অপু প্রতিদিন সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে তার পুরোনো সবজি ভ্যানটা নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। ঢাকার রাস্তায় তার সবজি ভ্যান দেখে সবাই চেনে, কেউ ডাকে "ভেজিটেবল অপু," আবার কেউ "কাঁচা বাজার আলী।" নিজের এই নামগুলো অপু বেশ মজা করেই নেয়।
অপুর ভ্যানের সাজসজ্জা খুব মনমুগ্ধকর। টাটকা সবজির রঙ আর সুগন্ধে পুরো এলাকা মাতিয়ে রাখে। ভ্যানের সামনে লেখা, "খাঁটি তরকারি, সবার প্রিয় ভেজিটেবল অপু।" ভ্যান ঠেলে ঠেলে এক এক পাড়ায় যায় অপু, আর তার সুরেলা কণ্ঠে বলে, "তাজা সবজি নিন, স্বাস্থ্য ভালো রাখুন!"
একদিন এক বৃদ্ধা মহিলা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তার হাতে সামান্য কিছু টাকা ছিল। তিনি অপুকে ডেকে বললেন, "বাবা, কিছু সবজি দাও, আমার টাকাপয়সা তেমন নেই।" অপু হেসে বলল, "টাকা নিয়ে চিন্তা করবেন না। আপনার জন্য সবজিই আমার উপহার।" অপু বিনামূল্যে কিছু তাজা সবজি তার হাতে তুলে দিলো।
অপুর সবজি ভ্যানে শুধু তরকারি নয়, বরং মানুষের হাসি-মজা, আন্তরিকতা, আর সহমর্মিতার গল্প জমা হয় প্রতিদিন। পাশের বড় দোকানিরা যখন দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা করে, তখন অপু বলেই বসে, "সবাইকে নিয়ে চলাই তো আসল মজা, ব্যবসা নয়, ভালোবাসাই সবার প্রিয়।"
অপুর ভ্যান নিয়ে তার এই যাত্রা কেবলমাত্র ব্যবসা নয়। মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক, তাদের সুখ-দুঃখের অংশীদার হয়ে ওঠাই তার মূল লক্ষ্য। আর এভাবেই "ভ্যানের ভেজিটেবল অপু" বা "কাঁচা বাজার আলী" হয়ে ওঠে সবার প্রিয়, সহজ-সরল অথচ হৃদয়ছোঁয়া একজন সবজি বিক্রেতা।
অপুর জীবনের এই সহজ গল্প যেন এক অসাধারণ ভালোবাসার জগৎ তৈরি করে।