দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-কলকারখানা ইত্যাদির গুরুত্ব অপরিহার্য। এই প্রতিষ্ঠানগুলো অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থানের উৎস। এগুলো বন্ধ হয়ে গেলে হাজার হাজার মানুষ বেকার হয়ে পড়বে, যা অর্থনীতির উপর মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করবে।
এস. আলম গ্রুপ, বেক্সিমকো-র মতো অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে যাদের মালিকপক্ষ বিভিন্ন কারণে বিতর্কিত। এই প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দেওয়া হলে মালিকপক্ষের তেমন ক্ষতি হবে না, কারণ তারা সম্ভবত যথেষ্ট অর্থ উপার্জন করে বিদেশে পাচার করেছেন। কিন্তু সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে সেই সকল সাধারণ মানুষ, যারা এই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে জীবিকা নির্বাহ করে। প্রতিষ্ঠান বন্ধ হলে তারা বেকার হয়ে পড়বে এবং তাদের পরিবার অসহায় অবস্থায় পড়বে।
অর্থনীতির উপর প্রভাব:
বেকারত্ব বৃদ্ধি: প্রতিষ্ঠান বন্ধ হলে ব্যাপক হারে বেকারত্ব বাড়বে, যা সমাজের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
উৎপাদন হ্রাস: শিল্প-কলকারখানা বন্ধ থাকলে দেশের উৎপাদন ক্ষমতা কমে যাবে, যার ফলে জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) হ্রাস পাবে।
বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব: বিনিয়োগকারীরা এমন পরিস্থিতিতে বিনিয়োগ করতে দ্বিধা বোধ করবে, যা অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর।
সামাজিক অস্থিরতা: বেকারত্ব এবং অর্থনৈতিক কষ্টের কারণে সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে।
করণীয়:
এই পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ না করে সচল রাখার চেষ্টা করা উচিত। প্রয়োজনে বিতর্কিত মালিকানার পরিবর্তন করে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা যেতে পারে। সরকারের উচিত এমন একটি ব্যবস্থা তৈরি করা, যেখানে প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের স্বার্থ রক্ষা করে মালিকানার পরিবর্তন করা যায়।
বিশ্লেষণ:
বিতর্কিত মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে একটি সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন। একদিকে, অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। অন্যদিকে, প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের জীবিকা এবং দেশের অর্থনীতির উপর এর প্রভাব বিবেচনা করা উচিত।
সরকার, শিল্প মালিক, শ্রমিক প্রতিনিধি এবং নাগরিক সমাজের সমন্বয়ে একটি ত্রিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে। এমন একটি সমাধান খোঁজা উচিত, যা কর্মীদের স্বার্থ রক্ষা করবে এবং দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখবে।
সম্ভাব্য সমাধান:
মালিকানা পরিবর্তন: আদালতের মাধ্যমে বিতর্কিত মালিকানা পরিবর্তন করে নতুন ও স্বচ্ছ পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা যেতে পারে।
সরকারের তত্ত্বাবধান: কিছু সময়ের জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরকারের তত্ত্বাবধানে নিয়ে আসা যেতে পারে, যাতে প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকে।
শ্রমিক-বান্ধব নীতি: শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা এবং তাদের বকেয়া পরিশোধের ব্যবস্থা করতে হবে।
এই সমস্যাটির একটি স্থায়ী সমাধান খোঁজা অত্যন্ত জরুরি। শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিলেই সমস্যার সমাধান হবে না, বরং এতে আরও অনেক জটিলতা সৃষ্টি হবে। তাই, একটি সুচিন্তিত ও বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, যা দেশের অর্থনীতি ও সাধারণ মানুষের জন্য কল্যাণকর হবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ৯:৩৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



