somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি নিখোঁজ সংবাদ.....

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১০:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

।১।
আজকের অপারেশনটা হঠাত্ করেই, আগে থেকে কোন পরিকল্পনা ছিল না। সেক্টর কমান্ডারের নির্দেশ ছিল আরও কিছুদিন ওদের গতিবিধি লক্ষ্য করে ওদের উপর চূড়ান্ত আঘাত আনা। কিন্তু সকালে যখন হাইড-আউটের মালিক করিম মিয়া কাঁদতে কাঁদতে খবরটা নিয়ে আসে তখনই রফিক সিদ্ধান্ত নেয় আজকে রাতেই অপারেশন করতে হবে, যেভাবেই হোক করিম মিয়ার মেয়েকে উদ্ধার করতে হবে। আজ সকালে রাজাকারগুলো পাকি বাহিনী নিয়ে আসে করিম মিয়ার বাড়ীতে। অনেক মারধর করার পরও সে মুক্তিযোদ্ধাদের কোন তথ্য না দেয় না। তখন রাজাকারের পরামর্শে পাক-বাহিনী ঘর থেকে করিম মিয়ার মা-মরা মেয়েটাকে উঠিয়ে নিয়ে যায়, সাথে খুটিতে বাঁধা দুইটা ছাগলও। ওরা চলে যেতেই করিম মিয়া ছুটে চলে আসে মুক্তযোদ্ধাদের কাছে, তার মা-মরা মেয়েটাকে বাঁচানো আকুতি নিয়ে। তখনই রফিক সবাইকে প্রস্তুত হতে বলে। সন্ধ্যা হতেই ওরা বেড়িয়ে পড়ে রাতের আঁধারে। আগেই সালামকে দিয়ে সে সব খোঁজখবর নিয়েছে। তারা এখন অপেক্ষা করছে সুযোগের। দূর থেকে হায়েনাদের হাসি-ঠাট্টা শোনা যাচ্ছে। রফিক বুঝতে পারে আর দেরী করা যাবে না। রফিক পাশে থাকা সহযোদ্ধাদের নির্দেশ দিল আগানোর। সবাই অন্ধকারে আস্তে আস্তে হাটা শুরু করে। মশিউর রেঞ্জে আসলেই ওর এলএমজিটা সেট করে। সবাই কাছাকাছি যেতেই রফিক নির্দেশ দেয় ফায়ার অন করার। সবাই একসাথে ঝাপিয়ে পড়ে। আচমকা আক্রমণে পাকীরা কিছুক্ষণ থমকে গেলেও তারাও ফায়ার অন করে। মাথার উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে অজস্র গুলি। এর মধ্যে শুয়ে পড়ে, আস্তে আস্তে এগিয়ে যায় রফিক। পিছন থেকে মশিউরের এলএমজি তাদের কভার দিচ্ছে। এই সময় মধুর ক্যাম্পের পিছন থেকে মর্টার বর্ষণের কথা। সে কি এখনো পৌছায়নি? এমন সময় ক্যাম্পের পেছন দিক থেকে উড়ে আসে একটি মর্টার। এসে পড়ে ঠিক পাক বাহিনীর বাংকারে। উড়ে যায় সেটি। রফিক এবার সবাইকে নির্দেশ দিয়ে গুলি করতে করতে উঠে যায়। না, সেদিন পাক বাহিনী তেমন প্রতিরোধ করতে পারেনি। কিছুক্ষণের ভেতরেই তারা ক্যাম্প ছেড়ে পালিয়ে যায়। মুক্তিবাহিনী ধাওয়া করে কিছু পাক সেনাকে সেখানেই মেরে ফেলে, বাকীগুলো কিভাবে যেন পার পেয়ে যায়। আর ধরা পড়ে দুইজন রাজাকার। তাদেরকে পিঠমোড়া করে বেঁধে নিয়ে আসা হয় হাইড-আউটে। করিম মিয়ার মেয়েকে অক্ষতই পাওয়া যায় স্কুলের এক রুমে। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে পৌছে দেয়া হয় করিম মিয়ার ঘরে।

।২।
উপরের ঘটনাটা হয়তো কাল্পনিক। তবে ’৭১ যোদ্ধারা এভাবে অনেক মেয়ের জীবন বাঁচিয়েছেন পাক হানাদারদের হাত থেকে, অনেককে ফিরিয়ে দিয়েছেন তার স্বজনের কাছে। তেমনি একজন মুক্তিযোদ্ধা আজ কেঁদে পড়লেন আমাদের কাছে। গত ১মাস ২দিন হল তার মেয়েকে খুঁজে পাচ্ছেন না। তাকে খুঁজে পাওয়ার জন্য তিনি সবকিছুই করেছেন। পত্র-পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েছেন, পুলিশের কাছে গেছেন, হাসপাতাল-ক্লিনিক সবজায়গায় খোঁজ করেছেন, কিন্তু খুঁজে পাননি। মেয়েটির নাম- মাহী নওরীন সুরভী। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এবং কলেজ থেকে এস.এস.সি. এবং এইচ.এস.সি. দুটোতেই জিপিএ-৫ পেয়েছিল মেয়েটি। কিন্তু কোন কারণে সে তার মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। গত ২১-১১-২০১০ তারিখে নিজ বাড়ী মিজমিজি, কান্দপাড়া, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ থেকে নিঁখোজ। তার বয়স ১৮, গায়ের রঙ ফর্সা, উচ্চতা ৫‌’-০১’’। তার পরনে ছিল গোলাপী রং-এর সালোয়ার কামিজ, মাথায় ঘিয়া রং-এর ওড়না, চোখে চশমা। কেউ যদি তার খোঁজ পান তবে নিম্নের ঠিকানায় যোগাযোগ করার জন্য সবিনয় অনুরোধ জানানো যাচ্ছে:

মো: ওয়াজেদ উল ফারুক
১০২, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, ঢাকা-১২১৫
মোবাইল নং: ০১৭১২২৪৬৩২৭, ০১৯২২১৯০৮৪৬, ০১৯২২৫৯৭৬৩১




(নিখোঁজ সংবাদটি ২৬-১১-২০১০ তারিখে 'বাংলাদেশ প্রতিদিন' এবং ৩০-১১-২০১০তারিখে 'প্রথম আলো'-তে প্রকাশিত হয়েছিল)

[এই লিংকটি সবাই শেয়ার করুন। আপনার বন্ধু-বান্ধব সবাইকে জানিয়ে দেন। তাহলে হয়তো মেয়েটাকে খুঁজে পাওয়া আরও সহজ হবে।]
৪টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×