বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান নন, শেখ মুজিবুর রহমান বলে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে তার বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করা হয়েছে। এই মামলার বিবাদী ও মুক্তিযুদ্ধের উইং কমান্ডার হামিদুল্লাহ খান আজ এই 'লিভ টু আপিল' দায়ের করেন। আপিল দায়ের করার পর হামিদুল্লাহ খান সাংবাদিকদের বলেন, হাইকোর্টের রায়ে জাতিকে বিভক্ত করা হয়েছে। ন্যায় বিচারের স্বার্থে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করা হয়েছে। হামিদুল্লাহ খান বলেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ জিয়াউর রহমানই স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। সেই সময় আওয়ামী লীগের কোন নেতা-কর্মী এ ঘোষণা দেননি। হামিদুল্লাহ খানের আইনজীবী এডভোকেট রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, সুপ্রীমকোর্টের আপিল বিভাগে আপিল দায়ের করা হয়েছে। আগামীকাল (বুধবার) সুপ্রীমকোর্টের চেম্বার জজ আদালতে এ বিষয়ে শুনানী হতে পারে। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের সকল দলিল ও কাগজপত্র সংগ্রহ করেছি। সে সব প্রমাণাদি আমরা আপিল বিভাগে তুলে ধরবো।
গত ২১ শে জুন হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নন, শেখ মুজিবুর রহমানই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক বলে রায় দিয়েছেন। আদালতের ওই রায়ের পরই এ নিয়ে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি সহ বিভিন্ন মহলে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, রাজনৈতিক কারণেই এই রায় দেয়া হয়েছে। বিএনপি নেতা ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদা বলেছেন, এ ব্যাপারে কোন রায় দেয়ার এখতিয়ার আদালতের নেই। ফলে বিষয়টি নিয়ে ক্রমেই জটিলতা বাড়ছে। আদালতের রায়ে জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে তুলে ধরে চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালে মুদ্রিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্রের তৃতীয় খন্ড বাতিল ও বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করে। গত ২০ এপ্রিল মুক্তিযোদ্ধা ডাক্তার এম এ সালামের করা একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৪ সালে মুদ্রিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্র-এর তৃতীয় খন্ড কেন বাজেয়াপ্ত করা হবে না এবং ইতিহাস বিকৃতকারিদের বিরুদ্ধে কেন আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চেয়ে হাইকোর্ট সরকারের প্রতি রুলনিশি জারি করেছিলো। পরে রিটটিতে সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম ও মুক্তিযোদ্ধা হামিদুল্লাহ খান পক্ষভুক্ত হয়েছিলেন। গত ১৯ শে এপ্রিল ডাক্তার এম এ সালাম এই রিটটি দায়ের করেন। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিষয়টি যেহেতু আপিল বিভাগে গেছে তাই আপিল বিভাগ এখন কি রায় দেবে সেটাই দেখার বিষয়। তবে তারা বলছেন, দীর্ঘ দিন ধরে এই বিষয়টি নিয়ে যে বিরোধ দেখা দিয়েছে তার একটা চূড়ান্ত ফয়সালা হওয়া উচিত।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



