যদি এমন উদ্ভট দাবি করে তাহলে সেটা নিছকই দাবি হবে। তার কোনো ঐতিহাসিক ভিত্তি দাঁড় করানো কঠিন।


ইহুদি রাষ্ট্রের ধারণা

হিটলার পর্বের পূর্বে গোটা ইউরোপ জুড়ে ইহুদিরা যে নির্যাতিত হয়েছিল এবং তা থেকে তাদের মনে যে নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি জন্ম নিয়েছিল তাই হচ্ছে ইহুদী রাষ্ট্রের ধারণার গর্ভ। Theodor Hertzl এর মত যারা তখন অরতি এই জনগোষ্ঠীর রা ও নিরপত্ত্বা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন স্বতন্ত্র ইহুদী রাষ্ট্র তত্ত্বের উদ্ভব-বিকাশে তারাই প্রধান ভূমিকা পালন করেছিলেন।

সাইপ্রাস, আর্জেন্টিনা, উগান্ডা, জাবালে আখদার এবং ফিলিস্তীন... ইহুদী সংকট থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ইউরোপ তখন এই দেশগুলোতে ইহুদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সম্ভাব্য ভূমি হিসেবে প্রস্তাব করে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে নির্দিষ্টভাবে ফিলিস্তীনই হবে ইহুদী জাতীয় রাষ্ট্রের একমাত্র ভূমি_এই ধারণা ইহুদী রাষ্ট্রের তাত্ত্বিকদের মাথাতেও ছিল না। ইতিহাসও তাই প্রমাণ করে।


বালফোর চুক্তি
ইহুদীদের প্রতি কোনো সহানুভূতি নয়, এর পিছনের প্রধান চালিকা শক্তিটা হচ্ছে ইউরোপকে ইহুদী সংকট থেকে মুক্ত করা।


ইহুদী : নিপীড়িত এক জনগোষ্ঠী
এক ভাগ্যাহত জনগোষ্ঠীর নাম ইহুদী জাতি। ইতিহাসের শুরু থেকেই তারা নির্যাতিত হয়েছে বিভিন্ন রাজা-রাজনায়ক এবং রাজ মতার হাতে। মিশরের ফারাও থেকে ব্যাবিলিয়ান ও রোমান রাজা, তেতেউস, হাদরীন, প্রথম এ্যডওয়ার্ডের মত ইংরেজ রাজা... সবাই যেন পাল্লা দিয়ে অংশ নিয়েছে ইহুদী পীড়নে। কেন ? এটাই আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছা। উদ্ভব লগ্ন থেকেই জাতিটি নানা সময় শিকার হয়েছে নির্বাসন, বন্দিত্ব, গণহত্যা এবং নানা নির্যাতনের, নির্যাতিত হয়েছে মিশরীয়ান, রোমান, ইংরেজ, রাশিয়ান, ব্যাবিলিয়ান, কানানাইড এবং অবশেষে হিটলারের হাতে।


আরব ও ইহুদী সম্পর্ক
মূলত আরব ও ইহুদীদের মাঝে কখনই মৌলিক কোনো শত্রুতা ছিল না। ইবরাহীমের সন্তান ইহুদীরা বরং আদনানের বংশধর আরবদের চাচাতো ভাই। ইহুদীদের চরম দুর্দশার কালে আরবরাই কিন্তু তাদের আশ্রয় দেয় এবং মদিনায় তাদের আবাসনের ব্যবস্থা করে দেয়, তাদের দান করে ওয়াদিল কুরা নামক স্থানটি (তাদের নামেই এই এলাকাটির নাম করণ করা হয়ে ছিল)। কিন্তু যখন ইসলামের আবির্ভাব ঘটল এবং ইসলামের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জন্মগ্রহণ করলেন আরবদের মাঝে তখন ইহুদীরা, তাদের বংশ ছাড়া অন্য কোনো বংশে নবী জন্ম নিবে এই বিষয়টা মেনে নিতে পারল না। ফলে তাদের এবং আরব মুসলামানদের মাঝে শুরু হল শত্রুতা এবং আরবের পৌত্তলিক এবং ধর্মত্যাগীদের সাথে যেমন তেমন ইহুদীদের সাথেও আরব মুসলমাদের কয়েকবার যুদ্ধ হল। পঞ্চদশ শতকের শেষ দিকে ইহুদীরা আরবদের সাথেই স্পেন থেকে বিতাড়িত হয়েছিল। তখনও তারা আরবদেশগুলোতেই আশ্রয় নিয়েছিল। এই কারণে এখন পর্যন্ত যে কোনো আরবদেশে 'ইহুদী পাড়া' নামে একটা এলাকা পাওয়া যায়। তখন তারা বেশ শান্তিতে এবং প্রীতির সাথে আরবদের সাথে বাস করেছিল।

অভিন্ন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবনা


প্রথম : বৃটিশ প্রস্তাবনা :

(ক) ওয়াকহোপ প্রস্তাবনা :
১৯৩০ সালের শুরুতে, ফিলিস্তীনে নিয়োজিত তৎকালীন বৃটিশ হাই কমিশনার, ফিলিস্তীনে এগারো জন মুসলিম, চার জন খৃষ্টান এবং সাতজন ইহুদীর সমন্বয়ে (সংখ্যাটি তৎকালীন ফিলিস্তীনের জনপরিসংখ্যানের বিচারে প্রস্তাবিত) একটি বিধান পরিষদ গঠনের প্রস্তাব করেন।


(খ) নিউকাম্ব প্রস্তাবনা :
১. সার্বভৌম একক স্বাধীন ফিলিস্তীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা
২. প্রধান ধর্মসমপ্রদায়গুলোকে স্বাধীনতা দান
৩. বৃহৎ পৌর এলাকাগুলোকে স্বায়ত্ব শাসন প্রদান
৪. রাষ্ট্র ব্যবস্থার আকেন্দ্রিকীকরণ


(গ) বৃটিশ ওয়াহাইট বুকের প্রস্তাবনা (১৯৩৯ খৃ)
১. ফেডারাল সিস্টেমের একক স্বাধীন ফিলিস্তীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা
২. আরব-ইহুদী যৌথ উপদেষ্টা পরিষদ গঠন
৩. আরব-ইহুদী যৌথ নির্বাহী পরিষদ গঠন


(ঘ) লর্ড মরসনের প্রস্তাব
১. কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা প্রণয়ন
২. আরবী, ইহুদী, কুদস এবং নেগেভ এই চারটি আলাদা আলাদা প্রশাসনিক এলাকা গঠন
৩. আঞ্চলিক প্রশাসন ব্যবস্থা এবং প্রতিটি অঞ্চলের জন্য স্বতন্ত্র বিধান পরিষদ গঠন

এই প্রস্তাবগুলোর কোনোটাই বাস্তবায়িত হয় নি। তবে সেগুলোর গৃহিত হয় নি, অঞ্চল ও প্রশাসনিক এরিয়া বন্টনের ক্ষেত্রে তার সীমা ও চৌহদ্দি নিয়ে দ্বি-মত কিংবা বৃটিশ কমিশনের স্থায়ীত্বের সময় কাল কিংবা মুহাজির সংখ্যা নিরুপণে মতবিরোধ এই ধরনের নানান অমৌলিক এবং তুচ্ছ কারণে।

দ্বিতীয় : জায়োনিস্ট প্রস্তাবনা

(ক) এই ক্ষেত্রে প্রথম জায়োনিস্ট প্রস্তাবটি আসে তথাকথিক 'পীস ফেডারেশন' এর প থেকে, যার নেতৃত্বে ছিলেন রাব্বী বেনজামিন। তিনি এবং তার অনুসারীরা দ্বি-জাতি সম্মিলিত অভিন্ন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আহ্বান করেছিলেন এবং ইহুদীদের সতর্ক করে বলেছিলেন ইহুদীরা যদি দ্বি-জাতি সম্মিলিত এক রাষ্ট্র প্রস্তাব না মেনে নেয় তাহলে তাদের নিরাপত্তার ব্যাপারটা চির অমীমাংসিত থেকে যাবে। তারা যা ভবিষ্যদ্বাণী করে ছিলেন এখন তাই ঘটছে।

(খ) কনফেডারাল বা ফেডারাল সমাধান, যার প্রস্তাব করেছিলেন বিভিন্ন জায়োনিস্ট মুভমেন্ট এবং 'হাগান' সংগঠনের অন্যতম প্রধান নেতা, কিনিস্টের সদস্য, মন্ত্রী এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও রাজনৈতিক পদের সাবেক অধিনায়ক গববৎ ওসরঃ।

তিনি মনে করেন কৌশলগত বিচারে জবর দখলকৃত অঞ্চলগুলো ছেড়ে দেওয়া (তিনি অবশ্যই সিনাই কিংবা জুলান কিংবা ওয়েস্ট ব্যাংক কিংবা গাজাকে নির্দেশ করছেন) মানে হচ্ছে হাতে পাওয়া কিছু অর্জন হারানো এবং তিনি মনে করেন এই তি অপুরণীয়। আর মিশর যে সব বিষয়গুলো পেশ করেছে তার মতে তা যে কোনো মুহূর্তে পরিবর্তনযোগ্য। একক ফেডারাল রাষ্ট্রের ধারণার সম্ভাব্য সাফল্য প্রমাণ করার জন্য তিনি ইউরোপ ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্র আমেরিকার উদাহরণ টেনেছেন। তিনি বলেন এই দেশটি প্রথম দিকে, ১৭৮৯ সাল পর্যন্ত প্রায় ১৩ বছর অস্থির অরাজক অবস্থায় কাটিয়েছে। বিচিত্র ধর্ম ও মনব সমপ্রাদায়ের দেশ নাইজেরিয়াকেও তিনি এর একটি ভাল উদাহরণ মনে করেন। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক, সামারিক, ভৌগলিক ঐতিহাসিক সব বিচারেই ফেডারাল রাষ্ট্র ব্যাবস্থাই এই এলাকার একমাত্র সমাধান এবং যে সব ঐতিহাসিক অর্থনেতিক কারণে একটা অঞ্চলে ফেডারাল রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রণয়ন করতে হয় এবং সফল হয় তার সবই
ফিলিস্তীনে পর্যাপ্ত পরিমাণে হাজির আছে।

তিনি বলেন একক স্বাধীন কোনো ফিলিস্তীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা খুবই বিপদজনক হতে পারে এবং এই বিপদ থেকে উদ্ধারের একমাত্র উপায় ফেডারাল রাষ্ট্র গঠন, জেরুজালেম হবে যে রাষ্ট্রের রাজধানী এবং তিনি মনে করেন এর মাধ্যমে ঐতিহাসিক জেরুজালেম সংকটের একটা সুন্দর ও সহজ সমাধান হতে পারে।

(গ) জার্মান জায়োনিস্টদের প্রস্তাব : ১১/৯/১৯২১ সালে সংঘটিত জার্মানী জায়োনিস্ট সংগঠনের দ্বাদশতম কাউন্সিলে দ্বি-জাতি ভিত্তিক এক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব মেনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তারা বলেন : আমরা
ফিলিস্তীনে অবস্থিত আরব জাতির সাথে মৈত্রির মাধ্যমে পরস্পর নিরাপদ বসবাসের একটা যৌথ জায়গা গড়ে নিব, একটি উন্নয়নশীল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ে তুলব, যা তার অভ্যন্তরে বসবাসরত দুই জাতির প্রতিটি নাগরিকের জাতীয় উন্নয়নে সাহায্য করবে।

তৃতীয় : আরবীয় প্রস্তাবনা :

(ক) বাদশা আব্দুল্লাহর প্রথম প্রস্তাবনা :
১. অভিন্ন রাজ্য প্রতিষ্ঠা
২. ইহুদী অধু্যষিত অঞ্চলগুলোতে ইহুদীদের জন্য স্বাধীন শাসন প্রতিষ্ঠান প্রদান
৩. এক অভিন্ন পার্লামেন্ট গঠন, যাতে ইহুদীরা অংশ নিবে তাদের জন সংখ্যার হার অনুসারে
৪. ইহুদী মুসলিম সমন্বিত মন্ত্রী পরিষদ গঠন

(খ) বাদশা আব্দুল্লাহর দ্বিতীয় প্রস্তাবনা :
মুসলিম আরব ফিলিস্তীনকে লেবানন, জর্ডান এবং মিশরের মাঝে বন্টন করে দেওয়া এবং ইহুদী অধ্যুষিত অঞ্চলগুলো ইহুদীদের হাতে ছেড়ে দেওয়া।

(গ) নূরী আল-সাঈদের প্রস্তাব (১৯৪২ খৃ)
১. অভিন্ন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা
২. এই রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে ইহুদীদের স্বায়ত্বশাসন প্রদান।

সুতরাং দেখা যাচ্ছে ১৯৪৮ সালের পূর্বের সবগুলো প্রস্তাবনাই এক এবং অভিন্ন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথা বলেছে। এই প্রস্তাবগুলোর কোনো কোনোটি দেখা যাচ্ছে, আজ যে দৃষ্টিতে ফিলিস্তীনীদের দিকে তাকানো হচ্ছে সেগুলো ইহুদীদের সেই দৃষ্টিতে দেখছে এবং ইহুদী স্বায়ত্ব শাসন, দেশ বিভাগ ইত্যাদির কথা বলছে।

এক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানই হচ্ছে সেই ঐতিহাসিক ভুল যার গর্ভে জন্ম নিয়েছে আজকের এই শোকাবহ মধ্যপ্রাচ্য। নির্দিষ্ট কোনো সমপ্রদায়ের প থেকে, নিজেদের স্বার্থ অনুসারে এক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাও ভুল প্রচেষ্টা। আর দেশ বিভাগের যে কোনো ধরনের প্রচেষ্টা অতীতেও ব্যার্থ হয়েছে এবং আগামীতেও ব্যার্থ হতে বাধ্য।

১৯৪৮ সালের পূর্বে, আজ যে দৃষ্টিতে ফিলিস্তীনীদের দেখা হচ্ছে ইহুদীদের দেখা হয়েছে সেই দৃষ্টিতে। কারণ ফিলিস্তীনে তখন ইহুদীরা ছিল সংখ্যালঘু তাই তখন কখনো তাদের স্বায়ত্বশাসন কখনো ইহুদী অঞ্চল গঠন এবং কখনো দেশ বিভাগের কথা বলা হয়েছে। তখন
ফিলিস্তীনীরা যেহেতু সংখ্যাগরিষ্ট ছিল তাই তারা ১৯৪৭ সালের বিখ্যাত দেশ বিভাগের প্রস্তাব মেনে নেয়নি। কিন্তু ১৯৪৮ সালের পর পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বদলে যায়। ৪৮ এবং ৬৭ এর যুদ্ধের পর তথাকথিক ইসরাইল রাষ্ট্রে সেই অঞ্চলে ফিলিস্তীনীরা সংখ্যালঘু হয়ে পড়ে এবং শুরু হয় ফিলিস্তীনীদের প্রতি সহানুভূতিমূলক প্রস্তাবনা, ইতিপূর্বে যেমন ঘটেছে ইহুদীদের বেলায় : ফিলিস্তীনীদের স্বায়ত্বশাসনের কথা বলা হয়, স্বাধীন আরব এরিয়া গঠনের কথা বলা হয়, দেশ বিভাগের কথা ওঠে ... ইত্যাদি ইত্যাদি।

ফিলিস্তীন সংকটের এখনো কোনো সমাধান হয় নি, তা এখনো দগদগ করছে পৃথিবীর মানচিত্রে। এই শুভ্রগ্রন্থের প্রস্তাবনাই হতে পারে এই সংকটের একমাত্র ঐতিহাসিক ও চূড়ান্ত সমাধান।

আমরা এই সব প্রস্তাবনাগুলো সবিস্তারে উল্লেখ করেছি এটা দেখানোর জন্য যে, অভিন্ন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব আগেই বহুবার উপস্থাপিত হয়েছে এবং নানা তুচ্ছ কারণে তা গৃহিত হয় নি এবং সেটাই হচ্ছে এই অঞ্চল আজ যে শোকাবহ পরিস্থিতি যাপন করছে তার প্রধান কারণ। আজকের এই শোকাবহ রক্তাক্ত ফিলিস্তীন অভিন্ন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব না বাস্তবায়নের অনিবার্য ফল।

দুই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ভুল ও বিপদ

একজন ইসরাইলী গবেষক ও ব্রিগেডিয়ার (যিনি ৭৪ থেকে ৭৬ পর্যন্ত ওয়েস্ট ব্যাংকের সামরিক কমান্ডার ছিলেন) বলেন : ফিলিস্তীন বিভক্তির প্রস্তাব কিংবা ইসরাইলের অভ্যন্তর ভূমিতে বিদেশী কোনো শক্তির অবস্থান মেনে নেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। কারণ ইসরাইলের জনগণের প েতা খুবই বিপদজনক। যে সব কারণে এই সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া সম্ভব নয় তার অন্যতম :

কারণ ওয়েস্ট ব্যাংক একটি পাহাড়ী অঞ্চল। তার আকাশ সীমা ৫০ কিলোমিটার জুড়ে বিসতৃত, উচ্চতা ১০০০ মিটার। এই এলাকাটি ঝুঁকে আছে সমুদ্র তীরবর্তী নিম্নভূমিতে অবস্থিত ইসরাইলের সমচেয়ে জীবনমুখর অঞ্চলের উপর, যার বিসতৃতি মাত্র ১৪ থেকে ২০ কিলোমিটার। ইসরাইলের মোট নাগরিকের ৬৭% ভাগই বাস করে এই অঞ্চলে এবং ইসরাইলের গোটা শিল্প উদপাদনের ৮০% উদপাদিত হয় এই এলাকায়। সুতরাং যা সবসময় ইসরাইলকে হুমকির মুখে রাখবে, ওয়েস্ট ব্যাংকে এমন কোনো শত্রু শক্তির অবস্থান কোনোভাবেই মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।

বামপন্থী জায়োনিস্ট, পীস কাউন্সিলের সদস্য ব্রিগেডিয়ার গরববৎ ইধবষ একজন সহনশীল ইহুদী নেতা হিসেবে প্রসিদ্ধ। তা সত্বেও এই ক্ষেত্রে তার জোরাল বক্তব্য হচ্ছে : ওয়েস্ট ব্যাংকের উপর আমাদের অধিকার ঐতিহাসিক। অনেকেই বিশ্বাস করেন যে, তা ইহুদী জাতির হৃদপিন্ড। ইসরাইলী জাতি মনে প্রাণে বিশ্বাস করে ওয়েস্ট ব্যাংক রা করা তাদের পবিত্র ধর্মীয় দায়িত্ব।

গবেষক ব্রিগেডিয়ার অৎরব ঝযধষবাও অভিন্ন যুক্তি হাজির করেছেন। তিনি মনে করেন খুবই ক্রিটিক্যালক নানান কারণে ওয়েস্ট ব্যাংকের ব্যাপার কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া সম্ভব নয়। তিনি বলেন : আমরা যদি ওয়েস্ট ব্যাংক ছেড়ে দেই তাহলে তুলকারেম এবং নাতানিয়ার মধ্যবর্তী ইসরাইলের গভীরতা হবে মাত্র ১৫ কিলোমিটার এবং কালকেলিয়া এবং হার্তুজেলিয়া তীর মধ্যবর্তী অঞ্চলের গভীরতা মাত্র ১৪ কিলোমিটার। এভাবে, পর্যাপ্ত পরিমাণ কৌশলগত গভীরতা না থাকার ফলে যে কোনো ধরনের বিপদের মুখে ইসরাইল অরতি হয়ে পড়বে। তখন ওয়েস্ট ব্যাংকের দিক থেকে যদি কোনো যুদ্ধ শুরু হয় তাহলে আরব বাহিনী সমুদ্র তীরে পৌঁছতে পৌঁছতেই ইসরাইলকে দুই কিংবা তিন টুকরো করে ফেলতে পারবে।

তিনি আরও বলেন : যদি কোনো ধরনের যুদ্ধ নাও বাধে তাহলে এই পরিস্থিতিতে ইসরাইল সর্বণ ওয়েস্ট ব্যাংকের অব্যাহত হুমকির মুখে থাকবে এবং ইসরাইলের আকাশ সীমা থাকবে ওয়েস্ট ব্যাংক শক্তির নিয়ন্ত্রণে।

বরং তিনি বলেন : ইসরাইলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ওয়েস্ট ব্যাংককে তিনটি প্রতিরক্ষা এরিয়াই ভাগ করে নেওয়া উচিত : ........... এবং সেই সাথে দণি গাজায় স্থায়ী প্রতিরা ব্যুহ স্থাপন করতে হবে।

তিনি বলেন : ফিলিস্তীনী এবং ইসরাইলীদের মাঝে যে কোনো ধরনের বিচ্ছিন্ন এলকার অবস্থান ইসরাইলের নিরাপত্তার উৎস হতে পারে না বরং তা ইসরাইলের নিরাপত্তার জন্য সার্বণিক হুমকি হয়ে থাকবে।

এরপরও তিনি বলেন : ইসরাইলী রাজনীতি দ্বি-জাতি সমন্বিত এক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জায়োনিষ্ট ধারণার বিষ ছড়িয়েছে।

অধ্যাপক Shlomo Evneri বলেন : ইসরাইল-ফিলিস্তীন সংঘাত ১৯-২০ শতকের অন্যান্য সংঘাতগুলো থেকে আলাদা। অন্যান্য সংঘাতগুলোকে_ যদিও তার কোনো কোনোটা এক যুগেরও বেশী স্থায়ী হয়েছে_ নিছকই সীমান্ত সংঘাত বলা যায়। কিন্তু ইসরাইল-ফিলিস্তীন সংঘাতের চরিত্র সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তা মূলত দুটি আন্দোলনের পরস্পর সংঘাত, যাদের প্রত্যকে এক অভিন্ন ভূমিতে নিজেদের অধিকার ও মালিকানা দাবি করছে এবং এবং দাবী করছে এটি তাদের জন্মভূমির অংশ। অর্থাৎ ফিলিস্তীনীরা দাবী করে, আজ যা ইসরাইল রাষ্ট্র নামে পরিচিত তা দাদের জন্মভূমির অংশ। ওয়েস্ট ব্যাংক এবং গাজার অধিকার পেলেও তারা এই দাবি ছাড়তে রাজি নয়। অপরদিকে ইহুদীরা ওয়েস্ট ব্যাংককে বলে ছামেরা ও ইহুদা' এবং তারা দাবি করে এই অঞ্চলটি তাদের রাষ্ট্রের অংশ। এই অঞ্চলে যদি কোনো ফিলিস্তীনী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েও যায় তাহলেও তারা এর দাবি থেকে পিছু হটতে রাজি নয়। তিনি বলেন : ওয়েস্ট ব্যাংক ইহুদীদের বিশ্বাস অনুসারে তাদের ঐতিহাসিক, ঐতিহ্য এবং পরিত্রান ভূমি। তারা কোনোভাবে এর দাবি ছাড়তে পারে না।

আর আরবরা মনে করে_উল্লেখিত জায়োনিস্ট অধ্যাপকের ভাষ্য অনুসারেই_ফিলিস্তীন তাদের ভূমি, সপ্তম শতক থেকে আরব মুসলমানরা এই অঞ্চল শাসন করে আসছে এবং ফিলিস্তীনের অধিকাংশ অধিবাসী আরব মুসলিম। ফিলিস্তীন _যেমন তিনি বলছেন_ আরব উপসাগর থেকে আটলান্টিক মহাসাগর পর্যন্ত বিসতৃত বিশাল আরব ভূমির অংশ, এই বিচারে ইরাক-ইয়ামেনের মত আর দশটা আরব দেশের সাথে তার কোনো পার্থক্য নেই। তিনি আরও বলেন : আরবরা এই অঞ্চলকে বলে 'ফিলিস্তীন' বরং তারা তাকে বলে দণি সিরিয়া। পান্তরে ইসরাইলী সংগঠনগুলো তাকে বলে 'ইসরাইল ভূমি'। তিনি মনে করেন এই পরিস্থিতিতে এর দুটি সমাধান হতে পারে : "হয় এই দুটি আন্দোলনের যে কোনো একটি তার প্রতিপকে হারিয়ে তার দাবি আদায় করে নিবে কিংবা এই সংকটের একটি মধ্যবর্তী সমাধান বের করে নিতে হবে।" মধ্যবর্তী সমাধানটা কি ? সেটা হচ্ছে দ্বি-জাতি ভিত্তিক এক অভিন্ন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। ফলে উভয় পরে সদস্যরাই ভাবতে পারবে তার বিতর্কিত ভূমির পুরোটাতেই বাস করছে, তারা তার কোনো অংশ থেকে বঞ্চিত নয়। তিনি বলেন : ফিলিস্তীনীদের এই পরিণতি মেনে নেওয়ার মানে হবে ইসরাইলের নিকট গৃহিত তৎপরতার সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া মাত্র, যেটা এই সধামানের বিরোধী। কারণ তা মূলত কোনো সমাধানই নয়।

তিনি আরো বলেন : ব্যক্তিগতভাবে আমি ওয়েস্ট ব্যাংক এবং গাজায় কোনো ফিলিস্তীনী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে নই। কারণ পূর্ব জর্ডানে অবস্থিত লক্ষ লক্ষ ফিলিস্তীনীদের তাদের ফিলিস্তীনী আত্মপরিচয় থেকে বঞ্চিত করা কোনোভাবেই ন্যায় সঙ্গত হতে পারে না। ওয়েস্ট ব্যাংক এবং গাজা অঞ্চলে যদি কোনো ফিলিস্তীনী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয় তাহলে তা শুধু সিরিয়া ও লেবাননের ফিলিস্তীনী শরনার্থী সংকটের সমাধান করতেই অম। যে সিদ্ধান্ত বা পদপে অধিকাংশ ফিলিস্তীনীদের শরানার্থী শিবিরে রেখে দেয় এবং ঐতিহাসিক ইসরাইল-ফিলিস্তীনের ভূমিতে তাদের ফিরিয়ে আনার কোনো প্রতিশ্রুতি দিতে পারে না তা কোনো সমাধানই হতে পারে না। এমনকি ফিলিস্তীনী মুক্তিকামী সংগঠনগুলো বাদ দিয়ে শান্তিকামী সহনশীল কোনো নেতৃত্বে, ইসরাইলের সাথে শান্তিপূর্ণ বসবাসের অঙ্গিকার নিয়ে গাজা ও ওয়েস্ট ব্যাংকে কোনো ফিলিস্তীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলেও এই সংকটের কোনো সামাধান হবে না। কারণ এই ফিলিস্তীন রাষ্ট্র ফিলিস্তীন শরনার্থী সংকটের সমাধান করতে সম নয়। কারণ শুধু লেবাননেই যে শরনার্থী আছে এই রাষ্ট্র তাদের পুনর্বাসনের কোনো ব্যবস্থা করতে পারবে না। কারণ উল্লেখিত ভূমি এই পরিমাণ অধিবাসীর সংকুলানের জন্য কোনোভাবেই পর্যাপ্ত নয়।

আরব ইসরাইল সংঘাত বিশেষজ্ঞ, জায়োনিস্ট স্ট্রাটেজির গবেষক, বহু গ্রন্থের প্রনেতা Yahu Shifat Herkabi বলেন :

ফিলিস্তীনী মুক্তি সংগ্রাম সংগঠনের ওয়েস্ট ব্যাংকে ফিলিস্তীনী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব মেনে নেওয়া ইসরাইলের সাথে তাদের হিসাব চুকানোর ক্ষেত্রে নিছক একটা কৌশল মাত্র। এরপর তারা আরো অনেক নতুন নতুন দাবি নিয়ে হাজির হবে, তার লগুলো বাস্তবায়ন করতে লড়াই চালিয়ে যাবে। গাজা ও ওয়েস্ট ব্যাংক রাষ্ট্রের প্রস্তাব মেনে নেওয়া তাদের দীর্ঘমেয়াদী অব্যাহত সংগ্রামের একটা ধাপ মাত্র। তারা এরপরও পরবর্তী ধাপগুলোতে পৌঁছানোর জন্য তাদের সংগ্রাম চালিয়ে যাবে।

তিনি বলেন : নিরস্ত্র রাষ্ট্রের ধারণা খুবই ভ্রান্ত এবং ব্যার্থ ধারণা। কারণ নিরস্ত্র রাষ্ট্র ব্যবস্থা রাষ্ট্র শক্তিকে তরল এবং শক্তিহীন করে রাখে, যা কোনো ধরনের স্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে না বরং অরাজকতা ছড়ায়।

অনুরূপ স্বাধীন ফিলিস্তীনী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, ইসরাইলী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ইহুদীদের যে মহান স্বপ্ন (যা বাস্তবায়নের জন্য অবশিষ্ট ফিলিস্তীন থেকে
ফিলিস্তীনীদের বিতাড়ন জরুরী) তার বিরোধী। তাছাড়া যদি তেমন কোনো ফিলিস্তীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েও তাহলে সে ক্ষুদ্র রাষ্ট্রটি সর্বণ তার অভ্যন্তরীন বিষয়ে ইসরাইল এবং জর্ডানের অনধিকার চর্চার মুখে পড়বে, যা অনিবার্যভাবেই নানা সহিংস সংঘর্ষের জন্ম দিবে।

হিব্রু ইউনিভার্সিটির লেকচারার Mati Steinburg বলেন : গাজা এবং ওয়েস্ট ব্যাংকে ফিলিস্তীনী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিকে কোনোভাবেই এইভাবে ব্যাখ্যা করা ঠিক হবে না যে, তা তাদের চূড়ান্ত ল থেকে পিছু হটে আসা। গাজায় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা তাদের একটা সাময়িক ল মাত্র। এই সেটেলমেন্ট তাদের অপরিবর্তনীয় প্রথাগত সংস্কারের একটা সাময়িক স্টেপ মাত্র। এই জায়োনিষ্ট বুদ্ধিজীবী আশংকা করছেন ...............

সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ১:৪০
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেসবুক বিপ্লবে সেভেন সিস্টার্স দখল—গুগল ম্যাপ আপডেট বাকি

লিখেছেন মহিউদ্দিন হায়দার, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩০




কিছু তথাকথিত “বাংলাদেশি বিপ্লবী” নাকি ঘোষণা দিয়েছে—ভারতের সেভেন সিস্টার্স বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে! সহযোগী হিসেবে থাকবে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী আর পাকিস্তানি স্বপ্ন।শুনে মনে হয়—ট্যাংক আসবে ইনবক্সে। ড্রোন নামবে লাইভ কমেন্টে। আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×