মাশরাফি বিন মর্তুজা জাতীয় ক্রিকেট দলের নায়ক থেকে মহানায়কে পরিণত হয়েছেন। কারণ, মাশরাফিকে বিশ্বকাপ ২০১১-এর মূল দলে রাখা হয়নি। দুপুরে মিরপুরে একাডেমী ভবনে যখন ১৫ সদস্যের জাতীয় দল ঘোষণা হচ্ছে তার আগেই বাইরে কয়েকশ’ মাশরাফি ভক্তের জানা হয়ে গেছে তাদের মহানায়ক মাশরাফি দলে নেই। পেছনেই একাডেমি ভবনের মাঠে মাশরাফি তখন জাতীয় দলের সঙ্গে অনুশীলন করছেন। পুরো মিডিয়া তখন মাশরাফির বক্তব্য শুনতে দাঁড়িয়ে আছে। অবশ্য মাশরাফির জানা হয়ে গিয়েছিল আগেই তিনি দলে নেই। তাই তো নিজের সব রাগ যেন ব্যাট দিয়ে বলের ওপরই মেটাচ্ছিলেন মাশরাফি। এর সঙ্গে আরেকটি বিষয় ছিল প্রধান নির্বাচক রফিকুল আলম দল ঘোষণায় বলেছিলেন মাশরাফির নাকি ফিটনেসের কোন কিছুই নেই। অন্যদিকে নেটে মাশরাফি বল আকাশে ভাসিয়ে একাডেমি ভবনের বাইরে পাঠাচ্ছেন। মনে হলো মাশরাফি যেন প্রধান নির্বাচককেই জবাব দিচ্ছেন। অনুশীলন শেষে বিকালে মাশরাফি অবশেষে এলেন। শুরুতেই মাশরাফিকে প্রশ্ন করা হয় ‘আপনি তো জাতীয় দলে নেই’ আপনার প্রতিক্রিয়া জানতে চাই আমরা। অন্য দিকে একাডেমিক ভবনের দোতলায় মাশরাফি, মাশরাফি বার বার মাশরাফি চিৎকারে কানে তালা লাগার অবস্থা। বিষয়টি ধীরে ধীরে বিসিবির নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাবার আগেই মাশরাফি বলেন, আমি দলে নেই ভাল লাগার বিষয় নয় এটা। তারপরও বলব যে কারণে নেই সেই ইনজুরি থেকে ফিরে আসার চেষ্টা করবো। ফিটনেস ফিরে পেলে আবার জাতীয় দলে ফিরে আসার চেষ্টা করবো তবে বিশ্বকাপের কথা বলছি না। আগামীতে যে ম্যাচগুলো খেলবো সেগুলো ফিটনেস ঠিক করেই খেলার চেষ্টা করবো।’ আপনি তো তৈরি ছিলেন। তাহলে কেন নির্বাচকরা সুযোগ দিলেন না? অস্ট্রেলিয়ার মাইক হাসি যদি অপারেশনের পরও অভিজ্ঞতার কারণে সুযোগ পেতে পারে আপনিতো সে হিসেবে অনেকটা এগিয়ে আছেন। মাশরাফি- তৈরি আমি ছিলাম না। তবে শতভাগ আত্মবিশ্বাসী সব সময়। আমরা আত্মবিশ্বাসের লেভেলটা সব সময় ওপরের দিকেই থাকে। আসলে এখন আমার আর কিছু করার নেই। আমি নির্বাচকদের সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান জানাছি। যারা খেলবে আমি দোয়া করছি তারা যেন ভাল খেলে। আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম কিন্তু আমার ভাগ্য খারাপ।’ নির্বাচকরা বলছেন আপনার ফিটনেস নেই। আপনার অনুশীলন কিন্তু তা বলছে না। মাশরাফি- দেখুন আমি ২৬ দিন আগে লাঠিতে ভর দিয়ে যখন স্টেডিয়ামে এসেছিলাম তখনও বলেছিলাম আমি আত্মবিশ্বাসী।
এখন আমি হালকা বোলিং করছি। আমার হাতে এখনও ১ মাস সময় আছে। আমি মনে করি আমি এখন যে অবস্থায় আছি তাতে আমার পক্ষে ফিরে আসা অসম্ভব কিছু নয়।’ নির্বাচকদের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপনার কি বলার আছে? এবার আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলেন না মাশরাফি। দুই চোখ দিয়ে শুধু অঝোরে পানি পড়ছিল। কিছুই বললেন না দেশসেরা এই পেসার। চোখের পানিতে জবাবটা দিয়ে গেলেন ।

নির্বাচকদের বলতে চাই,
আমাদের ফিটনেসহীন মাশরাফি, আপনাদের পেয়ারের আশরাফুইল্লার চেয়েও অনেক বেশী কার্যকর। আশরাফুইল্লার বিচার মাঠেই হবে। দর্শকরা মাঠেই ওকে কচুকাটা করবে,শুধু একটু খারাপ খেলেই দেখুক না?
তথ্যসূত্রঃ মানবজমিন,২০ জানুয়ারী ২০১১