somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডাবলিনের টুকরো গল্প (২য় পর্ব) :

১৩ ই এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ১:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


শিশির ভেজা শীতের সকাল কিংবা মৃদু রৌদ্রতপ্ত শীতের দুপুর অথবা গৌধুলী রাঙ্গা শান্ত শীতল সন্ধ্যা কার না পছন্দ! শীতকাল বরাবরই আমার প্রিয় কিন্তু একমাস আগের শীতের বিস্মৃতি এখন শুধুই অতীত। বাইরে বেরোনোর সময় হাতমোজা, হুডি, ডাবল প্যান্ট পড়েও নাক দিয়ে টপ টপ করে পানি ঝরতো। মনে হতো মরুভূমির তপ্ত বালিয়াড়ি (দুবাই) পেরিয়ে তুষারের স্তূপে (ডাবলিন) এসে পড়েছি। মোবাইলে কথা বলার সময় হাত বের করলে মনে হতো আঙ্গুল গুলো অবশ হয়ে আসছে , কি অসহ্য শীত, হাত পা যেন জমে আসতো ! অথচ এখন কত সহজেই না নিজেকে মানিয়ে নিয়েছি। সেই একই তাপমাত্রায় এখন আর তেমন শীত অনুভূত হয় না। এতো সহজে শীতের সাথে বনিবনা হয়ে যাবে ভাবিনি । এখন ছয়-সাত ডিগ্রি তাপমাত্রার শীতকে মনে হয় কোমল মাধুর্যময়! বাড়িঘর উষ্ণ রাখার এত সুন্দর ব্যবস্থা যে বাইরে মাইনাস তাপমাত্রা থাকলেও ভিতরে শীত যেন একেবারেই অনুপস্থিত। টিশার্ট পড়ে দিব্যি থাকা যায় ।



আহ!! ইয়াম্মী আইসক্রিম! আইসক্রিম দেখলেই প্রাণ আনচান করে ওঠে। আইসক্রিম মুখে দিলেই যেন রাজ্যের প্রশান্তি। হিমশীতল ঠান্ডায় আইস্ক্রিমের চাইতে মুখরোচক খাবার আমার কাছে দ্বিতীয়টি নেই। আইসক্রিম মুখে পুড়ে এই ঠান্ডায় হাঁটাহাঁটি করার মধ্যে একটা "ফিলগুড" ফিলিংস কাজ করে । বাসা থেকে বেড়োলেই একটু পর পর আইসক্রিম পার্লার, আইসক্রিম খাওয়ার লোভ সামলানো আমার জন্য বেশ কঠিন। আর এই কনকনে ঠাণ্ডায় আইসক্রিম খাওয়ার মজাটা একেবারেই আলাদা। আইসক্রিম প্রেমীরা ইচ্ছেমত খেতে পারেন কারণ আইসক্রিম খেলে মস্তিষ্ক সেরোটোনিন এবং ডোপামাইন হরমোন নিঃসরণ করে। এই দু’টি হরমোনই মুড ভাল রাখার প্রধান উপাদান।





প্রায় ৭০ হাজার বর্গ কিলোমিটারের একটি দ্বীপ রাষ্ট্র আয়ারল্যান্ডে কোনো সাপ নাই। সাপ না থাকার বিষয়ে প্রচলিত মিথ অনেকটা হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার গল্পের মতো। সেইন্ট প্যাট্রিক ছিলেন আয়ারল্যান্ডের সবচেয়ে প্রভাবশালী ধর্ম প্রচারকদের মধ্যে একজন। তিনি ৪০ দিনের জন্য উপবাসী তপস্যা করতে একটি পাহাড়ে উঠতে শুরু করলে সাপে কামড়ে দেয়। তারপর আয়ারল্যান্ড থেকে সব সাপ বিদায় করার ব্রত নেন। সে অনুসারে যেখানে যত সাপ ছিল তার লাঠির ইশারায় সব সাপ একটি চূড়ায় জড়ো করে ফেলে দিয়েছিলেন সাগরে। সেই থেকে আয়ারল্যান্ডে আর কোনো দিন সাপ দেখা যায়নি। অনেকেই সাপ অশুভর প্রতীক মনে করে। প্রতি বছর প্যাট্রিকের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্যাট্রিক দিবস পালন করে আইরিশরা। শহর জুড়ে বের হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। আমার ছবিগুলো প্যাট্রিক দিবসে তোলা।





কিন্তু বিজ্ঞানীরা প্রচলিত মিথের সাথে একদমই একমত নন। বিজ্ঞানীদের মতে আয়ারল্যান্ডে কখনোই কোনো সাপের জীবাশ্ম পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ আদিকাল থেকেই এ অঞ্চলে কোনো সাপ ছিল না। কাছাকাছি থাকা স্থলভূমির সাথে আয়ারল্যান্ডের সর্বনিম্ন দূরত্ব ৭০ কিলোমিটার। কোনো সাপের পক্ষে এতো দূরের বরফ-শীতল পথ সাঁতরে পাড়ি দেওয়া সম্ভব না। কিন্তু আয়ারল্যান্ডের নিকটবর্তী ইংল্যান্ডেই সাপ আছে, এবং ইংল্যান্ডও একটি দ্বীপ-রাষ্ট্র। কাছাকাছি দুই দ্বীপ রাষ্ট্রের একই রকম আবহাওয়া ,পরিবেশ হওয়া সত্ত্বেও একটিতে সাপ আছে, অন্যটিতে নেই কেন? বিজ্ঞানীদের উত্তর হচ্ছে প্রায় ৮০০০ হাজার বছর আগে আয়ারল্যান্ড ইউরোপ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে দ্বীপ রাষ্ট্রে পরিণত হয়। আরও ২,০০০ বছর পরে, অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় ৬,০০০ বছর আগে ইংল্যান্ডের সাথে ইউরোপের সংযোগ পথ সমুদ্রে বিলীন হয়ে ইংল্যান্ডকে দ্বীপ রাষ্ট্রে পরিণত করে। স্বাভাবিকভাবেই বিভিন্ন প্রাণী ইউরোপ থেকে আয়ারল্যান্ডের তুলনায় ইংল্যান্ডে যাওয়ার জন্য আরও ২,০০০ বছর বেশি সময় পেয়েছিল। এই সময়ের মধ্যে সাপ ইংল্যান্ডে স্থায়ী আবাস করে নেয়।





চলবে ......

ডাবলিনের গল্প ১ (ছবি ব্লগ ) :

ছবি: নিজ

সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ১:৪৭
৯টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×