somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আওমীলীগ ক্ষমতায় থাকলে মসজিদে উলু শোনা যায়- এই কথার মানে কি ? ► এই নেন লিষ্টি..

১০ ই আগস্ট, ২০১১ দুপুর ১২:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বর্তমান সেক্যুলার সরকারের আড়াই বছরে বাংলাদেশে ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ও ঘৃণা ছড়ানোর লক্ষ্যে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় চরম নিন্দনীয় যে কাজ-কর্মগুলো করা হয়েছে, তার মধ্য থেকে কয়েকটির দিকে পাঠকের মনোযোগ আকর্ষণ করছি।

১. ২০০৯ সালের ২৮ মার্চ ‘সন্ত্রাস নিরসনে ধর্মীয় নেতাদের ভূমিকা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক সামীম মোহাম্মদ আফজাল বলেছেন, পৃথিবীতে যত সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ রয়েছে, তার সবই ইসলাম ও মুসলমানদের মধ্যে (!)। হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানদের মধ্যে কোনো সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নেই। হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানরা সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত নয়।

২. ২০০৯ সালের ১ এপ্রিল এদেশের আওয়ামীপন্থী শিল্পপতিদের অর্থে পরিচালিত সুশীল (?) থিংক ট্যাংক বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউট আয়োজিত ওয়ার্কশপে বক্তৃতায় বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেছিলেন, কওমি মাদরাসাগুলো এখন জঙ্গিদের প্রজনন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। কওমি মাদরাসাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ বিস্তার লাভ করেছে। এসব কওমি মাদরাসায় যে শিক্ষা দেয়া হয়, তা কূপমণ্ডূকতার সৃষ্টি করছে। ’৭৫-পরবর্তী সামরিক শাসনামলে বিভিন্ন সংশোধনী এনে ’৭২-এর সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতার চেতনাকে নস্যাত্ করার ফলেই এবং ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণার পর ধর্মের নামে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়েছে।

৩. ২০০৯ সালের ২৩ এপ্রিল বরিশালের নিউ সার্কুলার রোডের এক বাড়িতে র্যাব হানা দিয়ে বোরকা পরে ধর্মীয় শিক্ষার জন্য জড়ো হওয়ার অপরাধে ২১ নারীকে গ্রেফতার করে। র্যাব সাংবাদিকদের কাছে তাদের অভিযানের সংবাদ জানালে তা ফলাও করে ছাপা হয়। দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে জঙ্গিসংশ্লিষ্টতার কোনো তথ্য না পেয়ে ২১ পরহেজগার নারীকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে চালান দেয়া হয়। ঘটনার দীর্ঘ ২ মাস পর ২৩ জুন আদালত তাদের বেকসুর খালাস দেন।

৪. ২০০৯ সালের ১৯ জুন রাজশাহীতে জঙ্গি সন্দেহে ১৫ নারী ও শিশুকে গ্রেফতার করা হয়। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ওইদিন বিকালেই মুচলেকা দিয়ে তাদের মুক্ত ঘোষণার পর আবার ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখানো হয়। পুলিশ গ্রেফতারকৃতদের সম্পর্কে ব্যাপক তদন্ত করেও জঙ্গিসংশ্লিষ্টতার কোনো তথ্য পায়নি। শেষ পর্যন্ত আদালত তাদের বেকসুর খালাস দিলে জুলাই মাসের ১ তারিখে ১১ দিন কারাবাস শেষে ১৫ জন নিরপরাধ নাগরিক মুক্তি পান।

৫. বোরকা পরার অপরাধে ২০০৯ সালের ৩ জুলাই পিরোজপুর জেলার জিয়ানগরে ছাত্রলীগের বখাটে কর্মীদের প্ররোচনায় পুলিশ জঙ্গি সন্দেহে তিন তরুণীকে গ্রেফতার করে। তারপর পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করলে তিন তরুণীকে ঢাকায় টিএফআই সেলে নিয়ে আসা হয়। ৫৪ ধারায় গ্রেফতারকৃত তরুণীদের বিরুদ্ধে মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন অমর সিংহ। এ সময় তাদের বোরকা খুলতে বাধ্য করে মহাজোট সরকারের দিনবদলের পুলিশ। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদেও কোনো জঙ্গি সংযোগের কাহিনী বানাতে ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ফাইনাল রিপোর্ট দিতে বাধ্য হয়। দীর্ঘদিন কারাগারে বন্দি থেকে অবশেষে তিন অসহায়, নিরপরাধ তরুণী মুক্তি পান।

৬. ২০১০ সালের ৩ এপ্রিল সংবাদপত্রে খবর প্রকাশিত হয় যে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ড. একেএম শফিউল ইসলাম তার ক্লাসে ছাত্রীদের বোরকা পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। তিনি ক্লাসে ‘মধ্যযুগীয় পোশাক বোরকা’ পরা যাবে না এবং এটি সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের কোনো পোশাক হতে পারে না বলে ফতোয়া জারি করেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এটি বিভাগীয় কোনো সিদ্ধান্ত নয়, তবে আমার ক্লাসে কোনো ছাত্রীকে আমি বোরকা পরতে দেব না।

৭. ২০১০ সালের ১ আগস্ট বিশ্ব শান্তি পরিষদের প্রেসিডেন্ট পরিচয়দানকারী জনৈক দেবনারায়ণ মহেশ্বর পবিত্র কোরআন শরিফের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। রিট আবেদনে তিনি দাবি করেন, হজরত ইবরাহিম (আ.) তার বড় ছেলে ইসমাইল (আ.)কে কোরবানির জন্য নিয়ে গিয়েছিলেন বলে যে আয়াত পবিত্র কোরআন শরিফে রয়েছে, তা সঠিক নয়। তিনি দাবি করেন, হজরত ইবরাহিম তার ছোট ছেলে হজরত ইসহাক (আ.)কে কোরবানি করতে নিয়ে যান। এ বিষয়ে সঠিক ব্যাখ্যা ও কোরআনের আয়াত শুদ্ধ করার জন্য দেবনারায়ণ মহেশ্বর আদালতের কাছে প্রার্থনা করেন। আদালত রিট খারিজ করে দেয়ার পর দেবনারায়ণের এই চরম হঠকারী ও উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডে আদালতে উপস্থিত আইনজীবীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে পুলিশ দেবনারায়ণ মহেশ্বরকে কর্ডন সহকারে এজলাস থেকে বের করে তাদের ভ্যানে প্রটেকশন দিয়ে আদালত এলাকার বাইরে নিরাপদ অবস্থানে নিয়ে যায়।

৮. বিচারপতি এইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেনের দ্বৈত বেঞ্চ ২০১০ সালের ২২ আগস্ট স্বপ্রণোদিত (সুয়োমোটো) আদেশ প্রদান করেন যে, দেশের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অফিসে বোরকা পরতে বাধ্য করা যাবে না। ‘নাটোরের সরকারী রাণী ভবানী মহিলা কলেজে বোরকা না পরলে আসতে মানা’ শিরোনামে ২২ আগস্ট একটি দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের বিচারপতিদ্বয় বোরকা পরিধানের বিরুদ্ধে সুয়োমোটো এই রায় দেন।

৯. ২০১১ সালের ২ জুন সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের অন্যতম নেতা মেজর জেনারেল (অব.) কে এম শফিউল্লাহ দাবি করেন, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, বিসমিল্লাহ ও ধর্মভিত্তিক রাজনীতি—এ তিনটির বিরুদ্ধে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে। ওইদিন জাতীয় প্রেস ক্লাবের মতবিনিময় সভা থেকে ঘোষণা করা হয় যে, সংবিধানে বিসমিল্লাহ ও রাষ্ট্রধর্ম থাকলে হরতাল দেয়া হবে।

১০. ২০১১ সালের ৩০ জুন সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী গ্রহণ করে আমাদের সংবিধানের মূল নীতি থেকে আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস বাদ দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতা প্রতিস্থাপন করা হয়।

১১. ২০১১ সালের ১৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পিতৃভূমি টুঙ্গিপাড়া উপজেলার জিটি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক শঙ্কর বিশ্বাস দশম শ্রেণীর ক্লাসে দাড়ি রাখা নিয়ে সমালোচনাকালে হজরত মোহাম্মদ (সা.)কে ছাগলের সঙ্গে তুলনা করেন। এতে ওই ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। পরে পুরো এলাকায় সাধারণ জনগণের মধ্যে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লে শঙ্কর বিশ্বাস টুঙ্গিপাড়া থেকে পালিয়ে যান।

১২. ২০১১ সালের ২৬ জুলাই ধানমন্ডি সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক মদন মোহন দাস মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.) এবং পবিত্র হজ নিয়ে কটূক্তি করেন। সহকর্মী শিক্ষকদের সঙ্গে এক সভায় তিনি মন্তব্য করেন, ‘এক লোক সুন্দরী মহিলা দেখলেই বিয়ে করে। এভাবে বিয়ে করতে করতে ১৫/১৬টি বিয়ে করে। মুহাম্মদও ১৫/১৬টি বিয়ে করেছে। তাহলে মুসলমানদের মুহাম্মদের হজ করা স্থান মক্কায় গিয়ে হজ না করে ওই ১৫/১৬টি বিয়ে করা লোকের বাড়িতে গিয়ে হজ করলেই তো হয়।’

Click This Link
১২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×