somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিছু শুন্যস্থান আর কিছু দীর্ঘশ্বাস

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ রাত ১০:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শেষ পর্যন্ত সে চলেই গেল। আমাদের সবাইকে বিদায় দিয়ে। সব সম্পর্ক বিচ্ছিন্ণ করে। যাবার আগে চিঠি, "আমি চলে যাচ্ছি। তোমাদের আমার এ্যডরেস দিচ্ছিনা, কারন, এখন আমাকে ছাড়া তোমাদের কমফর্ট পাওয়ার অন্য কোন উপায় বের করা উচিৎ। আর আমি সম্পুর্ন ভাবে চলে গেলেই সেটা সম্ভব। আমাকে কোনদিন খুজার চেষ্টা কোরনা।" এই চিঠি শুধু আমাদের। অন্য সবাইকে বলে গেল, সে নিজেকে খুজতে চায়। জীবনের এই স্টেপটা পার করে, নেক্স স্টেপ। জীবন আরো সুন্দর করে প্ল্যন করতে চায়। আরো শিখতে চায়, নিজেকে শুধরাতে চায়। অনেকে হাসি মুখে বিদায় জানালো। অনেকে গালি। ও চলে গেল, ৪ জোড়া চোখ কে কাদিয়ে। আমাদের গ্রুপটাকে ভেঙে, পিছে ফেলে।

আমাদের মাঝখানে ওর জাগা টা এখন শুন্য। যতদিন আমরা একসাথে থাকবো, সেই শুন্যতাও থাকবে। অন্য সবাই ও অবশ্য এখন আর তেমন আসেনা। বাকি আছি শুধু আমরা দুই মেয়ে। আমাদের মাঝেও যেন এক বড় দেয়াল। অথচ একসময় কত গভীর সম্পর্ক ছিল আমাদের ভিতর। কত হাসি, কত কান্না, একসাথে। কতো কিছু শিখলাম। ঠিক এক বছর আগে শুরু হয়েছিল আমাদের একসাথে পথ চলা। এখন পিছু দেখলে অবাক লাগে, কতো চেন্জ হয়েছি আমরা সবাই। আমরা চারজন, কোন এক অদ্ভুত ভালবাসার সুতোয় বাধা। কাউকে ছাড়া কারো চলেনা। বন্ধুত্ব? নাকি আরো বেশি কিছু? প্রেমিক প্রেমিকার ভালবাসা না, ভাই বোনের মতো না, অন্য রকম ভালবাসা ছিল ওর প্রতি আমার। যেন এই পৃথিবীর না। ও অবশ্য বিশ্বাস করেনি। কিন্তু সত্যি ওকে খুব ভালবাসতাম আমরা। কেউ প্রমিকের মতো, কেউ স্বামীর মতো, আর কেউ ভাইয়ের মতো ভালবাসতো। অনেক কাদিয়েছে আমাদের, তারপরো এমন বন্ধুত্বের জন্য নিজেকে ধন্য মনে হয়। আমাদের দলটা টেকেনি তো কি? যতদিন একসাথে থেকেছি, সারা জীবন মনে থাকবে। আমাদের সবার মন ভেঙেছে তো কি? আমরা সবাই এমন কিছু পেয়েছি, যা সারা জীবন মনে রাখার মতো। কোন একদিন হয়তো আমাদের নাতি নাতনীদের বলবো। এমন বন্ধুত্ব, যা নিয়ে গল্পের পর গল্প লেখা যায়, কবিতার পর কবিতা, গানের পর গান। মেয়েটা বলছিল, "Our friendship wasn't any simple friendship, It was true hardcore frienship. The kind they write quotes about. We connected with our souls." সত্যি তাই। এমন বন্ধুত্ব জীবনে একবার পাওয়াও ভাগ্যের ব্যপার। ঠিক এক বছর আগে শুরু হয়েছিল আমাদের একসাথে পথ চলা। কতো কান্না, কতো হাসি। একসময় তো একদিন কথা না হলে, কারো ঘুমি হতোনা। একজন আরেকজনের জন্য পাগল হয়ে যেতাম। কোন কিছু হলে সবার আগে ছুটে আসতাম এই দলটাতে। কতো secret share করা। আর কাউকে যা বলতে পারতাম না, তা আমরা একে অপরকে বলতে পারতাম। অথচ আজ আমরা সবাই কেমন আলাদা। ছেলেটা চলে গেল, আর দুই মেয়ের দেখা নেই। বাকি শুধু আমরা দুইজন। আমাদের মাঝেও একটা বড় দেয়াল সৃস্টি হয়েছে। শেষ পর্যন্ত মেয়েটাও লিখলো, "আমিও চলে যাচ্ছি। তোমাদের দুইজনের সাথে আমার আর কোন যোগাযোগ নেই। আর বাকি দুইজন এমন ব্যস্ত, যে তোমাদের দেখা পাওয়া যায়না। তোমরা কেউ হয়তো আমার এবসেন্স টের পাবেনা। তোমাদের কাছে অনেক কিছু শিখেছি। আমার জন্য চিন্তা করোনা, I will be okay. But please know that this is very difficult and heartbreaking for me. I am not saying that I will cry every night for you guys, but once in a while, definitely." ওর চিঠি পড়তে পড়তেই চোখ দিয়ে দু ফোটা অশ্রু গড়িয়ে পড়লো। ফিরিয়ে আনলাম ওকে। তারপর দুইজন মিলে একসাথে চুপচাপ বসে থাকা, আর কিছু স্মৃতিচারন। মেয়েটা বললো, "আমার মনে হয় আমরা দুইজন অনেকদিন বন্ধু থাকবো। যতো কিছুই হোক না কেন, আর বাকি সবাই চলে গেলেও আমরা দুইজন একে অপরকে আঁকড়ে ধরে আছি।" আমি হাসলাম। এখন থেকে শুধু আমাদের দুজনের একসাথে পথ চলা। মাঝখানে শুধু তিনটা শুন্যস্থান, কিছু অশ্রু, আর কিছু দীর্ঘশ্বাস।

সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ ভোর ৬:৫৬
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×