বিঃ দ্রঃ- খবরটা পুরানো হলেও আমার হৃদয়কে দংশন করছে বারংবার, তাইতো এ লেখা।
সংগ্রামকে কোলে নিয়ে ৩২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিলেন বিচিত্রা তিরকী। "সংগ্রাম" শব্দটির আভিধানিক অর্থ আমরা সকলেই জানি, আমরা সে অর্থ নিয়ে কথা না বাড়িয়ে বরং বলি, কোলের শিশু সংগ্রামকে নিয়ে মা বিচিত্রার এও এক অসাধারন সংগ্রাম। আদিবাসীদের জমিজমা নানাভাবে বেহাত হয়ে গেছে, যাচ্ছে। প্রভারশালী মানুষ ভয় দেখিয়ে হামলা-নির্যাতন করে, অগ্নিসংযোগ করে আদিবাসীদের কাছ থেকে জমি জমা ছিনিয়ে নিয়েছে, নিচ্ছে। তারই প্রতিবাদে পথে নেমেছিলেন বিচিত্রা।
প্রথম আলোর বিশাল বাংলায় ছাপা খবরটি ছাপা হয়েছিল ২৯ জুলাই। অনেকেই তা পড়েছেন। খবরের সঙ্গে যে ছোট্র রঙিন ছবিটা বেরিয়েছে সেটিতে আটকে গেল চোখ। আদিবাসি মা ৩২ কিলোমিটারের প্রতিবাদী পদব্রজ শেষে মহাদেবপুর বাসস্ট্যান্ড মোড়ে এসে দুধের শিশুটির মুখে যখন পানি তুলে দিচ্ছিলেন, তখনই প্রথমআলোর চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধির ক্যামেরায় তা ধরা পড়ে। তখন সামনে সমাবেশ সে দিকে সবার কান, বাচা মরার সংগ্রামে সামিল মা বিচিত্রাও। তবে সংগ্রাম নামের শিশুটির বোঝার বয়স হয়নি, কেন তার মা তাকে কোলে নিয়ে নওগাঁর পোরশ থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মহাদেবপুর পর্যন্ত হেঁটে এসেছেন। ও জানে না জমি বেদখল হলে কি হয়, কারা জমি দখল করে, কাদের পেশিশক্তির কাছে মনুষ্যত্ব পদদলিত হয়, দেওয়ালে পিঠ ঠেকা কাকে বলে।
খুব ভাল হতো,যদি সংগ্রাম বড় হওয়ার আগেই আদিবাসীদের জমিজমা বসতভিটা-সংক্রান্ত সমস্যাগুলি মিটে যেত। ভালো হতো যদি দখলদারদের থাবা উপেক্ষা করে ওরা বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারত নিজেরই ঘরে, নিজেরই জমিতে ফলাতে পারত ফসল। বিচিত্রা তিরকীর ২৭ বিঘা জমি উদ্ধার করা গেলে ভবিষ্যতের দিনগুলো ওরা কাটাতে পারতো অবলিলায়।
তেমনি যদি অন্য আদিবাসিরাও ফিরে পেত তাদের দখল হয়ে যাওয়া সম্পদ, সেটা ঘটা দরকার। নইলে ওই কোলের শিশু সংগ্রামকেও নামতে হবে অধিকার আদায়ের সংগ্রাম।
এখানে আমার ছোট্র একটি প্রশ্ন ঃ-দুধের ছেলেকে বুকে তুলে কখন একজন মা ৩২ কিলোমিটার হেঁটে প্রতিবাদ জানাতে পারেন, কখন মা তার নাম রাখেন সংগ্রাম। তা কি আমাদের ভাবায়? শিশু সংগ্রাম যেন বড় হয়ে দেখে তার আর সংগ্রামের প্রয়োজন নেই।
প্রিয় সুধি সমাজ ও সু-চিন্তিত মন্তব্য কারি ব্লগার ভাইয়েরা- একটিবারের জন্য হলেও ভেবে দেখুন তো কোথায় গেল আমাদের ত্রিশ লক্ষ শহীদের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা, যে স্বাধীনতার কথা বলতে বলতে আমরা জ্বিব্হার লালা শুকিয়ে ঠোটের দু পাশে থু থু জমিয়ে ফেলি। আসলে বলুন তো, আমরা কি হতে পেরেছি হিংস্র জানোয়ার অত্যাচারি জুলুম ও পেশিশক্তির শৃংঙ্খল থেকে মুক্ত ? যদি তাই না হয় তাহলে উহাকে তো স্বাধীনতা বলে না।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



