somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শনিবার সন্ধ্যা (যে জীবনের শালিকের )

২৮ শে মে, ২০১৯ রাত ৮:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


প্রথম পর্ব
দ্বিতীয় পর্ব
তৃতীয় পর্ব
পঞ্চম পর্ব


এটা একটি অমিথ্যা গল্প। জীবিত অথবা মৃত কারো সাথে মিলে গেলে লেখক স্বয়ং দায়ী। উপযুক্ত প্রমান দিয়ে ক্ষতি পূরন আদায় করতে পারেন !

শহুরে রাত প্রলম্বিত হতে হতে একসময় সকাল হয়। কিন্তু কারো কারো বুকের ভেতর যে রাত থেকে সে রাত কখনো সকালের মুখ দেখে না। সে রাত শুধু দ্বীর্ঘ থেকে দ্বীর্ঘায়িত হয়। বুকের ভেতর যে রাত থাকে সেখানে হায়েনারা ওৎ পেতে বসে থাকে তাদের ধারালো থাবা নিয়ে। সেই হায়েনাদের কথা পৃথীবি জানতে না পারলেও জোহরা জানে খুব ভালো ভাবে। তাদের ছবি তার চোখের ঘুম কেড়ে নেই নিমিষে । চোখ বুজলেই মাথার মধ্যে তাদের বিচরন শুরু হয়। জোহরা ঘুমাতে পারে না।

ফোন বাজে , একবার, দুইবার , তিনবার। সে ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকে , ফোন ধরে না। অর্ণব ফোন দিচ্ছে। এই জটিলতায় ভরা জীবনের সাথে অর্ণবের কি পরিচয় করিয়ে দিবে নাকি আরো দশ বছর অথবা সারা জীবনের জন্য হারিয়ে যাবে । জোহরা ভাবতে থাকে।
ফোন বাজে , ফোন বাজে, ফোন বাজে। জোহরা ফোন ধরে। ওপাশ থেকে অর্ণবের কন্ঠে হাহাকার সে বুঝতে পারে। ঘুমিয়ে পড়েছিলে ? খাইছো? শরীর ভালো তো? একসাথে অনেকগুলো প্রশ্ন করে ফেলে অর্ণব। নিকষ অন্ধকারের দিকে তাকিয়ে জোহরা শুধু বলে , অর্ণব, আমার খুব হ্যাপী লাগছে। বছরের শেষটা যে এত ভালো কাটবে আমি ভাবি নাই। অর্ণব খুশিতে চনমন করে ওঠে। সে বলে দাঁড়াও তোমাকে একটা গান শোনায়। জোহরা অন্ধকারে ট্রাফিক পুলিশের মত হাত উচিয়ে বলে , থামো, তোমার যে কন্ঠ , গান গাওয়া শুরু করলে আতস খান লেনের সব রোড লাইট বিরহে ফিউজ হয়ে যাবে ! অর্ণব বলে , গান কেউ কন্ঠ দিয়ে গায় না, মন দিয়ে গায়। আইছে আমার মন বিশারদ এতো দিন পরে ! জোহরা খিল খিল করে হাসে। এই হাসি অর্ণবের কাছে পৃথীবির সবচেয়ে মিষ্টি , আকাংখিত শব্দ। অর্ণব বলে , আরো হাসো। জোহরা আড়মোড় ভাংতে ভাংতে আজকের জন্য এইটুকুন হাসি , কালকে অফিস আছে , ঘুমায়।

জোহরা ফোন রাখে , কিন্তু ঘুমায় না। অর্ণব জানেনা এই দশ বছরে তার জীবনে কি কি ঘটেছে। যার কারনে সে এক উচ্ছল তরুনী থেকে নিস্পৃহ পাথর হয়েছে। অর্ণব কে বলতে হবে তুমি যার জন্য ঢেউ গোনার ধৈর্য নিয়ে অপেক্ষা করেছো। তোমার কাছে যে পৃথীবির সবচেয়ে কাংখিত নারী, সে অন্য কারো বিরহে ব্যাকুল হয়েছে। সে তোমার কথা ভাবেনি। অর্ণব কে বলতে হবে , তুমি ভুল মানুষের জন্য এত দিন অপেক্ষা করেছো। আর সেই ভুল মানুষ আরেকটা ভুল মানুষের বিরহে পুড়েছে। কি যাতনায় আমি পাথর হয়েছি , কি কারনে সহস্র ভালোবাসার কথা শুনলেও আমার মন তা আর বিশ্বাস করতে পারে না। কি কারনে প্রতিটা দিনের শেষে মনে হয়, আজকে মরে গেলে ভালো হতো। সব অর্ণব কে বলবো।

কাক ডাকা ভোর আসে শহুরে রাস্তায়,আকাশে। সারা রাত আধো ঘুমে , আধা জাগরনে কেটেছে জোহরার। ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখলো সাত টা বেজে গেছে। চোখে কোন রকম কাজল নিয়ে অফিসের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হলো। আজিমপুর বাস স্ট্যান্ডের ওপর পাশে যে মসজিদ আছে তার সামনে দৌড়ে এসে দাড়ালো। বিকাশ কিংবা ভি আই পি , যে কোন একটা পেলেই উঠে পড়বে। কিছুক্ষনের মধ্যে বাস আসলো। বাসের উঠতে যাওয়ার সময় টের পেল ,পেছনে মামুন। জোহরা যেখানে বসলো, তার সামনে সিটে এসে সে বসলো। জোহরা কিছুটা ভয় আর বিরক্তি নিয়ে বনানীতে আসার অপেক্ষা করতে লাগলো। সেই সময় অর্ণব টেক্সট করলো। শনিবার সন্ধ্যায় দেখা করতে পারবা! জোহরা লিখলো, এফ এফ সি, ধানমন্ডি।অর্ণব লিখলো, আমি থাকি তোমার প্রহরী, তোমাকে যতক্ষন দেখি তার চেয়ে বেশি দেখি যখন দেখিনা। জানালা দিয়ে আসা মৃদু বাতাস জোহরারা চুল উড়িয়ে দিচ্ছে, জোহরা ঠোটের কোনে্র হাসির রেখা মিলেয়ে দিয়ে মনে মনে বলল, কবি !
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মে, ২০১৯ রাত ১০:১৩
৭টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×