somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শুভ প্রবাস জীবন

১২ ই অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৩:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মেডিকেল, আইডি – ভিসা রিনিউ এসব করতে যেয়ে বুঝলাম আমার প্রবাস জীবনের তিন বছর হতে যাচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী তিন বছর পর পর করতে হয়। ঘড়ির কাটা কত দ্রুত দৌড়ায়, ক্যালেন্ডারের পাতাও দ্রুত উল্টায় ! মনে হচ্ছে এইতো সেদিন দুই বার ফ্লাইট মিস করে তৃতীয় বারে ফ্লাইট ধরলাম সময় এক অদ্ভুত জিনিস। ছোটবেলায় মুখস্ত করা বাণী, সময় এবং নদীর স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করেনা। চলছে তো চলছেই। বিষয়টি নিয়ে যতই ভাবা যায় ততই মিশ্র অনুভূতির এক শিহরণ বয়ে যায় !!



তিন বছর আগে আজকের দিনেই প্রবাসের ফ্লাইট ধরেছিলাম। আসার দিনের গল্পটা একটু অন্যরকম । সকাল সাড়ে নয়টায় ফ্লাইট ধরতে সাড়ে সাত টায় এমিরাট এয়ারলাইন্স কাউন্টারে আসছি, সুরেলা কন্ঠী জানালো, সরি স্যার আপনার বোডিং পাস দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। জনশক্তি রপ্তানি ব্যুরো থেকে আপনার ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স(স্মার্ট আইডি কার্ড) নিয়ে আসতে হবে। এই কার্ড করতে এক সপ্তাহ সময় লাগবে। কিভাবে , কোথায় যেয়ে করবো বিস্তারিত বলে দিলেন। জরুরি ভাবে করলে তিন দিনেই পেয়ে যেতে পারেন।তার সাথে আর কথা না বাড়িয়ে ফ্লাইট সময় সকাল সাড়ে নয়টার পরিবর্তে সন্ধ্যা সাত টায় করে মতিঝিলে জনশক্তি রপ্তানি ব্যুরো অফিসে যাচ্ছি। সকালের জ্যাম ঠেলে বিমানবন্দর থেকে মতিঝিলে যাওয়া আর ঢাকা টু দুবাই প্রায় সমান সময় দূরত্ব :)

মতিঝিল যেতে যেতে পাপ্প ভাইকে পেয়ে গেলাম। তিনি সব কিছু সেট করে রাখবেন বলে দ্রুত ব্যুরো অফিসে যেতে বললেন। অনেকটা পাসপোর্ট করার মতো, কোথায়ও ছবি তুলছি কোথায়ও ফিঙ্গার প্রিন্ট দিতে মতিঝিলের এক অফিস থেকে আরেক অফিস যাচ্ছি। নিজেই নিজের ফাইল নিয়ে এক রুম থেকে আরেক রুম স্বাক্ষর করে বেড়াচ্ছি। তিন দিনের কাজ তিন ঘন্টায় শেষ করে পাপ্প ভাই আইডি কার্ড দিয়ে হাসতে হাসতে বললেন, লিটন দৌঁড়াও তোমার স্যাটোল (ফ্লাইট) ছেড়ে দিবে। পাপ্প ভাইকে ধন্যবাদ দিয়ে মতিঝিল টু বিমানবন্দর , আসতে আসতে সন্ধ্যা ৬ টা। অবধারিত ভাবে সাত টার ফ্লাইট মিস করলাম। এবার ঠিক হলো রাত সাড়ে ৯ টার ফ্লাইটে আসবো, এটা নির্ভর করছিলো সিট প্রাপ্যতার উপর। দুবাই অফিস থেকে দ্বিতীয় বারের মত টিকিট কেটে রাত সাড়ে ৯ টার ফ্লাইট কনফার্ম করে জানালো।
দুবাই থেকে ফজলু ভাই বিভিন্ন ভাবে পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করছিলেন। ভাইকে ধন্যবাদ দিয়ে শেষ করা যাবে না। অসম্ভব ভালো একজন মানুষ। ফজলু ভাইয়ের কাছে অনেক ঋনী । টাকা পয়সার ঋন না, ভালোবাসার ঋন। এই ঋনের বোঝা অনেক বেশি !!

সারাদিন ছুটোছুটিতে শরীর ,মন দুটোই বেশ ক্লান্ত । এবার কি মনে করে আইডি কার্ড হাতে নিয়ে দেখি আমার নামের বানান ভুল। পাপ্প ভাইকে বলতেই -লিটন কোনো সমস্যা নাই, তাড়াহুড়ো করতে যেয়ে ভুল হয়ে গেছে। ইমিগ্রেশনে সমস্যা হলে আমাকে ফোন দিও। দুরুদুরু বক্ষে কম্পিত চরণে প্রতীক্ষা করছি আর ভাবছি আমার কপালে হয়তো আরো নিগ্রহ আছে ।

বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন পার হওয়ার সময় একটু টেনশন করছিলাম। ইমিগ্রেশন পুলিশ পাসপোর্ট, ভিসা পেপার উল্টেপাল্টে দেখল। বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা বন্ধ, আমি সেখানে কিভাবে যাচ্ছি এসব নিয়ে পেশাসংক্রান্ত কিছু প্রশ্ন করলেন। ভিসা পেপারে ইঞ্জিনিয়ার ক্যাটাগরি দেখে একটু হেসে “ও আপনি তো ইঞ্জিনিয়ার , গুড লাক !” বলে আমার পাসপোর্ট বাড়িয়ে দিলেন। অজানাকে জানার আর অচেনাকে চেনার ইচ্ছা, জীবন-জীবিকার তাগিদ এবং সোনালী স্বপ্নের হাতছানিতে হয়ে যাই একজন প্রবাসী।

এর আগে পরে আরও অনেক কাহিনী। সেই কাহিনী আরেকটু লম্বা, সময় নিয়ে আরেকদিন লিখবো !! শুভ প্রবাস জীবন !!
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৩:২১
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×