somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শনিবার সন্ধ্যা (তোমাকে পারিনি ছুতে আমার তোমাকে)

৩১ শে মে, ২০১৯ রাত ১২:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


প্রথম পর্ব
দ্বিতীয় পর্ব
তৃতীয় পর্ব
চতুর্থ পর্ব
পঞ্চম পর্ব

এটা একটি অমিথ্যা গল্প। জীবিত অথবা মৃত কারো সাথে মিলে গেলে লেখক স্বয়ং দায়ী। উপযুক্ত প্রমান দিয়ে ক্ষতি পূরন আদায় করতে পারেন !




কি মনে করে অর্ণব বলল , থাক, নাম বলতে হবে না। নামে কিছুই যায় আসে না। ঠান্ডা কফিতে একটা অনিচ্ছাকৃত চুমুক দিয়ে অর্ণব বলল, তুমি কি এখনো ওকে ভালোবাসো। জোহরা পাশের টেবিলের চশমা পড়া এক ছেলেকে দেখিয়ে বলল, আমার কাছে সে এখন অন্য সব মানুষ। ওর নাম নির্ঝর । তারপর ? চোখে একরাশ কৌতুহল নিয়ে অর্ণব প্রশ্ন করল। তারপর আর পর নেই, নেই কোন ঠিকানা। দুই হাত নাড়িয়ে হাসতে হাসতে জোহরা বলল। এই হাসি দেখে অর্ণবের মনে হলো , এই মেয়েটা একটু আগে জীবনের রুড়তম ঘটনা বলেছে তা কেঊ বিশ্বাস করবে না।
তারপর কি হলো , বলো । আমি শুনতে চাই। জোহরা বলল, তারচেয়ে তুমি একটা কাজ করো , কোন এফ এম রেডিওর সাথে যোগাযোগ করো , আমি আমার গল্প বলবো , টাকাও পাবো। তুমিও খুসি , আমিও খুসি, দেশবাসি খুসি । উইন উইন সিচুয়েশন। অর্ণব বলল, মনে করো এই রেস্টুরেন্টের নাম এফ এফ সি না এফ এম। আমি তোমার একমাত্র শ্রোতা। আর টাকার বদলে বার্গার খাওয়াচ্ছি। জোহরা থাম্বস আপ করে বলল , ডান।

মামুন আমার কাজিন। আমি যখন নির্ঝরকে ভোলার জন্য নানা ফন্দি ফিকির করছি তখন মামুন আমাকে সময় দেয়া শুরু করলো। আমি মামুনের বাইকে চড়ে ভার্সিটি যেতাম । নির্ঝরকে বোঝাতে চাইতাম , ওর জন্য আমার কিছুই যায় আসে না। আমি এখন অন্য স্বপ্নে ব্যাস্ত। আসলে এগুলো সব শো অফ ছিল। আমি চাইতাম নির্ঝর জ্বলুক আমার এইগুলা দেখে । ও জ্বলতো। নানাভাবে ফিরে আসতে চাইতো । কিন্তু আমি চাইতাম না ও কোনভাবে ফিরে আসুক আবার ওকে ভুলতেও পারতাম না। এমন সময় মামুন আমার বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব পাঠাই । সে নাকি আমাকে ভালোবেসে ফেলেছে । আমাকে বিয়ে করতে চাই। আমি কোনভাবেই রাজি হচ্ছিলাম না। বাড়ি থেকে আমাকে নানা ভাবে বোঝানো শুরু করলো। এমন সময় আমার বান্ধবী ফোন করে বলল, নির্ঝর নাকি বলেছে, আমি ছাড়া কোন পুরুষ জোহরা এ জীবনে কল্পনা করতে পারবে না। অথচ ও একটা মেয়েকে বিয়ে করে ফেলেছে। এই কথা শুনে বাড়িতে বলে দিলাম, আমি বিয়েতে রাজী।

ধুমধাম করে আমার বিয়ে হলো। বিয়ের পর বুঝলাম আসলেই আমি নির্ঝরকে বাদে কোন পুরুষকে মেনে নিতে পারছি না। মামুন নির্ঝরের ব্যাপারটা জানতো। ও হয়তোবা বুঝতে পেরেছিল যে আমি ওকে মেনে নিতে পারছি না। আমার প্রতি কেমন যেন উদাসিন হয়ে গেল। আমিও খুব একটা পাত্তা দিতাম না। সে সারাদিন কোথায় কোথায় ঘুরে এসে সারা রাত বসে বসে টিভি দেখতো। আমি খাইছি কিনা, ভালো আছি কিনা। এসবে কোন মাথা ব্যাথা ছিল না। এমন করতে করতে দিনগুলো বিষাদময় হয়ে উঠতে থাকে। একবার রোজার দিন । সন্ধার সময় আমি ভাতের মাড় ফেলতে গিয়ে , সব টুকু মাড় আমার পায়ের উপর পড়লো। আমি চিৎকার করে পড়ে গেলাম। মামুন ড্রইংরুমে টিভি দেখছিলো। সে একবার দেখতেও আসলো না। বাড়ির অন্যসব মানুষ এসে আমাকে হসপিটালে নিয়ে গেলো। সে একবার আমাকে হসপিটালেও দেখতেও আসে নাই।
আমি শ্বশুর বাড়ি ফিরে আসলাম । সেই দিনেই সে আমাকে জোর করতে লাগলো বিছানায় যাওয়ার জন্য। আমি জাস্ট তাকে বললাম, আই এম নট ইউর ড্যাম স্লেভ। আমি নিজের বাড়িতে ফিরে আসলাম। এবং মামুন কে ডিভোর্স দিলাম। মামুন এখন চাই, আমি যেন তার কাছে ফিরে যায়। সে প্রায় বাসে উঠে আজিমপুর থেকে বনানী পর্যন্ত আসে। আমার ভয় হয় , কোনদিন আমার অফিসে যেয়ে একটা ঝামেলা বাধাবে। নটে গাছটা মুড়ালো , আমার গল্প ফুরালো। এইবার জোহরা যে হাসি দিলো তা দেখে অর্ণবের মনে হলো, দুনিয়ার সমস্ত দুঃখ গাথা আড়াল করার জন্য মানুষের কি আপ্রান চেষ্টা !!

অর্ণবের কেন জানি মনে হচ্ছে সে যদি জোহরাকে ছুয়ে দেই তাহলে তার সমস্ত কষ্ট ম্যাজিকের মতো দূর হয়ে যাবে। অর্ণব সে কথা জোহরাকে বলতে পারছে না।তার লজ্জা লাগছে। সে অতি সংকোচে বলে তোমার কোন পা পুড়ে গিয়েছিলো, দেখাও।








সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মে, ২০১৯ রাত ১২:২৪
৯টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×