দ্বিতীয় ঘটনাঃদুই দিন হাঁসপাতালে কাটিয়ে মোটামুটি ঝরঝরে হয়ে আছি।ঝরঝরে হবার আর কারণ অবশ্য আছে।আচ্ছা দু’একটা কারণ বলি।প্রথম কারণ যেটা সেটা হচ্ছে হাঁসপাতালে ছিলাম না বাড়িতে ছিলাম এইটা বুঝতে পারি নি।দ্বিতীয় কারণ আমাকে নারসিং করার জন্য যে ছিল সে।মেয়েটির নাম সুভিস্যা।মেয়েটি মড়কক বংশদ্ভুত এবং মুসলিম।মেয়েটির মুখ ছাড়া আর কিছু দেখার সৌভাগ্য আমার হয় নি কারণ তার মুখ ছাড়া সমস্তই আবৃত ।এইভাবে বললাম কারণ অন্যান্য নার্স এবং মহিলা ডাক্তার দের অনেক কিছুই ছিল অনাবৃত।যে কারনে তাদের অনেক কিছুই ছিল চখুমেয়(অনুমেয় র মত করে বললাম)।আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম তার এই পরিধানের জন্যে তার কোন সমস্যা হয় কি না?সে আমাকে বলেছিল “হ্যাঁ কিছু লোক আমাকে দেখে বাজে কথা বলে কিন্ত অধিকাংশ লোকই সম্মান করে”।যাই হোক পরেরদিন এই মেয়েই আমার একটা পাস রেডি করে পুরো রত্তারড্যাম শহর ঘুরিয়ে দেখিয়েছিল।তার কল্যাণেই প্রথম পেসেঙ্গার জাহাজ ইউরডাম ২ দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল।এই জাহাজটি ইউরোপ টু আমেরিকা ট্রেড করে।আমরা সুভিস্যার নিজস্ব গারিতে করে ঘুরছিলাম।রাস্তা গুলো দেখেও কত ভালো লাগে।সব গুলো ওয়ান ওয়ে রোড।কোন যানজট নেই।হঠাৎ সুভিস্যা একটা লাল বাতি দেখে ব্রেক কশল।আমি আশেপাশে তাকিয়ে দেখি কোন গাড়ি নেই।যে লাইন ক্রস না করার জন্য লাল বাত্তি সেই পাশেও কোন গাড়ি নেই।তাহলে তুমি এখানে দ্বারালে কেন?এমন প্রশ্নের জবাবে সে আমাকে কিছু না বলে শুধু হাসল।আনুমানিক ১মিনিট পড়ে একটা গাড়ি সাই করে আমাদের সামনে দিয়ে চলে গেল সাথে সাথে জ্বলে উঠল সবুজ বাতি।তখন ও আমাকে বলল এমন নির্জন রাস্তায় এভাবে বেশ কিছুক্ষণ আগেই বাত্তি জ্বালানো হয় কারণ এখানে সবাই হাই স্পিডে গাড়ি চালায়।আমি আবার ও হতভম্ব হয়ে গেলাম।আমার দেশ আবার এই দেশ টার কাছে মার খেয়ে গেলো।আমার দেশের কেউ হলে কি এক মিনিট এভাবে নিরবতা পালন করতো?এও কি সম্ভব!
এখন আমার কিছু কথা
ছোটবেলায় আমরা যারা গ্রামের স্কুলে পড়াশোনা করেছি তাদের ক্লাস শুরু হবার আগে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযানের মধ্য দিয়ে যেতে হত।অভিযানের অংশ হিসেবে কর্মসূচী গুলো ছিল এরকম স্কুলের আশেপাশের ময়লা আবর্জনা,ঝোপ ঝার,বড় বড় ঘাস পরিষ্কার করা এবং বিভিন্ন মরা ও শুকনা পাতা কুড়ানো।অথচ এই আমারায় শহুরে পরিবেশে নিজেদের কে মানিয়ে নিতে কোট টাই পড়ে শহুরে রাস্তা ময়লা করতে করতে যাচ্ছি।কেউ সিগারেট খেয়ে বায়ু দূষণ তো করছেনই উল্টো সিগারেটের শেষ অংশটিও রাস্তায় ফেলে করছেন রাস্তাটি অপরিষ্কার।কলা খেয়ে ছাল ছুরে ফেলচেন ড্রেন বরাবর যদি ড্রেনে পড়ে তো পড়লো না পরলে রাস্তায়।অদিকে ভ্রুক্ষেপ করার সময়ই নেই।এভাবেই আমরা আমাদের সুন্দর চারপাশ নষ্ট করে চলেছি অনবরত।তাহলে আমাদের ছোট বেলার সে শিক্ষার কি মুল্য থাকলো।আমরা যদি সুশিক্ষিতর পাশাপাশি স্ব শিক্ষিত না হতে পারি তাহলে সে শিক্ষা দিয়ে কি লাভ?একটু সচেতনতাই পারে আমাদের এই পরিবেশটাকে আর সুন্দর করতে।আপনি যখন সিগারেট খান এমন একটি পরিবেশ দেখে খান যেখানে সিগারেটের জন্য কারর কোন সমস্যা না হয় এবং সিগারেটের শেষ কৃত্যানুশঠান আপনি যথাযত ভাবে সম্পন্ন করতে পারেন।কলা খেয়ে ছাল আপনার ব্যাগে রাখুন উপযুক্ত ডাস্টবিন দেখে সেখানে ফেলুন।এরকম আর অনেক কিছুই আছে যা শুধুমাত্র দরকার আমাদের সচেতনতা।সরকার কে যদি বেটে খেয়ে ফেলি অথচ আমরা আমাদের কে পরিবর্তন না করতে পারি তাহলে আমরা কি করে একটি সুস্থ স্বাভাবিক জাতি পাব?তাই আসুন নিজেরা পরিষ্কার হই,দেশকে পরিষ্কার রাখি এবং আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর বাংলাদেশ উপহার দেই।