somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

;)দালালী আর কত করা যায় ................................................................?

১৩ ই আগস্ট, ২০০৯ সকাল ৯:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

টিপাইমুখে কোন সেচ প্রকল্প বা ড্যাম তৈরি করছে না বলে নিশ্চয়তা দিয়েছে ভারত। বাংলাদেশের ক্ষতি হয় এমন কোন প্রকল্প হাতে নিবে না বলে ভারত আশ্বস্ত করেছে বাংলাদেশের সংসদীয় প্রতিনিধিদলকে। একে একটি বড় অর্জন উল্লেখ করে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি আবদুর রাজ্জাক বলেন, অতীতে এমন কোন ঘোষণা তাদের কাছ থেকে আসেনি। তিনি বলেন, তারা কোন বিষয় গোপন করতে চান না। সব ব্যাপারেই আমাদের সাথে খোলামেলা আলোচনা করতে চান। তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী, ২ জন সিনিয়র মন্ত্রী আশ্বস্ত করার পরও কেন এতো অবিশ্বাস? এ ধরনের অবিশ্বাস থাকলেতো কোন কাজই করা যাবে না। তিনি জানান, তাদের আনা তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করেই সরকার সিদ্ধান্ত নিবে। তিনি বলেন, টিপাইমুখ নিয়ে কর্মসূচি প্রকৃতপক্ষে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য দেয়া হয়। এর মাধ্যমে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করার চেষ্টা করা হয়।
গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদ ভবনে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভা কমিটির সভাপতি আবদুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সংসদীয় প্রতিনিধি দলের টিপাইমুখ বাঁধ এলাকা পরিদর্শন শেষে এটাই ছিল কমিটির প্রথম বৈঠক।
সভাশেষে কমিটির সভাপতি আবদুর রাজ্জাক সংসদের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফ্রিং-এ বলেন, টিপাইমুখ পরিদর্শন শেষে এয়ারপোর্টেই আমরা সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেছি। এখন তেমন কিছু বলার নেই। ইতিমধ্যে আমরা আমাদের সফরের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা দিয়েছি। আজকের বুধবারের সভায় সেই রিপোর্ট নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা হয়েছে।
আবদুর রাজ্জাক বলেন, বরাক নদী ভারতের নাগাল্যান্ডের পাহাড়ী অঞ্চলে অবস্থিত। এটা ৫শ' কিলোমিটার ভারতীয় এলাকা প্রদক্ষিণ করে বাংলাদেশে এসেছে। বরাক থেকেই বাংলাদেশের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর উৎপত্তি। আর বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে টিপাই বাঁধের এলাকা ২১০ কিলোমিটার দূরে। মূলত বাঁধটি হয়েছে ভারতের বরাক ও দুইভাই নদীর সংযোগস্থলে।
কমিটির সভাপতি বলেন, ১৯৭৮ সালে টিপাইমুখ বাঁধ প্রকল্পের কথা বাংলাদেশকে জানায়। বাংলাদেশ প্রথম থেকেই সেচ প্রকল্প বা পানি প্রত্যাহার বিষয়ে বিরোধিতা করে আসছে। তিনি বলেন, শুষ্ক মওসুমে পানি থাকে না। আর সে সময় পানি প্রত্যাহার করা হলে বাংলাদেশের পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের অভ্যন্তর থেকে প্রতিবাদ হওয়ার পর তারা সেচ প্রকল্প বাতিল করে জল বিদ্যুৎ প্রকল্প গ্রহণ করে। তিনি আরো বলেন, তাদের প্রকল্পের একটি কম্পোন্যান্ট হচ্ছে ফ্ল্যাড মর্ডারেশন। এর মাধ্যমে বন্যার প্রকোপ কমিয়ে আনা হবে।
আবদুর রাজ্জাক বলেন, আমরা দিল্লী যাওয়ার পর পররাষ্ট্র, পানি ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞদের উপস্থিতিতে একটি উপস্থাপনা দেয়া হয়। সেখানে টিপাইমুখ প্রকল্পের উদ্দেশ্য, লাভ-ক্ষতি, বিদ্যুৎ উৎপাদন নিয়ে বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত দেখানো হয়। ব্যস্ততার মধ্যেও ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের জন্য সময় দেয়। সে সময় তারা কয়েকটি বিষয় নিশ্চিত করে। তার মধ্যে রয়েছে এটি সেচ প্রকল্প হবে না। এমনকি ফুলের তলায়ও এমন কোন প্রকল্প নেয়া হবে না। এটি একটি বড় অর্জন। অতীতে এমন কোন ঘোষণা তাদের কাছ থেকে আসেনি। তিনি বলেন, শুস্ক মওসুমে বাংলাদেশ কতটা পানি পাবে তা জানানো হয়েছে। আমরা দেখেছি '৯৩ সালে যে সমীক্ষা হয়েছিল, তার সাথে এর মিল রয়েছে। তিনি বলেন, পরিবেশ নিয়ে কথা উঠেছে। তারা বলেছে, তারা এ নিয়ে পরীক্ষা-নীরিক্ষা করছেন। আরো পরীক্ষা হবে। ভূমিকম্প নিয়ে তারা জানিয়েছে রিখ্টার স্কেলে ১০ মাত্রায় ভূমিকম্প হলেও বাঁধের কোন ক্ষতি হবে না।
ভারত পৃথক পৃথকভাবে সমীক্ষা চালানোর প্রস্তাব দিয়েছে উল্লেখ করে আবদুর রাজ্জাক বলেন, তারা বলেছে, ক্ষতি হলেতো আগে তাদের ২০০ কিলোমিটার এলাকা আগে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কোন বিরূপ প্রতিক্রিয়া হবে কিনা এ জন্য তারা স্ব-স্ব জায়গায় সমীক্ষা চালানোর প্রস্তাব দেয়। এ জন্য তারা প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেয়। কোন ধরনের তথ্য-উপাত্ত দরকার তারও একটা তালিকা তারা চেয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি উল্লেখ করেন, বিগত ৪০ বছরে এই প্রথম ভারত তথ্য-উপাত্ত দিতে রাজি হয়েছে। তিনি বলেন, তারা কোন বিষয় গোপন করতে চান না। সব ব্যাপারেই আমাদের সাথে খোলামেলা আলোচনা করতে চান।
তিনি বলেন, ভারতের ২ জন মন্ত্রী ও আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনাকালে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী আশ্বস্ত করেছেন, বাংলাদেশের ক্ষতি হোক এমন কোন প্রকল্প তারা হাতে নিবে না। তিনি আরো বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী, ২ জন সিনিয়র মন্ত্রী আশ্বস্ত করার পরও কেন এতো অবিশ্বাস? এ ধরনের অবিশ্বাস থাকলে তো কোন কাজই করা যাবে না। তিনি বলেন, তারা আমাদের দেশ স্বাধীন করতে সহায়তা করেছে। তাদেরকে এতো অবিশ্বাস কেন?
সাবেক পানিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, আমরা হেলিকপ্টার থেকে সেখানে একটা খালের মতো দেখেছি। সেখানে কোন স্থাপনাই নেই। কারা এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে তারা এখনও তা ঠিক করেনি। এর কোন টেন্ডারই হয়নি। তিনি বলেন, প্রথমে তারা এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য North Eastern Electrical Power Corporation (NEEPCO)কে দায়িত্ব দিতে চাইলেও পরে তা বাতিল করা হয়। এখন National Hydro Power Corporation (NHPC), Satluj Jal Bidyut Nigam Ltd, Government of Monipur-কে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য এখনও কোন প্রাথমিক ভৌত কার্যাদি শুরু হয়নি। তিনি উল্লেখ করেন, তারা জানিয়েছে প্রকল্প কাজ যখন শুরু হবে সে সময় থেকে তা সমাপ্ত করতে ৭ বছর সময় লাগবে।
কোন সুপারিশ করা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা সরকারকে সব বিষয়ই জানিয়েছি। এখন সরকারই সিদ্ধান্ত নিবে। তবে প্রধানমন্ত্রী তাৎক্ষণিকভাবে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করার কথা ঘোষণা করেছেন। শীঘ্রই হয়তো তাদের নাম ঘোষণা করা হবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা প্রকল্প এলাকা দেখতে পারিনি এটা ঠিক নয়। জীবন বাজি রেখে উপর থেকে দেখেছি।
টিপাইবাঁধ নিয়ে লংমার্চসহ বিভিন্ন কর্মসূচি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা ফারাক্কা নিয়ে লংমার্চ দেখেছি। তারা রাজশাহী গিয়ে তুশের আগুনের পরিবর্তে মনের আগুনে পুড়েছে। তিনি বলেন, এসব কর্মসূচি প্রকৃতপক্ষে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য দেয়া হয়। এর মাধ্যমে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করার চেষ্টা করা হয়।
কমিটির সভাপতি জানান, সংসদীয় কমিটি গত ৩০ জুলাই নয়াদিল্লি থেকে গৌহাটি যায়। গৌহাটি হতে ৩১ জুলাই হেলিকপ্টারযোগে টিপাইমুখে যায়। কিন্তু দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে তারা নামতে পারেনি। ১ আগস্ট তারা পুনরায় পরিদর্শনে গিয়েও দেখতে না পেরে ফিরে আসেন।
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×