আমার বয়স যখন চার বছরের উপর তখন স্কুল দূরে থাকায় বাবা বাসায় আমার জন্য গৃহশিক্ষক রাখলেন যাতে বর্ণমালার সাথে পরিচয় ঘটে, আম্মা আমাকে বাসায় পড়াতেন কিন্তু তখন আমার ছোট ভাই আম্মার পেটে থাকায় আম্মার বিশ্রামের জন্যই মনে হয় বাবা এ ব্যবস্থা করেন।
তখন আমরা ২ ভাই ২ বোন,বড়ভাই তখন পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে এবং বেশ দুরন্ত,তার ছোট আমি,আমি ছোটবেলা থেকেই যথেষ্ট চুপচাপ এবং শান্তশিষ্ঠ।
আমরা তখন থাকতাম মেহেরপুর শহরে এবং হাইস্কুল এবং স্টেডিয়ামের কাছে গু্প্তিবাড়ীতে ৩ তলা বিল্ডং এর দোতলায় এবং এ স্টেডিয়ামে স্বাধীনতার পর তখন লাল রং এর হেলিকপ্টার নামতো ।
গুপ্তিবাড়ীটি ছিল বিশাল এলাকা নিয়ে এবং পাশে আমবাগান,বিশাল ৩টি তেতূল গাছ,বেতবাগান এবং বেতবাগানের মধ্যে খাদ বা গর্তছিল তা সেচে হাতে মাছ ধরাযেতো অনেক যার মজা কোনদিন ভোলা যাবে না।সাপের উপদ্রব ছিল এবং মাঝেমাঝে সাপ মারা পড়তো যা ছিল আমাদের আতঙ্কের কারণ।
এ বিশাল কম্পাউন্ডের মধ্য ১টি ৩লা বাড়ী,২টি ২তলা বাড়ী এবং কয়েকটি ১তলা বিল্ডিং ছিল ,২টি বিশাল বাড়ী প্লাস্টিকের পাইপের গুদাম হিসাবে ব্যবহার হতো এবং সেখানে প্রচুর জংলী কবুতর ও একধরনের ছোট কাল পাখী বসবাস করতো যারা আকাশের অনেক উচুতে উড়তো মাঝেমাঝে। এখানে ৫টি পরিবার বসবাস করতাম এবং আমাদের বাড়ীওয়ালার ৫বছর বয়সী প্রচন্ড দুরন্ত ছেলে সহ আমরা ২ ভাই ই ছিলাম এ এলাকার ছোটবালক।
বিশাল ৩ টি তেতুল গাছে হনুমান আসতো এবং আমরা ৩টি ছোটবালক লাঠি নিয়ে হনুমানকে ভ য় দেখাতে যেতাম,হনুমান তখন বন্দুক সহ পজিশন নিয়ে শুয়ে থাকার মত ভঙ্গীতে বেশ উচু তেতূল গাছের মোটা ডালে শুয়ে থেকে আমাদের বীরত্ব দেখতো এবং মাঝেমাঝে যখন হনুমান একটু উঠার ভঙ্গী করতো তখন পড়িমড়ি করে আমরা ভয়ে পালাতাম এবং একটু পড়ে আবার শুরু হতো আমাদের বীরত্ব দেখানো,আমাদের এ নিস্ফল বীরত্ব হনুমানেরা মনেহয় বসেবসে উপভোগ করত।
এ নীরব এলাকায় মাঝেমাঝে শুনতাম হনুমান কারোবাসায়গিয়ে মেয়েদের একাপেয়ে জ্বালাতন করতো,আমার মনে হয় হনুমান নয় মেয়েরা আতঙ্কিত হয়ে এসব কাহিনীর জন্ম দিত।
(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই নভেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৩:৩৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



