পড়াশোনা নিয়ে সিরিয়াস টাইপ স্টুডেন্ট আমি কোন কালেই ছিলাম না। সেমিস্টারের প্রথম অর্ধেক সিরিয়াস থাকি, তারপর নাকে সরিষার তেল দিয়ে ঘুম, যার ফলে "পি এল" এর সময় করতে হয় ফ্রেন্ডদের কাছে দৌড়াদৌড়ি। আগে জানতাম "পি এল" মানে পাছায় লাথি, ভার্সিটিতে এসে শুনি প্রিপারেশান লিভ।
তো ৩১ তারিখ থেকে পরীক্ষা, গতকাল সন্ধ্যার দিকে গেলাম মিরপুরে এক ফ্রেন্ডের বাসায়। বিদ্যুত ছিল না, মোবাইলের ব্যাটারী দিয়ে বানানো চার্জলাইটে পড়াশোনা শুরু করলাম। কিন্তু হটাৎ বলানেই কওয়া নেই ব্যাটারীটা গেল বাস্ট হয়ে। বড় টুকরাটি ফ্রেন্ডের প্যান্টে পড়ে প্যান্টটাই পুড়ে গেল, আর কিছু অংশ এসে লাগল আমার ডান চোখে। তাড়াতাড়ি পানির ঝাপটা নিয়ে কিছুক্ষন শুয়ে থাকলাম। কিন্তু সময়ের সাথে দেখি জ্বালাপোড়া আরো বাড়ে।
গেলাম মিরপুর ১, কিন্তু দূর্ভাগ্য লায়ন্স সহ সব কটিই বন্ধ হয়ে গেছে। শেষমেষ ট্যাক্সি নিয়ে আসলাম আগারগাও-এ জাতীয় চক্ষু ইনিস্টিটিউট ও হাসপাতালে। গিয়ে তো অবাক জরুরী বিভাগ পুরো ফাকা, একটা মানুষও নাই। পরে দারোয়ানকে বললে আধাঘন্টা পর কোথা থেকে একটা ডাক্তার ডেকে আনল।
চোখ ওয়াস করার পর চোখের পর্দার নিচে থেকে অনেকগুলো ব্যাটারীর ভেতরের অংশ বের করল ডাক্তার। সাত দিনের ওষুধ দিল, ড্রপ, অয়েনমেন্ট আর নাপা। নাপা যে কি কাজে লাগবে কে জানে।
ভিজিট দিতে গিয়ে খেলাম টাস্কি। ভিজিট নাকি ১০টাকা। এটা কি সম্ভব এই দেশে? তবে সাথে বললো, খুশি থাকলে চা-পানি খাওয়ার টাকা দেয়া যেতে পারে। ১০০টাকা দিয়ে ওষুধ কিনে চলে আসলাম বাসায়। দিলাম ঘুম।
আজ সকালের পর জ্বালাপোড়া একটু কমেছে, বিকালের দিকে চোখের লালভাব টাও কমেছে অনেক, কিন্তু এখনো সমস্যা, দূরের ছোট ছোট লেখা ডান চোখ দিয়ে পড়তে পারছিনা। এটা পারমানেন্ট থাকবে, নাকি টেম্পোরারি কে জানে?
পিএল এর এই এক একটা দিন আমার কাছে এক এক মাসের পড়াশোনার সমান। এটেন্ডেন্স ও ক্লাস টেস্ট মিলে ৩০ মার্কের মধ্যে ৫-৬ মার্কও থাকবে কিনা সন্দেহ, বাকি ৭০ মার্কের মধ্যে টার্গেট কমপক্ষে ৫০ করে তোলা। এখন এই অবস্থায় কি যে করব! ভালোয় ভালোয় তাড়াতাড়ি সবকিছুর সমাধান হয়ে গেলেই বাঁচি।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




