somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বঙ্গবন্ধু কি এমন আওয়ামী লীগ চেয়েছিলেন ?

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মেহেদী তারেক ও সিহাব চৌধুরীঃ
অসাধারণ ছোট্ট একটা ট্রিপ শেষে কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকা ফিরছি ট্রেনে করে। ময়মনসিংহ এর গফরগাও থেকে সহজে আসা যাবে তাই ২৪০ টাকার টিকেট ৬০০ টাকা দিয়ে কিনে দুইজন উঠে পরি আন্তঃ নগর ট্রেনে। ব্রহ্মপুত্র নামের এই ট্রেনটি গফরগাও থেকে সরাসরি এয়ারপোর্ট স্টেশনে এসে থামার কথা। কিন্তু ট্রেন চলার ঘন্টা খানেক পর হঠাৎ থেমে যায়। আমরা ভাবি হয়তো ক্রসিং তাই ট্রেন থেমেছে, কিন্তু সময় চলে যাচ্ছে ট্রেন আর সামনে এগোচ্ছে না। আমাদের মত আশেপাশের যাত্রীরাও কারন খুজতে ব্যস্ত। এরই মধ্যে যাই ট্রেনের পরিচালকের সাথে কথা বলতে। উনি জানালেন, আজকে জাতীয় এক্যফ্রন্টের সমাবেশ চলছে ঢাকা সোহরাওয়ারদী উদ্যানে তাই আওয়ামীলীগের লোকজন সব ট্রেন বন্ধ করে দিয়েছে। অবাক হলাম, এর আগে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সমাবেশ করলেও গঠনের একমাস পর এই প্রথম ঢাকায় সমাবেশ করার অনুমতি পেয়েছে এক্যফ্রন্ট। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ সমাবেশের অনুমতি দিয়ে আবার পথ আটকে দিচ্ছে! যাইহোক, রাজনৈতিক মার প্যাচ বোঝা আমাদের কর্ম নয়। সেই সাথে, ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জ স্টেশনে যাওয়ার পর কিংবা ফেরার পথে এয়ারপোর্ট ষ্টেশন থেকে টিকেট চেকিং ছাড়াই বের হবার গল্পও নয়, ভিন্ন একটা গল্প বলতে যাচ্ছি।

কিছুক্ষন পর পর ট্রেন চলে, আবার থামে, আবার চলে, এভাবেই চলছে আমাদের গফরগাঁও থেকে ঢাকা যাত্রা।
চলতে চলতে এরই মধ্যে গাজীপুরের শ্রীপুরের কোন একটা জায়গায় এসে ট্রেনের চাকা আবার বন্ধ। একদিকে অপেক্ষা আর অন্যদিকে ভ্যাপসা গরমে জীবন যখন হাঁসফাঁস করছিল তখন ট্রেন থেকে নামলাম চা-বিস্কিট এর খোঁজে। অল্প দূরত্বে পেয়েও গেলাম, তবে ফেরার পথে চোখে পড়ল দুজন আসামিকে হাতে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ৮-১০ জন পুলিশ। আসামীরা হাসছে, আর সে দিকে হা করে তাকিয়ে আছে ট্রেনের বেশিরভাগ যাত্রী। যাই হোক মূল বিষয়টা ঘটল তখন যখন আমরা ট্রেনে ফিরে দেখলাম আমাদের সিটে দুইজন অতি ভদ্র লোক বসে আছেন। তারপর যা হয়, যথারীতি তাদের জানানো হল সিট দুটো আমাদের। কিন্তু তাদের মধ্যে একজন,আমাদের কথার ধার না ধরে এক নিঃশ্বাসে জানান দিল যে ট্রেনে দুইজনার আসনে তিনজন চারজন বসাই যেতে পারে। এটা অতি স্বাভাবিক বিষয়। আর তার হাতে থাকা একটি চিঠি আমাদেরকে দেখিয়ে বলতে লাগলো "আমরা সরকার দলীয় লোক, আওয়ামী লীগ করি, দলের কাজে যাচ্ছি। এটা বাংলাদেশ ইউরোপ না। আপনাদের সমস্যা মনে হলে টিটিকে ডাক দেন।" তার এই কথাগুলো বলার মধ্যে এক ধরনের কতৃত্ববাদ আর ক্ষমতার দাপট। কথাগুলো শুনে কিছুটা হকচকিয়ে গেলাম। ট্রেনের সীটের উপর আওয়ামী লীগের এমন বিচিত্র অধিকারের কথা তো আমাদের জানা ছিল না। অবশেষে সামনের সীটে থাকা দুইজন অবসরপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর অফিসার আমাদের সহায়তায় এগিয়ে এলেন, আমরা আমাদের সীট বুঝে পেলাম। কিন্তু কথা হচ্ছে এই সামান্য বিষয়ে দলীয় প্রভাব দেখানো আসলেই কি মার্জনীয়? ও হ্যাঁ, মহাশয় এর বয়স কিন্তু ছিল ৫০ ঊর্ধ্বো। আওয়ামী লীগ যার হাতে গড়া সেই বঙ্গবন্ধুই তো সারা জীবন ক্ষমতাসীনদের অত্যাচার আর শোষনের বিরুদ্ধে লড়াই করে গিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু কি এমন আওয়ামী লীগ চেয়েছিলেন ?

যাই হোক, সব বাধা অতিক্রম করে ট্রেন পৌঁছালো এয়ারপোর্ট স্টেশনে। সাথে যুক্ত হল নতুন কিছু অভিজ্ঞতা, যে অভিজ্ঞতাগুলো প্রশ্নবিদ্ধ করল আমাদের সমাজ ব্যবস্থাকে, চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিল আমাদের রাজনৈতিক কষাঘাত, ক্ষমতা কেন্দ্রিক চিন্তা চেতনা, মানবিকতা, মানসিকতা, এবং সেই সাথে এগুলোর অবক্ষয়।

সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১:১২
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামাস বিজয় উৎসব শুরু করেছে, ইসরায়েল বলছে, "না"

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:০৮



গতকাল অবধি হামাস যুদ্ধবিরতী মেনে নেয়নি; আজ সকালে রাফাতে কয়েকটা বোমা পড়েছে ও মানুষ উত্তর পশ্চিম দিকে পালাচ্ছে। আজকে , জেরুসালেম সময় সন্ধ্যা ৮:০০টার দিকে হামাস ঘোষণা করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:৩১


আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।

প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।

ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×