somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোরআন শরীফ কি ৭১ সালে ছিল না?

১৭ ই জুন, ২০১২ সকাল ১১:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কোরআন শরীফ কি ৭১ সালে ছিল না? দৈনিক সংগ্রামের জন্ম ৭১ এর আগে নয় কি? কোথায় ছিল তখন তাদের বিবেক? এখন যেটা ওরা দেখাচ্ছে সেটা আবেগ নয়, শুধু ওদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হওয়ার প্রতিবাদ। আর আমরা তাদের সুরেই কোরাস গাইছি “রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দাও, মুসলমান বাঁচাও।”

৭১ এ যখন এদেশের ৩০ লক্ষ মানুষ কে যে কচুকাঁটা করে হত্যা করা হয়েছে, আমাদের বাপ-দাদাদের লুঙ্গি খুলে ধর্ম পরীক্ষা করা হয়েছে, আবার পাক্কা মুসলিম নয় বলে মুসলমানী করে থাকা স্বত্তেও হত্যা করেছে, আমাদের মা-বোনদের গণিমতের মাল ভেবে ভোগ করেছে, শুধু তাই নই, ছুরি দিয়ে তাদের শরীর কেঁটেছে, ধর্ষণ করার পর হত্যা ও করেছে। ঘর-বাঁড়ী জ্বালিয়ে দিয়েছে। সোনার বাংলা পুঁড়ে খান খান করেছে, তখন কেন এইসব “সংগ্রাম” পত্রিকা চিৎকার করে বলেনি মানুষ বাঁচাও, মুসলমান বাঁচাও। তখন কেন ওরা, ওদের সমর্থকেরা গায়নি “মানুষ মানুষের জন্য”? কেন?

আর আজ ওরাই এমনভাবে ওদের পত্রিকায় প্রকাশ করছে যে, পৃথিবীর নিকৃষ্টতম হত্যাকাণ্ড ওখানে ঘটে যাচ্ছে। কিছুদিন আগে আমি ঘোষণা দিয়েছিলাম যে, রাজাকারদের পত্রিকা আমি আর পড়বোনা। কিন্তু অনলাইনে কিছু লিঙ্ক দেখে না পড়ে আর থাকতে পারলাম না। গত কয়েকদিনের পত্রিকা পড়ে ফেললাম রোহিঙ্গাদের নিয়ে।

আরে, গত ৯ তারিখ এই পত্রিকা যারা চালায় তাদের কে মূল কারিগর হিসেবে অভিহিত করে আমাদের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে নিয়ে ওদের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় তিরস্কার করেছে। এসব নিয়ে ঐসব “সংগ্রাম” পত্রিকা এবং তাদের সহযোগীরা কিছু বলছেনা। শুধু মানবতার গান শোনাচ্ছে। মানবতা ওদের মাঝে নেই, যদি থাকতো, তবে ৭১ এ ওদের আসল চেহারা প্রকাশ পেত না। একাত্তুরে ওদের কাছে আমাদের ধর্মের পরীক্ষা দিয়ে পাশ করতে হতো না। বাবা’র সামনে মেয়েকে ধর্ষণ, স্বামীর সামনে স্ত্রীকে ধর্ষণ, ছেলের সামনে মা কে ধর্ষণ কারা করেছে? ওরা করেছে, ওদের জন্মদাতা পাকিস্তানী আর্মিরা করেছে। এখন ওরা গাইছে মানবতার গান।

এই সমস্যার শুরু কোথায় এবং কেন রোহিঙ্গাদের এই দেশে আমরা আর আশ্রয় দিতে চাই না সেটা গত দু’টি পোষ্টে আমি লিখেছি এবং অনেকের সাড়া ও পেয়েছি। তাই ঐ বিষয় নিয়ে আমি আর কথা বলতে চাচ্ছিনা। আমি শুধু চাচ্ছি যে, এই সমস্যার সমাধান কূটনৈতিকভাবেই হচ্ছে। হবে। কিন্তু, ঐসব পত্রিকা এবং তার পাঠকদের বিভিন্ন অপপ্রচারে আপনারা বিভ্রান্ত হচ্ছেন যেটা উচিৎ না। আগে ভাবুন, এসব অপপ্রচার কারা ছঁড়াচ্ছে যে, ঐ দেশে হাজার হাজার মানুষ কে হত্যা করা হয়েছে? পৃথিবীর কোন পত্রিকা এসব প্রচার করছে?

ওরা নিজেরাই আসাম টাইমস এবং সিংহলিজ টাইমস প্রচার করছে এবং সেসবের মাধ্যমে অপপ্রচার করছে যে, হাজার হাজার মানুষ কে ইতিমধ্য হত্যা করা হয়েছে। এসব বিশ্বাস করার আগে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মিডিয়ার নিউজগুলো একটু দেখুন ঐ দেশে কতোজন কে হত্যা করা হয়েছে।

আর ওরা কেন চায় এই দেশে রোহিঙ্গারা আসুক? কারণ, ওদের ফান্ডে এখন টাকার টান পরেছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাধাগ্রস্ত করার জন্য ওদের অনেক খরচ হচ্ছে, লবিষ্ট নিয়োগ করেছে ওরা। তাই এখন যদি রোহিঙ্গাদের আবার আনতে পারে, তবে ওদের অনেক লাভ। কারণ অনেক সহায়তা পাবে ওরা বিভিন্ন সংগঠনের নাম করে। ার ওদের জঙ্গীপ্রশিক্ষণ কাজ ও বাঁধাগ্রস্ত হবে না। রাবেতা, ফাউন্ডেশন, মুসলিম এইড এসবের মাধ্যমেই ওরা দেশবিরোধী কাজ করে যাচ্ছে।

এসব কারণেই দৈনিক সংগ্রামের এতো মায়াকান্না। আর আমাদের মায়াকান্না তাদের জন্য, যারা এই দেশে অর্ধাহারে আছে, যারা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ঘরবাড়িহীন, সহায় সম্বলহীন অবস্থায় আছে, যাদের পড়ার মতো বস্ত্র নেই, চিকিৎসার টাকা নেই, এমন কি খাওয়ার মতো বিশুদ্ধ পানি নেই তাদের নিয়ে একটু ভাবুন। আপনারা সংগ্রামের পাঠকদের লেখা পরে মায়াকান্না বন্ধ করুন। আপনারা রোহিঙ্গাদের পক্ষে প্রতিবাদ করুন, হামলাকারীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন, রোহিঙ্গাদের মুক্তির জন্য জনমত গড়ে তুলুন, ওদের কে সাহায্য করুন আর্থিকভাবে (যাদের সামর্থ্য আছে), বিদেশে যারা আছেন তারা বিক্ষোভ করুন, আন্তর্জাতিক জনমত গড়ে তুলুন রোহিঙ্গাদের পক্ষে যেন সেখানে জাতিসংঘ সেনা পাঠায়। সেসব না করে সবাই এই দেশে তিক্ত অতীত কে আবারো ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করছি। সেটা মোটে ও উচিৎ না।

এখন ওরা কোরআন হাদিসের আলোকে বর্ণনা করে চলেছেন মুসলমানদের সাহায্য করার জন্য। আমার দেশের অর্ধাহারে যেসব মুসলমান আছে, যে সম মুসলমান মা-বোন বস্ত্রের অভাবে তাদের শরীর ঢাঁকতে পারছেনা ওদের জন্য তো এই “সংগ্রাম”” পত্রিকা এবং তার সমর্থক দলের কোন ভাবনা নেই। একজন পাঠক বলেছেন যে, আগে নিজের ঘরে আলো জ্বালো, পরে অন্যের ঘরে বা মসজিদে। আরেকজন পাঠক বলেছেন যে, মা’র চেয়ে মাসীর দরদ বেশী হলে তখন মাসি নাকি ডাইনি হয়ে যায়। কেন এসব কথা? ঐ দেশের সরকার ই তো কিছু বলছে না। ঐ দেশের নোবেল বিজয়ী নেত্রী দেশের অশান্তির কথা ভুলে নোবেলের বকেয়া শান্তি বক্তৃতা দেয়ার জন্য বিদেশ সফরে আছেন। আর আমাদের এখানে “সংগ্রামী”রা পারলে দেশে হরতাল ডেকে বসে। হায়রে বিভ্রান্ত জনতা!

ধিক্কার ওদের … আর ধিক্কার আপনাদের, আপনারা যারা সব বুঝে ও না বুঝার ভান করে মানবতা মানবতা বলে চিৎকার করছেন। আর আমাকে আমি ধিক্কার দিচ্ছি এই জন্য যে, আমি নিজের দেশের মানুষের জন্য কিছু করতে পারছিনা।
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৬

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট



পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:

وَجَعَلۡنَا... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×