somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লিখতে গিয়ে কথা কোথা থেকে কোথায় যে চলে যায়!

২১ শে এপ্রিল, ২০০৬ ভোর ৫:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

লিখতে তো বসলাম, কিন্তু কি লেখা যায়? আজ ছুটি, পড়াশোনা-র জন্য পাওয়া সময়-টা নষ্ট করে বোধহয় ভালো কাজ করছি না। কিনতু কিছু করার নেই, পড়ায় মন বসার না হলে তো বসবে-ই না। আর নিজের ওপর জোর করতে আমার ভালো লাগে না। অতএব, পড়া - থুড়ি, লেখার চেষ্টা আপাততঃ করছি না। বাইরে ঠা-ঠা রোদ। বৃষ্টি ক'দিন আসব-আসব করে-ও শেষমেষ দিন দুয়েক ভোরবেলা-তে উঁকি দিয়ে-ই চলে গেল। তবে আমরা যারা আশুতোষ শিক্ষা প্রাংগণে ক্লাস করতে যাই, বৃষ্টি-র সংগে তাদের love-and-hate সম্পর্ক। জল-ছপছপ কলেজ স্ট্রীট-এ হেঁটে বেড়াতে প্রাণ বেরিয়ে যায়। ক্লাসের জানালা-র কাঁচ ঘষে গেছে - বয়স তো কম হল না - সেই কাঁচের মধ্যে দিয়ে বাইরে তাকালে মুহূর্তে কলেজ স্ট্রীট দার্জিলিং হয়ে যায় - বহু চেষ্টায়-ও তখন লেকচারে মন বসে না। কিনতু রাস্তায় বেরোলে-ই illusion খানখান - জমা জল, ভিড়ে ভরা ক্ষতবিক্ষত রাস্তা - দশ মিনিট হেঁটে বাস-স্টপে যাওয়া-টাও herculean task বলে মনে হয়। কলকাতা-কে শাপশাপান্ত করতে করতে গায়ে জলকাদা মেখে বাসে যুদ্ধ করে বাড়ী ফিরি। "ভাটের ক্যাম্পাস, এখানে মানুষে পড়তে আসে! কেন যে এখানে ভর্তি হতে গেলাম!" কিন তু এসব বেকার বকবকানি, জানি তো কলকাতা-কে কত ভালবাসি। আর ক্যাম্পাস, সে তো আরো নিজের, আরো আপন। ভাঙাচোরা, অপরিষ্কার - নিজেদের মধ্যে আলোচনা হয় - আলিপুর ক্যাম্পাস কত সুন্দর দেখতে। তারপর নিজেরাই বলি, কিন্তু সে তো কালকের জিনিস, আমাদের মত কি আর দেড়শো বছর পুরনো! ডিপার্টমেন্ট-এর বয়স-ই বলে একশো হতে চলল! অলিতে-গলিতে ভরা ভুলভুলাইয়া সব আমাদের এখানে, আশুতোষ থেকে ফাঁকফোকর দিয়ে দ্্বারভাঙায় রোদ খেতে যেতাম শীতকালে। সে আরেক মজার জায়গা - তার বিশাল উঠোনে দেখি কাপড়জামা শুকোয়, কাদের ছেলে বসে স্লেলটে আঁকিবুকি কাটে। আবার সেখানে-ই অন্য তলায় চলে ক্লাস, নানা অফিসের নানা কাজকর্ম। আমাদের চারতলার ছাদের ওপর অদ্ভুত কায়দায় নেট লাগানো, বৃষ্টির ফোঁটাটুকু-ও আসে না, কিন্তু রোদ-ঝলমল আলো-য় আলো হয়ে থাকে।এসব আর কোথাও দেখিনি। আলিপুরে তো surely নেই! একটু অন্য কথায় যাই। এখানে বেশির ভাগ বন্ধুরাই (আমি কাউকে-ই চিনি না, কিন্তু বন্ধু-ই বললাম) বাংলাদেশী। বাংলাদেশ আমার না-দেখা দেশ। হয়তো না-দেখা-ই থেকে যাবে। দেশ ভাগের কিছুদিন পর ঠাকুরদা ঠাকুমা আর ছোটো ছেলেমেয়েদের নিয়ে চলে আসেন এখানে। পড়ে থাকে পৈত্রিক ভিটে-মাটি আর অনেক স্মৃতি। শুনেছি গ্রামের নাম ছিল বজ্রযোগিনী - অতীশ দীপঙ্করের জন্মস্থল। আমাদের বাড়ী নামকরা ছিল নাকি কবিরাজ-দের বাড়ী বলে। ঠাকুরদা অবশ্য শিক্ষক ছিলেন, আর এখনো বাড়ীতে প্রায় সবাই তাই। এখনো বড়দের কাছে পুরনো গল্প শুনি । দেশ কোথায় শুধোলে বলি ঢাকা-বিক্রমপুর। আমি আরো ফলাও করে বলি, গ্রাম ছিল বজ্রযোগিনী । এক জ্যেঠিমা বরিশাল, এক জামাইবাবু-র দেশ যশোর। বড়দের অনেকে দেশের ভাষায় কথা বলেন। আমাদের জেনারেশনের সবার জন্ম এ-দেশে, সবাই মনেপ্রাণে ভারতীয়। কিন্তু শেকড় যেন রয়ে গেছে বাংলাদেশের মাটিতে। আমরা দু'দেশের - কিন্তুএকটা দেশকে চোখের দেখা-ও দেখা হয়নি। ভেবেছি একবার গিয়ে ঘুরে আসব - কি আছে, কারা রয়ে গেছেন। হয়তো যাওয়া হবে, হয়তো হবে না। কে জানে।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে এপ্রিল, ২০০৬ ভোর ৫:৩৯
১৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৌলবাদ: ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যর্থ প্রযুক্তি

লিখেছেন মহিউদ্দিন হায়দার, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫১




মজার বিষয়—

আজকের মৌলবাদীরা রোকেয়া বেগমকে মুরতাদ ঘোষণা করে বুক ফুলিয়ে হাঁটে, অথচ নিজেদের অস্তিত্ব টিকেই আছে যাদের ঘৃণা করে— সেই “কাফেরদের” বিজ্ঞান আর প্রযুক্তিতে। ইতিহাস পড়লে এদের বুকফুলা হাওয়া বের... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতী এখন পুরোপুরিভাবে নেতৃত্বহীন ও বিশৃংখল।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩



শেরে বাংলার নিজস্ব দল ছিলো, কৃষক প্রজা পার্টি; তিনি সেই দলের নেতা ছিলেন। একই সময়ে, তিনি পুরো বাংগালী জাতির নেতা ছিলেন, সব দলের মানুষ উনাকে সন্মান করতেন। মওলানাও জাতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাময়িক পোস্ট

লিখেছেন আরোগ্য, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৬



ওসমান হাদী অন্যতম জুলাই যোদ্ধা, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র, স্পষ্টবাদী কণ্ঠ, প্রতিবাদী চেতনা লালনকারী, ঢাকা ৮ নং আসনের নির্বাচন প্রার্থী আজ জুমুআর নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বের হওয়ার পর গুলিবিদ্ধ হয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে গুলি করলো কে?

লিখেছেন নতুন নকিব, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২৬

হাদিকে গুলি করলো কে?

ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজপথের অকুতোভয় লড়াকু সৈনিক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জীবনের চেয়ে তরকারিতে আলুর সংখ্যা গণনা বেশি জরুরি !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:১৭


বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশবাসী একটা নতুন শব্দ শিখেছে: রুট ভেজিটেবল ডিপ্লোম্যাসি। জুলাই আন্দোলনের পর যখন সবাই ভাবছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×