ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের অস্ত্রের ঝনঝানিতে সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা সন্ত্রস্ত। সোমবার ভোর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মুহসীন হলে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপে ভয়াবহ গোলাগুলি ও দফায় দফায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বরিশাল পলিটেকনিক। রামদা দিয়ে ছাত্রলীগের এক গ্রুপের ক্যাডাররা কুপিয়ে অন্য গ্রুপের ক্যাডারদের। এছাড়া গতকাল পুরান ঢাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের দুই কর্মকর্তাকে পিটিয়ে আহত করেছে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির নেতৃত্বে ছাত্রলীগ কর্মীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলে সোমবার ভোররাতে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপে ভয়াবহ গোলাগুলি ও দফায় দফায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। দুই ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষে ছাত্রলীগ হল শাখার সভাপতি মোঃ আলী ও সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন গ্রুপের সমর্থক অন্তত ১৫ ছাত্রলীগ কর্মী আহত হয়েছে। আহতদের বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টার ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষের সময় উভয় গ্রুপের কমপক্ষে ১৫টি কক্ষ ভাংচুর, কম্পিউটার, আসবাবপত্রে আগুন এবং লুটপাট চালানো হয়। এ ঘটনায় পুলিশ দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে আটক করেছে। ঘটনা তদন্তে ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে হল কর্তৃপক্ষ। হলটি বর্তমানে মোঃ আলীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে বিরাজ করছে উত্তেজনা।
এদিকে ওই সংঘর্ষে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিল ১৮ জানুয়ারি ছাত্রদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর ওপর হামলাকারী এবং ২১ ফেবু্রয়ারি তরুণী লাঞ্ছনাকারীরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষের সময় মহিউদ্দিনের পক্ষে সক্রিয় ছিল তরুণী লাঞ্ছনার দায়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ কর্মী বিপ্লব, নিটল, কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়া শেকেরুজ্জামান শাকের। এছাড়া টুকুর ওপর হামলাকারী বাপ্পীও সংঘর্ষে জড়িত ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
আধিপত্য বিস্তার নিয়ে রাত সাড়ে ৩টার দিকে সরকার সমর্থক সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন সমর্থিত হল শাখার সভাপতি মোহাম্মদ আলী ও কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন সমর্থিত সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন অনুসারীদের মধ্যে ওই সংঘর্ষ বাধে। তাতে আহত হয় ১০ জন। ওই সংঘর্ষের জের ধরে গতকাল সকাল ৯টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চিকিত্সা কেন্দ্রের বাইরে মহিউদ্দিন সমর্থকদের হামলায় আহত হয় সভাপতি শেখ মোঃ আলীর অনুসারী শাহীন। মোঃ আলী রাতে আহতদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিত্সা কেন্দ্রে ভর্তি কয়েকজনকে দেখতে গিয়েছিলেন। এর কিছুক্ষণ পরই একই স্থানে সভাপতি সমর্থকদের পাল্টা হামলায় আহত হয় সাধারণ সম্পাদক সমর্থক মোয়াজ্জেম হোসেন লিটন (সহ-সভাপতি), মিলন (সহ-সম্পাদক) ও মামুন হোসেন (সহ-সম্পাদক)। তৃতীয় দফা সংঘর্ষের সময় পুলিশ সভাপতি সমর্থক মোহাম্মদ রিপন (ফিন্যান্স, তৃতীয় বর্ষ) এবং বাবুকে (ইংরেজি, দ্বিতীয় বর্ষ) আটক করে। রাতের সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে পাঁচজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া বাকি পাঁচজন বিশ্ববিদ্যালয় চিকিত্সা কেন্দ্রে চিকিত্সা নেয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আক্কাস আলী, প্রক্টর কেএম সাইফুল ইসলাম ও সহকারী প্রক্টর আমজাদ আলী ২০/২৫ পুলিশ নিয়ে হলে প্রবেশ করেন। প্রশাসনের হস্তক্ষেপের পর ভোর সাড়ে ৫টায় মহিউদ্দিনের সমর্থকরা পিছু হটে। পুলিশ তল্লাশি অভিযান শুরু করলে মহিউদ্দিনের সমর্থকরা হল থেকে বেরিয়ে যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। এরপর সভাপতির অনুসারীরা হলের ভেতর মিছিল এবং হলের ফটকে সমাবেশ করে।
এ বিষয়ে হল সভাপতি আলী বলেন, ‘সাধারণ সম্পাদক ছাত্রশিবির নেতাকর্মীদের নিয়ে রাতে হল দখলের চেষ্টা করেছিল। ছাত্রলীগ কর্মীসহ সাধারণ ছাত্ররা তা প্রতিহত করেছে।’ তবে মহিউদ্দিন সংঘর্ষের জন্য সভাপতিকেই দায়ী করে বলেন, ‘সভাপতির আধিপত্যবাদী মনোভাবের কারণেই এ সংঘর্ষ হয়। রাতে হঠাত্ করে তারা সশস্ত্র অবস্থায় আমার সমর্থকদের আক্রমণ করে।’
প্রক্টর সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আধিপত্য বিস্তার নিয়ে হল ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে ছিল। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’
কমিটি নিয়ে বিরোধ : ছাত্রলীগের হল শাখার বর্ধিত কমিটি নিয়ে সোমবার বিকাল থেকেই উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল বলে শিক্ষার্থীরা জানায়। হল সভাপতি আলীর দাবি, সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেই কমিটিতে ১১টি পদ বাড়ানো হয়। কিন্তু মহিউদ্দিন পরে নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী আরও ৩৯টি পদ বাড়িয়ে বর্ধিত কমিটির ঘোষণা দিয়ে সদস্যদের নাম হলের ফটকসহ বিভিন্ন স্থানে টানিয়ে দেন। তবে সভাপতির এ বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে মহিউদ্দিন বলেন, ‘কেবল মোঃ জাফর ইকবাল নামে একজনকে সহ-সভাপতি করার বিষয়ে মতৈক্য হয়েছিল। কিন্তু আলী কমিটিতে আরও ১০ জনকে পদ দিয়ে দেন। এতে পদ না পাওয়া নেতাকর্মীরা একত্রিত হয়ে ১০১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করে।’
আমাদের বরিশাল অফিস জানায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপে হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনায় বরিশাল পলিটেকনিক গতকাল রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ঘণ্টাব্যাপী চলা রক্তক্ষয়ী এ সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এদের মধ্যে সবুজ, সুবীর, রিয়াজ, সোহেল ও নজরুল নামের ৫ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সংঘর্ষ শুরু হলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করে। কলেজ ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। একদিকে ইনস্টিটিউট শাখা সভাপতি আবদুর রাজ্জাক ও তার সমর্থকরা; অন্যদিকে সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান ও তার সমর্থকরা। সোমবার বিকালে আবদুর রাজ্জাক ও তার দলবল ক্যাম্পাসে মিজানের সমর্থক অনুপ ও ইমরান হোসেন মিশুকে খুঁজতে থাকে। এ খবর পেয়ে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মিশু তার ২০-২৫ জন সমর্থক নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। তারা রাজ্জাক গ্রুপের কাছে তাদের খোঁজার কারণ জিজ্ঞেস করে। এ নিয়ে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে নজরুল নামে রাজ্জাকের এক সমর্থককে কুপিয়ে আহত করা হয়। এ সময় পুলিশ ক্যাম্পাসে গিয়ে একটি রামদা ও কয়েকটি জিআই পাইপ উদ্ধার করে।
পরে রাজ্জাক গ্রুপের ১৫-২০ সমর্থক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে ফেরে। এদের মধ্যে বিএম কলেজ ও জেলা ছাত্রলীগের একাধিক নেতাও ছিল। তারা ক্যাম্পাসে থাকা মিজান গ্রুপের সমর্থকদের ধাওয়া ও মারপিট করে। তাদের হামলায় গুরুতর আহত হয় ১ম বর্ষের রিয়াজ, সোহেল, দ্বিতীয়বর্ষের সুবীর ও ৩য় বর্ষের সবুজ। নজরুলসহ এ ৫ জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার সময় ক্যাম্পাসে পুলিশ থাকলেও তারা দর্শকের ভূমিকা পালন করে।
কলেজ ছাত্রলীগ শাখার সভাপতি আবদুর রাজ্জাক বলেন, মহানগর ছাত্রলীগ নেতা তৌহিদুর রহমান সাবিদের নির্দেশে নজরুলকে কুপিয়ে আহত করা হয়। আহত নজরুলকে হাসপাতালে ভর্তি করতে গেলে আবার তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। অপরদিকে কলেজ ছাত্রলীগের সাংঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান বলেন, রাজ্জাক এখন ক্যাম্পাসে একঘরে হয়ে গেছে। তার সঙ্গে কেউ নেই। সোমবার তার বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসে মিছিলও হয়। সে বিভিন্ন কলেজ থেকে বহিরাগত এনে নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে ৮-১০ জনকে আহত করে। এ ব্যাপারে মহানগর ছাত্রলীগের আহবায়ক জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে সংঘর্ষের খবর তারা পেয়েছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পুলিশ কর্মর্কতাকে পিটিয়েছে ছাত্রলীগ
জবি রিপোর্টার জানান, পুরান ঢাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের দুই কর্মকর্তাকে পিটিয়ে আহত করেছে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির নেতৃত্বে ছাত্রলীগ কর্মীরা। পুলিশকে আহত করার ঘটনাকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে খোদ পুলিশ প্রশাসনসহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে কোনো জিডি পর্যন্ত করেনি পুলিশ প্রশাসন বলে জানা গেছে । আহত এক পুলিশ কর্মকর্তার অপরাধ তিনি ছাত্রলীগের এক নেতার মোটরসাইকেলের লাইসেন্স দেখতে চেয়েছিলেন। অপরজনের অপরাধ ছিল তিনি মারধরের স্বীকার পুলিশের এ কর্মকর্তাকে বাঁচাতে চেয়েছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বাহাদুরশাহ পার্কের কাছে গতকাল চেকপোস্ট বসায় সূত্রাপুর থানা পুলিশ। মোটরসাইকেলে যাওয়ার পথে দুপুর পৌনে ২টায় জবি ছাত্রলীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাসুদ রানার লাইসেন্স দেখতে চান দায়িত্বরত পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক মোঃ সাইফুল রহমান। ছাত্রলীগ নেতা মাসুদ তা দেখাতে অপারগতা প্রকাশ করে। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে ছাত্রলীগ নেতা অবস্থা বেগতিক দেখলে মোবাইল ফোন করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কর্মীদের বিষয়টি জানায়।
এ খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে জবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি কামরুল হাসান রিপনের নেতৃত্বে বেশকিছু ছাত্রলীগ নেতাকর্মী ঘটনাস্থলে গিয়ে সাইফুল রহমান নামের পুলিশ কর্মকর্তাকে বিএনপি-জামায়াতপন্থী বলে মারধর করে ক্যাম্পাসে ধরে নিয়ে যায়। ছাত্রলীগ কর্মীদের মারমুখী আচরণে চেকপোস্টে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করতে বাধ্য হয়। তারা সাইফুল রহমানকে ক্যাম্পাসে নিয়ে আবার মারধর করতে থাকে। এ সময় ক্যাম্পাসে দায়িত্বরত কোতোয়ালি থানার এসআই পরিতোষ তাকে বাঁচাতে গেলে ছাত্রলীগ কর্মীরা তাকেও মারধর করে। তারা পুলিশের ইউনিফরমও ছিঁড়ে ফেলে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী আসাদুজ্জামান ও কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যান। ঘটনাকে ভিন্নখাতে নেয়ার জন্য ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে মিছিল করে। আহত পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে সাংবাদিকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী আসাদুজ্জামানের কার্যালয়ে গেলে তিনি তার কার্যালয় থেকে সাংবাদিকদের বের করে দেন। ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে কোতোয়ালি ও সূত্রাপুর থানার ওসির উপস্থিতিতে প্রক্টর কাজী আসাদুজ্জামান তার কার্যালয়ে ছাত্রনেতা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসে কোনো বিচার ছাড়াই ঘটনার সমাধান করে দেন।
ছাত্রলীগের হামলার শিকার পুলিশ কর্মকর্তা সাইফুল রহমান সাংবাদিকদের জানান, ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে কনস্টেবল সিরাজ ওই মোটরসাইকেলটির (হ-০২-০৮৬৬) কাগজপত্র দেখার জন্য থামায়। পরে আমি মোটরসাইকেলের কাগজ দেখতে চাইলে মোটরসাইকেল আরোহী জানায়, নেতাদের গাড়ির কাগজপত্র লাগে না। পরে তার কাছে পরিচয় জানতে চাইলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি মাসুদ রানা পরিচয় দিয়ে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকে। এর প্রতিবাদ করলে ওই নেতা আমাকে মারধর করে। এক পর্যায়ে তার সঙ্গে আরও ২০-২৫ জন যোগ দিয়ে টেনে হিঁচড়ে রাস্তা থেকে ক্যাম্পাসের ভেতর নিয়ে যায়।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি কামরুল হাসান রিপন জানান, মোটরসাইকেল থামানোকে কেন্দ্র করে পুলিশ কর্মকর্তা সাইফুল বিশ্ববিদ্যালয় গেটের সামনে ছাত্রলীগ নেতা মাসুদ রানাকে মারধর করে। সেখানে উপস্থিত কর্মীরা পুলিশের হাত থেকে তাকে উদ্ধার করে এর প্রতিবাদ জানায়। এ সময় আমি ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে পুলিশের ওই কর্মকর্তা আমার সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করেন। তার পরও উত্তেজিত কর্মীদের হাত থেকে আমি তাকে উদ্ধার করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যাই।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী আসাদুজ্জামান জানান, পুলিশের ওই কর্মকর্তার বেশি বাড়াবাড়ির কারণেই এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। তবে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা ও ছাত্রলীগ নেতাদের উপস্থিতিতে শান্তিপূর্ণভাবে মীমাংসা করে দেয়া হয়েছে।
সূত্রাপুর থানার ওসি নজরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, বিষয়টি মীমাংসা করে দেয়া হয়েছে। তবে তিনি পুলিশ কর্মকর্তাকে মারধরের বিষয়টি চেপে গিয়ে বলেন, ছাত্রলীগ নেতার সঙ্গে তার থানার এএসআই সাইফুল রহমানের ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছিল।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



