somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মীলাদ কিয়াম, নূর, হাজির-নাজির, গায়েব এবং কদমবুসি ইত্যাদি নিয়ে নিরপেক্ষ বিশ্লেষণ

২১ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১২:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার কিছু নিজেস্ব বুঝ! আমার বুঝের সাথে একমত হতেই হবে, এমন নয়। চলুন, ভুমিকা ছাড়াই লিখে ফেলি।

বিসমিল্লাহির রহমানির রাহীম

১ আল্লাহ সর্বত্র হাজির, তবে তা ইলম বা জ্ঞানের মাধ্যমে। কুরআন বলছে, তার কুরসি (ইলম-ইবনে আব্বাস/তাফসীরে বাগাভী) আসমান ও জমিনকে বেষ্টন করে আছে।

২ আল্লাহই একমাত্র গায়েব জান্তা। আল্লাহ ছাড়া যারাই গায়েবী বিষয়ে জ্ঞান লাভ করেছেন তারা হয়ত ওহীর মাধ্যমে, ইলহাম কিংবা কেরামতের মাধ্যমে। যেজন্য আক্ষরিক অর্থে তাকে 'গায়েব' বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে সেটিকে 'পারিভাষিক' অর্থে 'গায়েব' বলা হয় না।

৩ রাসূল (সা.) আল্লাহর 'নূর'। তিনি নূরে মুজাসসাম তথা সমগ্র শরীর মোবারক হিদায়াতের আলোয় আলোকিত। তিনি সেই অর্থেই 'নূর' বা হিদায়াতের মশাল, যে অর্থে পূর্বেকার সমস্ত নবী রাসূলকেও নূর বলা হয়। রাসূল (সা.)-কে আল্লাহ'র 'নূর' হিসেবে 'নূরুল্লাহ' বলে আমি সেই অর্থেই বিশ্বাস করি যে অর্থে আল্লাহ হযরত ঈসা (আ.)-কে আল্লাহ'র "রূহ" বা রূহুল্লাহ বলেছেন। আর আল্লাহর সাথে নূর বা রূহ শব্দগুলোর নিসবত (সম্পর্ক) শুধুই শারাফাত বা সম্মানসূচক মাত্র। যদিও নির্বোধ বোকার দল 'নূর' আর 'নূরের সৃষ্টি' - দুটোকে গুলিয়ে ফেলে। অথচ 'নূরের সৃষ্টি' কথাটি সম্পূর্ণ আবেগ নির্ভর, এর সাথে দলীল এবং যুক্তির লেশমাত্র সম্পর্ক নেই। তাদের হয়ত জানা নেই যে, হেরা পর্বতকে 'জাবালে নূর'-ও বলা হয়। যার অর্থ 'নূরের পাহাড়'! এবার আপনি হয়ত হেরা পর্বতকেও 'নূরের সৃষ্টি' বলবেন! বলুন না!! দলীল আর যুক্তির বাহিরে আপনি যতই আবেগ দেখান, মনে রাখবেন এর কানাকড়িও মূল্য নেই। কেননা দ্বীন আবেগে চলেনা, চলে দলীলে।

৪ মীলাদুন্নবী নিয়েও বাড়াবাড়ি কাম্য নয়। পারলে বুঝিয়ে দিন, না পারলে চুপ থাকুন। আমি প্রচলিত মীলাদুন্নবী পালনকে মুসলিম সংস্কৃতির অংশ হিসেবেই মুবাহ মনে করি, নাজায়েজ বা গুণাহ মনে করিনা। তবে হ্যাঁ, যাদের কনসেপ্ট আমা হতে ভিন্ন তাদের দায়িত্ব আমি নেব না। আমার সুস্পষ্ট অবস্থান, প্রচলিত মীলাদুন্নবী মুসলিম সংস্কৃতির অংশ হিসেবে 'বিদয়াত' বলে কখনো গণ্য হবেনা। কেননা 'বিদয়াত' এর সংজ্ঞা যাদের জানা তারা অবশ্যই জেনে থাকবেন যে, আমার বক্তবে فوائد قيود তথা কন্ডিশনটা কী? আমি কিন্তু প্রচলিত 'খতমে বুখারী'-কেও ঐ একই দাঁড়িপাল্লায় রাখি আর একই কন্ডিশনে সেটিকেও 'বিদয়াত' বলিনা। তবে হ্যাঁ, প্রচলিত মীলাদুন্নবীকে আন-কন্ডিশনালি 'বিদয়াত' বলতে চাইলে তবে তো 'খতমে বুখারী' অনুষ্ঠানের সাথে জড়িত কারোরই রক্ষা নেই, আমার আব্বা-হুজুর হলেও একই কথা!

৫ 'কদমবুসি' উস্তাদ, পিতামাতা, মুরুব্বী বা কোনো বুযূর্গের ক্ষেত্রে অবশ্যই জায়েজ (একদা ইহুদীদের একটি প্রতিনিধিদল রাসূল সা.-এর সাথে সাক্ষাৎ করেন, তারা ঐ সাক্ষাতে ইসলাম কবুলও করেন। তারা রাসূল সা.-এর প্রতি ভক্তি প্রদর্শন স্বরূপ হাত এবং পা চুম্বন করেন ((فَقَبَّلُوا يَدَهُ وَرِجْلَهُ))-তিরমিজি-২৭৩৩/হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী, ইমাম ইবনু মুলাক্কিন, ইমাম নববী)। তবে মাথা নোয়ানো যাবেনা। হাত দ্বারা কদম স্পর্শ করার পর সেই হাতে চুম্বন খাবে। এটি বড় ও বিশিষ্টজনদের প্রতি ভক্তি ও মুহাব্বত প্রদর্শনের জন্যই। আরব দেশে মুসাফিরকে বরণ করে কোপালে চুমু খাওয়ার রেওয়াজ এখনো প্রচলিত। কিন্তু কথা হল, নিয়ম বহির্ভূত এর কোনোটাই শুদ্ধ নয়।

আমি আমার দীর্ঘ পড়াশোনা আর গবেষণার সারাংশ হতে লিখলাম। আল্লাহু আ'লাম। আমার ভুল হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং শুধরে দেবেন।

লিখক মুহাম্মদ নূরুন্নবী এম.এ
০১৬২৯৯৪১৭৭৩

#মিলাদ
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×