somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মানুষের কত টাকা থাকতে পারে (এক বিরল অভিজ্ঞতা থেকে বলছি(রি-পোষ্ট))!!!

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রি-পোষ্টের জন্য প্রথমে দুঃখিত।

পরীক্ষা শেষ হইছে গত বছর মানে ২০১০ সালে ২১ ডিসেম্বর। এখন টানা ৪০ দিন ক্যাম্পাস বন্ধ কি যে করি। দেশেও গেলাম না। যাইহোক ২১ থেকে ২৯ ডিসেম্বর ঘুমের উপর ছিলাম। ঘুমাইতে ঘুমাইতে ক্লান্ত হয়ে গেলাম, এই কয়েকদিন ১৬ ঘন্টার নিচে ঘুমাই নাই। পরে নিজের কাছেই বিরক্ত লাগতে শুরু করল। অনেক দিন ধরে একটা পার্ট টাইম কাজের জন্য চেষ্টা করছিলাম এখানে। অবশেষে হয়ে গেল ৩০ তারিখে ট্রেনিং আর ৩১ তারিখ এ জয়েন। স্যালারী একেবারে খারাপ না। ক্যাম্পাস বন্ধ থাকলে ছাত্ররা ফুল টাইম ও করতে পারে। যাই হোক কাজটা কি আর কোথায় কাজ কিরকম কাজ কিছুই ভালভাবে জানতাম না।

৩০ তারিখের ট্রেনিং থেকে অনেক কিছু জানলাম, বুঝলাম এবং শিখলাম। অনেক হলিউড মুভিতে দেখেছি নায়ক ক্যাসিনোতে জুয়া খেলে মিলিয়ন ডলার জিতে নিয়ে যাচ্ছে। সেইCasino তে আমার জব। এশিয়াতে শুধুমাত্র সিংগাপুরেই ক্যাসিনো আছে। বিভিন্ন দেশ থেকে বড় বড় গ্যাম্বেলাররা আসে এখানে শুধুমাত্র এই জুয়া খেলার জন্য। যাইহোক ৩১ তারিখে জয়েন করলাম এখানে।আমার সাথে ২ ইন্ডিয়ান বন্ধু ছিল। আমরা একসাথেই জয়েন করলাম ওখানে।

প্রথম দিন কাজ শেষ করে যখন সাইন আউট করতে গেলাম। তখন আমাদের ম্যানেজার রিকুয়েষ্ট করল আজ বছরের শেষ দিন অনেক গ্যাম্বেলারের ভীড় হবে আজ কিন্তু সেই অনুপাতে আজ আমাদের লোক কম তাই তোমরা যদি পার আজ ওভার টাইম কর আরো বেশী পে করব। কি আর করা রাজি হয়ে গেলাম।কাজ শুরু হলো আমার আমার ডিউটি পড়ছে লেডিস ক্লাবে। আমি তো প্রথম থ বনে গেলাম ভিতরের পরিবেশ দেশে। মানুষের কত টাকা থাকতে! কত টাকা আছে বাংলাদেশের সবচেয়ে ধনী ব্যাক্তির! টাকা কি জিনিস আমি প্রথম দিন থেকেই বুঝে গেলাম এখানে।

প্রথম কয়েক দিন আমি দিনে ডিউটি করেছি তখন আমার মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছিল জুয়ার আসরের গ্যাম্বেলারদের বিডিং দেখে। ৫০০, ১০০০, ২০০০ ডলার বিড করছে। এক মিনিটের ভিতর সে জিতছে অথবা হারছে এতে তার কোন মাথা ব্যাথা নাই। হারলে অথবা জিতলে তাদের মুখের অবয়বের কোন পরিবর্তন আমার তেমন চোখে পড়ে নাই। যাই হোক দিনে একটু বেশী ক্লায়েন্টস মানে গ্যাম্বেলাররা আসে। ৩ দিন পর তারা আমাকে বলল তুমি চাইলে লাইট শিফট করতে পার। আমি রাজি হয়ে গেলাম ভাবলাম রাতে মনে হয় একটু কষ্ট কম হবে। রাত ১২টা থেকে সকাল ৮ টা আমার ডিউটি। রাত ৩ টা পর্যন্ত মুটামুটি ভীড় থাকে। কিন্তু সবচেয়ে বড় বিস্ময় মনে হয় আমার জন্য অপেক্ষা করছিল শেষ রাতের দিকে। এই সময় আসে বিশ্বের বড় বড় গ্যাম্বেলাররা সাধারনত। দেখলাম ১০০০০ ডলার পর্যন্ত তারা বিট করছে এখানে হাসিমুখেই হয় জিতছে নয় হারছে। আবার ধরছে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল এখানে যারা খেলতে আছে তার ৭০ ভাগ নারী। তাদের বয়স ১৬-২৫ না হলে ৭০-৯০ বছর তবে বেশীর ভাগের বয়স ৭০-৯০ বছর। চোখে দেখে না ভল করে কিন্তু গেম খেলেই যাচ্ছে।

আমার মনে প্রশ্ন জেগেছে এতো টাকা তারা পায় কই! রাতভর কাজ করে আমরা হয়তো ৮০ ডলার পাচ্ছি আর তারা মিনিটেই ১০০০০ ডলার জিতছে! বাংলাদেশ ব্যাংকে কাজ করার সুবাদে আমি দেখেছিলাম টাকা অনেক অনেক টাকা। যা ছিল আমার আপনার বা দেশের সবার।কিন্তু আমি টাকা দেখেছি এখানে। ও আচ্ছা টাকা নয় ডলার। সকালের দিকে যখন সিকুরিটিরা এসে সমস্ত ভল্ট কালেক্ট করে আপনারা বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না। এতো ডলার যে হতে পারে তা আমি কখনো কল্পনাতেই আনতে পারি নাই।

এবার শুনুন ক্যাসিনোর বিজিনেস পলিসি। আপনি এখানে আসলেই আপনাকে ২০ ডলার দিবে এমনিতেই। আপনি ইচ্ছা করলে এই ২০ ডলার নিয়ে চলে যেতে পারেন বাসায়। আপনার প্রথম মনে হতে পারে ২০ ডলার তো এমনিতেই পেলাম এটা ধরে দেখি কি হয়। তার মানে আপনি নিজের পকেট থেকে এবার শুরু করবেন খেলা। আবার যখন গ্যাম্বেলাররা মনযোগ দিয়ে গেম খেলে তাদের মনযোগ যেন নষ্ট না হয় সেই দিকে সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দেয়া হয় কেন জানেন! যাতে করে তারা আরো বেশি বিডিং করে।

দোয়া করেন আমি যেন কখনো লোভে না পড়ি। অবশ্য আমাদের খেলার সুযোগও তেমন নাই ওখানে। সবচেয়ে বড় কথা টাকা নাই। থকলেও কখনো যেন ওই দিকে না যাই। জব করি সময় কাটাই। ক্লাস শুরু হলে বাদ দিয়ে দিব। ভিতরে হাজার হাজার সিসি ক্যামেরা ফিট করা যার জন্য কোন ছবি দিতে পারলাম না। নেট থেকে কিছু ছবি শেয়ার করলাম।










*************আমি যাষ্ট আমার অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। কেউ আমাকে দয়া করে ভুল বুঝবেন না।******************
৮টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে আপনি হাদিস শুনতে চান?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৪৫


,
আপনি যদি সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে হাদিস শুনতে চান, ভালো; শুনতে থাকুন। আমি এসব প্রফেশানেলদের মুখ থেকে দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, বাজেট,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×