somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"বিছানাকান্দি" ঘুড়ে আসুন!

০৩ রা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ আবার লেখার জন্য বসলাম, এই আমার জন্মভুমি এখানে যে কত সুন্দর সুন্দর জায়গা আছে তাহা এই লেখনি দ্বারা হয়তো বা বুঝাতে পারবো কিনা আমার জানা নাই। বাংলাদেশের সীমান্তে মেঘালয় পাহাড় থেকে নেমে আসা ঠাণ্ডা পানির প্রবল স্রোত থরে থরে সাজানো পাথরের ওপর দিয়ে বয়ে চলে। ঠিক যেন একটি পাথুরে নদী। আমি চেষ্ট করবো আসল চিত্র টুকু আপনাদের কাছে তুলে ধরতে-


কবি গুরু রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর বলে ছিলেন-
দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া
ঘর হতে এক পা ফেলিয়া
একটি ধানের শীষের উপর
একটি শিশির বিন্দু।
তিনি কিন্তু তার অন্তর চক্ষুর পাতা খুলে, তার সেই নৈশর্গিক দৃশ্য আমাদের সমানে তুলে ধরতে একটুও দেরী করে নাই। আমাদের হাতে কাছে পড়ে আছে হাজারো সুন্দর, একটু সত্যিকারের সুন্দরের চক্ষু মেলে দেখুন, দেখতে পাবেন, আপনার চারপাশে কতই না আনন্দঘন ও সুন্দর্য্যপূর্ণ দৃশ্য। অবোলকন করতে পারবেন এ আমার বিশ্বাস। পাহাড় নদী ও কাকের চক্ষুর মত নীল ও সুশীতল সুপেয় পানির ধারা।



সকাল বেলা অফিস হতে রওয়ানা হলেন, জনাব, জিসান আহমেদ ও মিসেস জিসান সাথে জনাব, ফরহাদ হোসেন, তেমুখি হয়ে আম্বরখানা। সেখান থেকে সিএন্ড জি করে সোজা বিছানাকান্দি কিন্তু রাস্তাটা একটু ভাঙ্গা ও চলার জন্য যথেষ্ট সুন্দর নয়।বিমানবন্দর থেকে সালুটিকর রাস্তা চরম খারাপ। পিচঢালা কালো রাজপথে একটু পরপরই ভাঙা গর্ত। গর্তগুলো দেখলে মনে হয় একটু আগেই যেন এ পথে গডজিলা হেঁটে গেছে। তার মানে ওখানকার ভারী বালুর ট্রাকগুলো রাস্তার এ হাল করেছে। তবে যদি একটু কষ্ট করা যায় তবেই পৌছানো সম্ভব এই সুন্দর জায়গাতে। ১২ টা বেজে গিয়াছে সেখানে পৌছতে কিন্তু শরীরেরও ১২টা বেজেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এই কষ্ট তখনই আনন্দঘন মুর্হুতে পরিনত হলো যখন ঐ সুশীতল পানিতে শরীর তলীয় একবার স্নান করলেন। প্রাণ খুলে হাসি আপনার শরীরের ৮০% রোগ দুর হয়ে যাবে তা আমি বলে রাখলাম ।


পাহাড় ও নদীর সুনন্দর এক মিলন, দেখলে চক্ষ জুড়িয়ে যায়। কত কবি তার ভাবধারা রসালো করেছে এই দৃশ্য দেখে ও তুলে এনেছে রসের অমিয় ধারা, লেখনির মাধ্য ফুটিয়ে তুলেছেন, মন মাতানো কত ছন্দ। আমি হয়তো সেই ছন্দ আপনাদেরকে দিতে পারবো না কারণ এই যে পাহাড় দেখছেন, ওটা শুধুই দেখা যাবে ওখানে যাবার চিন্তাও করিবেন না। কারন ওটা আপনার-আমার দেশর নয়, ওটা ভারত বর্ষ, শুধুই করুনা করে এই নালা টুকু আমাদেরকে দান করেছেন, এজন্য ওদেরকে ধন্যবাদ না দিলে হয়তো আবার তারা রাগ করতে পারে।

আমি বাংগালী, বাংগলা আমার মা, লক্ষ লক্ষ বাঙ্গালীর রক্তের বিনেময়ে এই অর্জন এটা কিন্তু মোটেও কম পাবার নয়, আমাদের যা আছে আমি তাতেই খুবই খুশি। তবে দিব না, কোনও দিনও নয়, কখনও নয়, জীবন বাজি রাখবো তবু একমুঠো মাটি দিবো না, আমার মায়ের বুকে যেন কারো পদ চিহ্ন না পরে। আর কোন বর্গী নয়। আর কোন হায়েনার নয়। আমি স্বাধীন, আমি স্বাধীন, আমি স্বাধীন বাংলার সন্তান। আমরা বীরের জাতী, আমার পরবর্তী বংশধরা এখানেই বড় হবে, আমার মত এই দেশকে ভালবাসবে।

সামনে এগিয়ে চলুন, গ্রাম দেখতে দেখতে হাদারঘাট পৌঁছে যাবেন। হাদারঘাট বাজারটি খুব একটা বড় নয়, তবে ছোটও নয়। মোটামুটি সবই পাওয়া যায় এখানে। খাবার, পানি, কাপড় সবই কিনতে পাওয়া যায়। তবে খাবার বা পানি নিবেন কিনা সেটা আপনার বিষয়। বিছানাকান্দি প্রকৃতির কোলে জেগে উঠা এক অপূর্ব দৃশ্য। ওখানে পানির বোতল, খাবারের অবশিষ্ট অংশ না ফেললেই খুশি হবো। আমরা যদি চেষ্ট করি তবে সুন্দরের মর্যদা একটু হলেও দিতে পারি। তাই নয় কি?


হাদারপার বাজারেই বিছানাকান্দি যাওয়ার নৌকা পাওয়া যাবে। আপনাকে দেখে তারা ঠিকই বুঝে নিবেন। শহুরের লোক বলে একটা কথা তাই মাঝিরা ২০০০/- টাকা চেয়ে বসবে এতে কোন সন্দেহ নাই, রাজি না হওয়াটাই ভাল। নৌকা ভাড়া আসা-যাওয়া সর্বোচ্চ ৪০০/৫০০ টাকার মধ্যেই পাওয়া সম্ভব। মেঘালয়ের দৃশ্য দেখে মাথা খারাব করার কোন দরকার নেই, মাঝে মধ্যে হেটে নদী পার হওয়া সম্ভব। আমার বৃষ্টি হলে কোন ভাবেই পার হওয়া সম্ভব না। এমন কি নৌকা দিয়েও না।

তবে যত কষ্টই হোক, যাওয়া সম্ভব বা পারবেন। মনে রাখবেন এই জায়গাটা কিন্তু আমার দেশের শেষ প্রান্ত। বিজিবির একটি অফিস আছে একদম শেষ মাথায়। বিছানাকান্দি নামার আগে অবশ্যই তাদের সাথে পরামর্শ ও অনুমতি নিয়ে নেবেন। যেকোন বিপদে তারা যেন আপনাকে সাহায্য করতে পারে, তারা আপনাকে অবশ্যই দিক নির্দেশনা দিবেন, মাথার রাখতে হবে। পায়ে হেঁটে গেলেই বিছানাকান্দির একমাত্র সুন্দর ঝরনাটি দেখা যাবে। মেঘালয় পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝরনা। অনুমতি না নিয়ে ভারতের মাটিতে চলে যাওয়া- অবশ্যই বোকামি ছাড়া আর কিছুই না কারণ ঝরণার আনন্দ যে কেহো কে কাছে টানার মত যাদু তার আছে । এটা আমি বিশ্বাস করি। সে যে সুন্দর্যের রানী।

বিছানাকান্দির নীল জলে নামার আগে একটু চিন্তা করার জন্য অনুরোধ থাকলো। বৃষ্টি সময় স্রোতের শক্তি কল্পনা করা অসম্ভব। পা পিছলে বা স্রোতের টানে পাথরে আছাড় খাবার সম্ভাবনা খুবই বেশী যদি তার বাস্তব জ্ঞান না থাকে। এক্ষেত্রে সাবধান থাকাটাই ভাল। শীতল জলের পরশ আপনাকে যে পাগল করতে পারে তা আগেই বলে রাখলাম, কিন্তু কিছু না ভেবেই নেমে পড়বেন না যেন। স্রোত যেদিন বেশি থাকবে সেদিন পানিতে না নামাই ভাল বলে আমার মনে হয়। তারুন্যের ধর্ম ছুটে চলা তাকে তো আর আটকাতে পারবেন না। তার ইচ্ছা, সে যে সুন্দর্য্যের বুকে ঝাপ দিতেই ভালবাসে, মানেনা কোন বাধা। তবে সর্তক থাকার অনুরোধ টুকু রক্ষা করবেন নিশ্চয়ই।


আমি দেখেছি এই বাংলায় এক তরুনীর উচ্ছাস, তার হাসি, কালো চুলের বাতাসে দোলানো লুকোচুরি খেলার এক অপরুপ দৃশ্য। আমি দেখেছি সেই তরুনীর চোখে বাংলার মানচিত্র।আমি দেখেছি তার চোখে বাংলার ভালবাসা।

ভালোর মাঝেও আছে খারাপের হাতছানি, দেখা যায় কাছে এসে ফিস ফিস করে বলছে, সাহেব লাগবে আছে, প্রত্যেকটা নেশার এক একটা নাম আছে, কেউ যেন সেই অসত লোকগুলোর কথায় না পড়ে সেই জন্য এই লেখা
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:৫৬
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×