বাগেরহাটে এ একটা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করতে গিয়েছিলাম। রথ দেখা হয়ে গেলে কলা বেচতে বের হলাম। মানে ষাট গম্বুজ ও খান জাহান মৌসোলিয়াম দেখতে বের হলাম। উঠেছিলাম বাগেরহাট বাস টার্মিনাল সংলগ্ন একটি আবাসিক হোটেলে। সেখান থেকে রিকশা নিয়ে প্রথমে গেলাম খান জাহান মৌসোলিয়াম। মৌসোলিয়াম হতে বের হয়ে একটি ভ্যান গাড়ি ভাড়া করলাম, সে ষাট গম্বুজ নিয়ে যাবে আবার হোটেল এ ফেরত নিয়ে আসবে। ভ্যান এ এক স্থানীয় উঠলেন আর ভ্যান গাড়ির চালককে বললেন, "এমপি সাব আইববে, আইক বেচা তো যাইবে না"। এখানে লেখা পড়ে হয়তো সবাই বুঝতে পারবেন, কি বলা হচ্ছে। কিন্তু আমি যখন প্রথম শুনলাম, তখন যা বুঝেছিলাম তা হাস্যকর। যাই হোক, সেই লোক রাস্তায় যাকেই দেখছে তাকেই বলছে ওই কথা। আমি আর আমার সঙ্গী কিছুই বুঝতে পারলাম না। সে ষাট গম্বুজের বেশ খানিকটা আগেই নেমে পড়লো। গন্তব্যে পৌঁছে আমরা ভ্যান গাড়ীওয়ালাকে অপেক্ষা করতে বলে ভিতরে চলে গেলাম। বের হওয়ার পর দেখি বেশ কয়েকজন পুলিশ দাড়ানো। মটর সাইকেলে বসা একজন আমাকে ও আমার সঙ্গীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু করলেন। বাগেরহাট আসার কারণ ও আমার কার্ড দেওয়ার পর হাসি দিয়ে হ্যান্ডসেক করে আমাদের বিদায় দিলেন। আমরা হোটেল এর উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। ফিরতি পথে খান জাহান মৌসোলিয়াম এর প্রবেশের রাস্তা সামনে পুলিশ আমাদের ভ্যান গাড়ী থামিয়ে দিল। দেখলাম সকল রিকসা ও ভ্যান রাস্তার পাশে দোকানগুলোর ভিতরে ঢুকিয়ে দেওয়ার মত অবস্থা। আর লক্ষ্য করলাম প্রথমে এখানে রাস্তার দুই পার্শ্বে প্রচুর আখ বিক্রী হচ্ছিলো, বিক্রেতারা এখন আর নেই, নেই তাদের আখও (আমার ভাষায় গেন্ডারী)। তক্ষুনি কড়া শব্দে সাইরেন বাজিয়ে, পুলিশের দুইটি ভ্যান একটি নোয়া মাইক্রো গাড়ীকে এসকর্ট করে মৌসোলিয়ামের দিকে নিয়ে গেল। বুঝতে পারলাম, এমপি সাহবে আসবেন, তাই আখ বা গেন্ডারী কিন্তু আজকে বিক্রী করা যাবে না। ফেরার পথে আমি আর আমার সঙ্গী একে অপরকে বললাম, "এমপি সাব আইববে, আইক বেচা তো যাইবো না"।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা অক্টোবর, ২০০৯ রাত ৯:৫২