somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কাদিয়ানীদের অপতৎপরতার প্রতিবাদে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি

০২ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সূত্রঃ আপামর মুসলিম ছাত্র-জনতা ও উলামায়ে কেরাম

তারিখঃ ০২/১২/২০২৪

স্মারকলিপি

বরাবর,
মাননীয় জেলা প্রশাসক,
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়,
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।

বিষয়ঃ মসজিদ নামে উপাসনালয় নির্মাণ বা নির্মাণের পরিকল্পনা সহ আহমদীয়াদের (কাদিয়ানী ধর্মাবলম্বীদের) ইসলামের নামে সমস্ত কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য স্মারকলিপি প্রদান।

জনাব,

সালাম এবং শুভেচ্ছা গ্রহণ করবেন। আপনি জেনে অবাক হবেন যে, আহমদীয়া (কাদিয়ানী) সম্প্রদায় আমাদের কুঠিরহাট এলাকায় (সোনাগাজি, ফেনী) দীর্ঘ দিন ধরে ইসলামের নামে 'কাদিয়ানীধর্ম'-এর প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে এবং সাধারণ মানুষকে অত্যন্ত গোপনে ইমাম মাহদীর হাতে বয়াতের কথা বলে কাদিয়ানীধর্মে কনভার্ট করে চলছে। অথচ ইমাম মাহদী সংক্রান্ত যতগুলো ইসলামি অথেনটিক সোর্স রয়েছে তার কোনো একটিও মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর সাথে যায়না। তাছাড়া আহমদীয়া (কাদিয়ানী) সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী (১৮৩৯-১৯০৮ইং) নিজেকে 'শেষনবী' ও 'রাসূল' দাবী করা এবং তার অনুসারীদের 'সাহাবী' আখ্যা দেয়া এবং তার আহবানে যারা সাড়া দেবেনা তাদেরকে "অমুসলিম" আখ্যা দেয়া সহ কোনো বিষয়ই তার বর্তমান অনুসারীরা সাধারণ মানুষের সামনে স্পষ্ট করেনা, করার সেই সাহসও রাখেনা।

তারা এ বিষয়গুলো কৌশলে এড়িয়ে যায়, কখনো অস্বীকার করে; কখনো বা স্বীকার করতে বাধ্য হলে তখন জিল্লি-বুরুজি-উম্মতি নানা শব্দ-বিশেষণ দ্বারা তার নবী রাসূল দাবীকে বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করে। এভাবেই তারা আত্মপরিচয় (মতবাদ ও শিক্ষা) গোপন রেখে ও সম্পূর্ণ প্রতারণার মাধ্যমে স্থানীয়দের ঈমান-আকীদা নষ্ট করছে এবং ধর্মান্তরিত করে 'কাদিয়ানী' বানাচ্ছে।

বর্তমানে তারা উক্ত এলাকায় ইসলামের অন্যতম ধর্মীয় পরিভাষা "মসজিদ" নাম ব্যবহার করে পাকা ঘর নির্মাণেরও পায়তারা করছে। অথচ "মসজিদ" পরিভাষা ব্যবহার করে কোনো ধর্মীয় স্থাপনা নির্মাণের অধিকার শুধুমাত্র মুসলিমদের। অমুসলিমদের জন্য এর কোনো অধিকার নেই। কিন্তু তারা সেই অনাধিকার চর্চার পায়তারাই করছে।

ফলে সর্বস্তরের মুসলিম জনতার মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে এবং যে কোনো মুহূর্তে ভয়াবহ সংঘাত ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির আশংকা রয়েছে। এমতাবস্থায় আহমদীয়া (কাদিয়ানী) সম্প্রদায়ের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট অভিযোগ আমলে নিয়ে সাংবিধানিক ধারায় যথোপযুক্ত ও কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে ও জাতিগত সংঘাত এড়াতে এবং এলাকায় শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান সুনিশ্চিত করতে আমাদের নিম্ন বর্ণিত দাবীগুলো মেনে নিলে আমরা কৃতজ্ঞ থাকবো।

১. যেহেতু নাগরিক হিসেবে কাদিয়ানীরাও এ দেশে তাদের ধর্ম পালন ও প্রচারের অধিকার রাখে। তবে তা নিজেস্ব আইডেন্টিটি-তে (আত্মপরিচয়ে) হতে হবে। তারা যদি প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ‘মুসলিম’ পরিচয়ে নিজেদের জাহির করতে চায় তাহলে মুসলিম উম্মাহ কখনো তা বরদাশত করবেনা। কারণ ‘খতমে নবুওয়ত’ (অর্থাৎ হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর পর নবীর আগমনী ক্রমধারা শেষ) এরূপ আবশ্যিক বিশ্বাসকে অস্বীকার করে কেউ কখনো নিজেকে মুসলিম হবার দাবী করতে পারেনা। সহজে বুঝার জন্য বলছি, মনে করুন! কেউ বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামীলীগের গঠনতন্ত্র না মেনেই নিজেকে ‘আওয়ামীলীগ’ পরিচয় দিয়ে চলছে এবং তাদের একান্ত পরিভাষাগুলোও ব্যবহার করে চলছে; এখন আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ কি তাকে আওয়ামীলীগের নগণ্য একজন সদস্য বলেও মেনে নিবে? নিবেনা। তদ্রূপ বি.এন.পি বা অন্য যে কোনো দলের ক্ষেত্রে হলেও একই প্রশ্ন। তাহলে হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে মুক্ত ও স্বাধীন অর্থে সর্বশেষ নবী বিশ্বাস না করে এবং ইসলামের অন্যান্য মৌলিক বিশ্বাসগুলোও অস্বীকার করে কিভাবে কাদিয়ানীরা নিজেদেরকে মুসলিম পরিচয় দিতে পারে এবং ইসলামের পরিভাষাগুলো ব্যবহার করতে পারে? সেজন্য আমাদের দাবী হল, তারা যেন ইসলামের সমস্ত পরিভাষা ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকে এবং থাকতেই হবে।

২. কাদিয়ানী/আহমদী পরিচয়ে যে কোনো ব্যক্তি/পরিবার/সমাজ যাতে মুসলমানদের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক করা থেকে বিরত থাকে, যতক্ষণ না তারা মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর মত একজন 'নবী' দাবীদার 'জিন্দিক ও ভণ্ড'কে ত্যাগ করে ইসলামে ফিরে আসার ঘোষণা দেয়।

৩. কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের বেশিরভাগ অনুসারীদের মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর নবী ও রাসূল এমনকি "শেষনবী"ও দাবী করার বিষয়টি অজানা (তাযকিরাতুশ শাহাদাতাইন, একটি ভুল সংশোধন, দাফেউল বালা - বাংলা সংস্করণ দ্রষ্টব্য)। কালেমা তাইয়্যেবাহ-এর "মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ" (অর্থাৎ হযরত মুহাম্মদ সাঃ আল্লাহর একজন রাসূল) অর্থে মির্যা গোলাম আহমদও অন্তর্ভুক্ত (কালিমাতুল ফছল ৬৮ উর্দূ সংস্করণ দ্রষ্টব্য), তাদের এ ধরনের আরও বহু কুফুরী আকীদা সম্পর্কে তাদের বর্তমান সাধারণ অনুসারীদের অজানা। (সংযুক্ত ইমেজটি দ্রষ্টব্য)।

তাই তাদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে দেশের কাদিয়ানী মতবাদ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ও গবেষক আলেমদের সাথে জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে এক টেবিলে বসানোর ব্যবস্থা করা হোক। তবেই আশাকরা যায়, অন্তত সাধারণ কাদিয়ানীরা ভুল বুঝতে পেরে ইসলামে ফিরে আসবে, ইনশাআল্লাহ।

৪. জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত টিম গঠন করা হোক। তারা বাদীপক্ষের বিজ্ঞ উলামায়ে কেরাম ও অন্যান্যদের সহযোগিতায় কাদিয়ানী মতবাদ সম্পর্কে উপরে উত্থাপিত অভিযোগ গুলোর সত্যতা খতিয়ে দেখবে। যাতে সাংবিধানিক ধারায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হতে কোনো বাধা না থাকে।

৫. জেলা প্রশাসক যদি কোনো কারণে আমাদের দাবীগুলো বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিতে তৎক্ষনাৎ সক্ষম না হন, তাহলে অন্ততপক্ষে কাদিয়ানীদের নিজেস্ব ধর্মবিশ্বাসের ভিত্তিতে ইসলামের বাহিরে 'একটি নতুন ধর্ম' বলে এলাকায় বিশেষ বিশেষ স্থানে সরকারিভাবে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয়া হোক এবং মসজিদ নামে কিংবা মসজিদের সাদৃশ্য কোনো উপাসনালয় নির্মাণের উপর সরকারের পক্ষ হতে বিধিনিষেধ আরোপ করা হোক, যতক্ষণ না তারা 'কাদিয়ানী জামাত' ত্যাগ করার ঘোষণা দেয়।

(কাদিয়ানীদের উল্লিখিত ধর্মমতগুলো তাদেরই প্রকাশিত বই পুস্তক ও পত্র-পত্রিকা থেকে আমরা প্রমাণ করতে পারব, ইনশাআল্লাহ)।

লিখক,

শিক্ষাবিদ ও গবেষক
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×