এ পৃথিবী এখনো অতোখানি ছোট হয়ে যায়নি বালিকা!
মায়াজালে মোহ কেটে দোষ দিওনা তোমাতে।
অকপট সচেতনে একটিবার চেয়ে দ্যাখো,
এখানেই শেষ হয়ে যায়নি পৃথিবী!
মায়াবতী, চোখ মেলো, দুহাতে নিজেকে জড়িয়ে
মেলে ধরো অবাধ্য বৈরী বাতাসে।
বোশেখী বৃষ্টি জমে শেওলা ধরা ভিজে চোখ
হারাতে দাও আকাশে... আকাশে।
পাঁজরে লেগে থাকা ছোপ ছোপ গোপন ব্যথাগুলো
ছুঁয়ে ছুঁয়ে সমস্ত শরীরে বয়ে যাওয়া উত্তাল শিহরণ
সহসা মিলিয়ে যাবে ঠিকই শূন্যে থেকে শূন্যে।
তোমার দু-চোখের বিষণ্ণ জমিন জুড়ে
প্রতিফলিত হতে থাকা একটুখানি আকাশ
গুচ্ছ গুচ্ছ মেঘে দ্যাখো, বহুদূরে ছুঁয়েছে দিগন্ত।
যেখানে কামিনী, ভাট্ফুলে নুইয়ে পড়া গেয়ো-পথ,
দু-ধারে কর্দমাক্ত ঘোলা ঝিল-জলের মেঠো ঘ্রাণ
আর নতুন প্রানের স্পন্দনে টগবগ করতে থাকা
মসৃন বুনো ঘাসের ডগা পেরিয়ে জমির আলে জলে-কাদায়,
বাশঝাড়, কুয়োতলায় গোধূলী মিলিয়ে
আজও বহুকালের রাত্রি বাড়ে রোজ।
অপ্রতিবদ্ধ নির্ভরতায় যেখানে মুহূর্তে
বুকে টেনে নেয় গ্রাম্য বোকাদের দল,
"মুখে হাসি চোখে জল" সমেত অনি:শেষ দারিদ্র
নিমেষে বাতলে দেয় বুক বেঁধে হেটে যাবার পথ
আর ভালবেসে প্রকৃতি শেখায় বেঁচে থাকার মানে।
ইট-পাথরে ঠাসা শহুরে স্বার্থপরতায় তোমার
তিলে তিলে গড়ে তোলা নরোম বিশ্বাস চিরে গেছে ভেবে
এখনই হেরে গেলে চলবে কেন বোকা মেয়ে!
রোজকার আটপৌরে নাগরিক জঞ্জাল মাড়িয়ে
অযত্নে ছুড়ে ফেলা সেদিনের সেই বিবেকের হাত ধরেই
নাহয় আজ এখান থেকে খুঁজে নাও
এক আকাশ শুদ্ধতম বাসস্থান!
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুন, ২০১৬ রাত ৯:৪৪