somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

এম. এ. হায়দার
কল্পনাই সুন্দর; কল্পনা ইজ ওয়ান্ডারফুলnএকা থাকি, লিখি... লেখার মাঝে নিজেকে খুঁজি। শব্দের শহরে খালি পায়ে হেঁটে বেড়াই... দুনিয়াদারি ভাল লাগে না। ওয়ান্ডারফুল লাগে না। “কল্পনাই সুন্দর, বাস্তবের বেল নাই”- এইরকম একটা ভাব ধরার চেষ্টা করি। বই পড়া আর ল

সেদিন শ্রাবণ মাস (উপন্যাস) (পর্ব-৯)

২৪ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মনু মিয়া অবশ্য প্রথমে কথনোই তার সাথে যেতে রাজি হয় না। সে কিছুটা অলস প্রকৃতির। পাকিস্তানের ফিল্ডারদের মত এক জায়গায় স্থির থাকতে পছন্দ করে।

তবে তাকে টানাটানি করতে হয়। টানাটানি করতে থাকলে এক পর্যায়ে সে রাজি হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত না করতে পারে না। পান্থ কোথাও তাকে নিয়ে যেতে চেয়েছে, মনু মিয়া যায় নি- এরকম কখনো হয় নি।

এবারও যথারীতি প্রতিবাদ করে মনু মিয়া বলল, ‘ভুয়াপুর তো যেতে পারব না। অসুবিধা আছে।’

‘কিসের অসুবিধা?’

‘নানান ধরনের অসুবিধা। অসুবিধা তো আর একটা না। মনো করো যে তোমার, অনেকগুলাই আছে।’

‘দু-একটা শুনি।’

‘প্রথম কথা, শরীরটা ভাল লাগতেছে না। কেমুন জানি ম্যজ-ম্যাজ করতেছে। এই শরীর নিয়ে তো যেতে পারব
না।’

‘বাইরে বেরোলে হাওয়া-বাতাস লেগে ভাল লাগবে। ঘরের মধ্যে বসে থাকলে তো ম্যাজ-ম্যাজ করবেই। চলো, যাই।’

‘জ্বালাইয়ো না, পান্থ। অসুবিধা আছে বইলাই যাইতেছি না। শরীর ভাল থাকলে অবিশ্যি যাইতাম। মাজাটাও ব্যথা করতেছে।’

‘তোমার মাজা সারাজীবনই ব্যথা থাকব, মিয়া।’

‘বললাম তো। অসুস্থ শরীর নিয়া যাইতে পারব না।’

‘একটু আগে তোমার গরুরে কি খাওয়াইলা, নিয়া আসো। তোমারেও এক ডোজ খাওয়ায় দেই। অসুখ ভাল হয়ে যাক। হা হা হা।’

মনু মিয়া কিছু বলল না।

পান্থ উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে বলল, ‘এত করে বললাম, তাও আসলে না। কি আর করা! একাই যাচ্ছি। দু’জন একসাথে গেলে মজা হত!’

পান্থ চলে যাচ্ছে দেখে মনু মিয়া ইতস্তত করে বলল, ‘একটু দাঁড়াও। আমি আসতেছি।’

পান্থহেসে ফেলল।


***


উঠানের একপাশে রান্নাঘর। জাহানারা বেগম তার মা-র সাথে কিছু একটা রান্না করতে করতে গল্প করছিলেন।

এমন সময় হঠাৎ করে শাহানা সেখানে উপস্থি'ত হয়ে তাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে উৎসাহিত গলায় বলল, ‘মা, কি করছো?’

জাহানারা অবাক হয়ে লক্ষ করলেন, শাহানাকে আজ বেশ হাসি-খুশি লাগছে।

শওকত সাহেব জান্নাতকে নিয়ে আগেই চলে এসেছিল, তিনি শাহানাকে নিয়ে যোগ দিয়েছেন- তিন-চার দিন হল। এই তিন-চারদিন শাহানা খুব মন খারাপ করে ছিল। দেশের বাড়িতে নাকি তার ভাল লাগে না। অথচ আজ ওকে খুব হাসি-খুশি লাগছে। জাহানারা বেগমের বুক থেকে একটা পাথর নেমে গেল। সন্তানের মন-খারাপ করা মুখ দেখতে কোন মায়ের ভাল লাগে?

তিনি মনে মনে প্রচন্ড খুশি হলেও উপরে-উপরে বিরক্তি-বিরক্তি একটা ভাব ফুটিয়ে বললেন, ‘দেখতেই তো পাচ্ছিস, রান্না করছি।’

শাহানা তার মা-কে ছেড়ে দিয়ে এগিয়ে বসল, ‘আমিও রান্না করব।’

‘তুই তো রান্না করতে পারিস না।’

‘ন শিখিয়ে দিলে পারব কিভাবে? শিখিয়ে দেবে।’

‘আগেও তো কত শেখাতে চেয়েছি, তোর তো কোনদিন আগ্রহ দেখি নি।’

‘আজ আগ্রহ আছে।’

‘আগ্রহের কারন কি?’

‘কোন কারণ নেই, এমনি।’

শাহানার নানী পাশ থেকে বলল, ‘রান্না-বান্না শিখনের দরকার আছে। দুইদিন পর শ্বশুরবাড়িতে যাবি!’

‘উফ! চুপ করো তো নানী! খালি উল্টা-পাল্টা কথা!’

‘ঠিক কথাই বলছি। রান্না করতে না জানলে বিয়ের পর স্বামীরে খাওয়াবি কি?’

‘কোনদিন বিয়েই করব না আমি!’

‘ছেড়ীর কথা শোনো!’

জাহানারা কিছুটা বিরক্ত হয়ে বললেন, ‘মা, চুপ থাকো তো। এখন এসব কথা বলার দরকারটা কি?’

নানী চুপ করে গেলেন।

শাহানা রান্না করা দেখতে লাগল এবং একসময় বলল, ‘মা, এবার তুমি একটু সরো। আমি একটু রান্না করি।’

জাহানারা বিরক্ত গলায় বললেন, ‘যা তো। বিরক্ত করিস না।’

চলে যেতে বললেও তিনি মনে মনে খুব করে চাইছেন মেয়েটা তার সাথে এখানে আরও কিছুক্ষণ থাকুক। তাকে জ্বালাতন করুক।’

শাহানা গেল না। মাটির চুলায় লাকড়ি-শলা এসব দিয়ে অহেতুকই খোঁচাখুঁচি করতে লাগল।

দেখতে এত ভাল লাগছে!
জাহানারার চোখে পানি আসার উপক্রম হল।


***


শওকত সাহেব ঘুম-ঘুম চোখে লোকটার দিকে তাকিয়ে আছেন। লোকটা একনাগাড়ে কথা বলে যাচ্ছে। এমনভাবে যেন কোন কারণে হঠাৎ কথা থামালে স্পিড ছবির মত বোম্ব ফাটার সম্ভাবনা আছে।

তার সামনে কয়েকহাত দূরত্বে লোকটা বসে আছে। সহজে চলে যাবে, এইরকমও মনে হচ্ছে না.......



পর্ব ১-৮ এখানে ক্রম অনুসারে


(চলবে.................................................................।)
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×