somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার কবিতা

৩১ শে জুলাই, ২০১০ সকাল ১১:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অরণ্য

তোমার মসৃণ চরাচর কেবলি তৃষ্ণা জাগায়
বিভোর পরিব্রাজক নেশায় চুর।

দূর লাইট হাউসে দাঁড় কাকের মেলা
অপসৃয়মান দিনের আলো ঠোঁট উল্টে
বিকট হেসে ভেঙচে গেল।

ঝর্ণার ঢাল ভাঙে পাহাড়ের এবড়ো পাথর
নির্ঝর জল পতন
তাড়িত স্মৃতিভ্রষ্টের নিষ্ফল রোমন্থন-

শঙ্খচিল আর মেছো বাঘ নখর উঁচিয়ে ক্লান্ত
পাহাড়ি যোনির প্রলুব্ধ আয়োজন
নিঃশঙ্ক শিকার নাক ডুবিয়ে শুকছে গন্ধ
মহুয়ার মতো কাছে টানে-
ঋতুবতী অরণ্যে ধুম পড়ে গেছে

অথচ হিমঘরে সটান শুয়ে নির্বোধ শিকারি।

------------------------------------------------------------------------------------

কুড়িয়ে নিয়েছি যা কিছু

অবশেষে হারিয়ে গেল
যা কিছু নিয়েছি কুড়িয়ে
পদব্রজে দীর্ঘ ভ্রমণে।

জারুল-কৃষ্ণচূড়ার
গাঢ় লাল অথবা নীল
প্রজাপতির মতো পাঁপড়ি।

নির্বাক চেয়ে থাকা
রাত্রির গভীরতা বাড়ে
স্তব্ধতায় শিশিরের পতন
চাদর চাপানো
আটশাট শীতের রাত ।


অবিরাম কথার মাতাল আড্ডা
ঠোঁটে ফিল্টার সিগারেট
বন্ধুর মতো পাশে থাকে ।

সামনে লঘু পায়ে থামে
শহরের রাত্রি শেষের ঝরা ফুল

শেষ রাতে অহর্নিশ ব্যস্ত চৌরাস্তায়
কুয়াশা উড়ানো চায়ে
অচেনা জীবনের কথকতা।
ঘুম ভাঙ্গা শহরে
আপিসের বড়কর্তা অথবা যুবকের
দ্রুত চলা - দীর্ঘ রাত ফুরালে।

বিগত যৌবন স্মৃতি
হিঁচড়ে টেনে নেয়, না ঘুমানো আরক্ত চোখে
প্রাক্তন প্রেমিকার ভুলতে চাওয়া পরিচিত পথে।

অবশেষে হারিয়ে গেল
যা কিছু নিয়েছি কুড়িয়ে
পদব্রজে দীর্ঘ ভ্রমণে।

-------------------------------------------------------------------------------------

দিনলিপি

দিনলিপি সমাপ্ত
নিথর পাতায় গাঙচিল মেলে না চোখ
কালো হরফগুলো মৃতের সারির মতো
বিদঘুটে অন্ধকার
মর্গের স্তব্ধতা।

কবিতার প্রগভলতা
চরাচরে অবিমিশ্র অদ্ভুত সারথী।

আলো আধারির
প্রত্ন ছায়াতে
উদ্গত অস্পৃশ্য বিধি।

হৃপিন্ড বিক্ষত, স্খলিত আর্তনাদ
সমর্পিত ভাগ্যাহতের দশদিক আকীর্ণ
স্তব অথবা মৃতু্যর অভিসন্ধি।

-------------------------------------------------------------------------------------

ভবঘুরের বিকেল দর্শন

কিছু পথে ঝড়ে যায়
দুরন্ত বিকেলের স্তব্ধতা
দিনান্তে সূর্য ঘোমটা টানে
চুরি যাওয়া তারুণ্য মুখ দেখবে বলে।

পাড়ার দোকানি ছোট বাক্সের ভিতর
ঝিমুয় গা এলিয়ে নিভু চোখে
উদ্বিগ্ন বাড়ি খিল আঁটে
ছুটে যাওয়া রাস্তার ঘুম ভাঙে
শহুরে যানের হঠাৎ বেরিয়ে যাওয়ায়।
বাসা বাড়িতে ঢুকে যায় দু-একটি নির্জন পথ
গাঢ় নীল যুবতীর ওড়নী ঝুলে গলায়
উঠতি চাঁদের মতো আধখান স্তন।

চলতি পথে শহরে ভবঘুরে এক
হঠাৎ থেমে ঝেড়ে ফেলে
জুতোয় আটকে পরা পাথুরে কণা।

সব ঠিকঠাক হিসেব কাগজে টুকে রাখা
দোকানীর টালি খাতার তালিকা দীর্ঘ হয়
আরো কত্তো সব হিসেব না রেখেই।

সময় চুইয়ে পড়ে
যুগল স্তনের ভাঁজ কিম্বা যোনি চিরে
রক্ষা কবচ নিয়ে ছুটে চলে শহর-রাস্তা
মহুয়া গাছটির নাভিশ্বাস-বিহ্বলতা।

নাতিদীর্ঘ বিকেল, পাড়ার ছোট গলি
পথিকের পায়ে পায়ে
ছুটে পিচগলা রোদ্দুর ঝলসানো পথে।

-------------------------------------------------------------------------------------

খসড়া

এই শীতে এই হিমে পাখিরা ছেড়েছে নীড় অথবা উড়ে গেছে কোন দূরতম দেশে যেখানে বিচরণ ছিলনা তোমার। ছিল গভীর রাতের ক্রন্দন, মাটির কাছাকাছি শুয়ে মুহুর্তের বিভ্রান্তি আমাদের পথে, বিচ্যুতি মেনে নাকি মেনে নিতে হয় বলে; অনেক কালের ক্ষরণ আজো বুকে জমে আছে, যেখানেই গিয়েছি শুনেছি তোমার ডাক; নির্বাক থেকে থেকে আমাদের মগজে গেঁথে গেছে না শুনার ডাক অথচ আমরা নই কোন কালের মায়া; পৃথিবীর পথে পথে ছড়ানো রক্তবীজ থেকে উত্থিত আমাদের প্রাণ, বহুকাল দুলেছি বকুলের শাখে বহুদূর গিয়েছি হেঁটে তোমাদের পথে এই জন্মান্তরের হিসেব মেলাতে অথবা মেলেনি হিসাব; তবু পথের

পারে তোমাদের আহ্বানে এসেছি আবার। জেনে নিও কালের আঁধারে নিজের চিবুক চিনে নিতে কখনো হয়নি ভুল ... এই পথে এই ঘুমে কোন মৃত্যুর দেশে নয়; মনে হয় জেগে আছি কখনোবা ঘুমে; তবু এই পথ এই নদী তোমাদের বসতি... থেমে থেমে নিরবে কাঁদা অতপর গিয়েছি আপন ভুবনে সাপের মতো দেহটাকে টেনে এই ঘুমে এই জাগরণে।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জুলাই, ২০১০ সকাল ১১:১৩
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×