somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঠগির জবানবন্দি—পর্ব ০৪

১৩ ই মার্চ, ২০১৯ সকাল ৭:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


[ভারতবর্ষের কুখ্যাত দস্যু সম্প্রদায় ঠগিদের কার্যকলাপ নিয়ে সত্য ঘটনার ওপর ভিত্তি করে ফিলিপ মিডোয টেলর, ১৮৩৯ সালে, লিখেছিলেন ‘কনফেশন্স অভ আ থাগ’ উপন্যাসটি। সেই বইটির বাংলা অনুবাদ—ঠগির জবানবন্দি—শীঘ্রই প্রকাশিত হচ্ছে সেবা প্রকাশনী থেকে, আমার অনুবাদে। চমৎকার এই বইটির বেশ কিছু পরিমার্জিত অধ্যায় (মূল অনুবাদ বই থেকে কিছুটা কাটছাঁট করে) প্রকাশ করার ইচ্ছে আছে এই ব্লগে। আজ, চতুর্থ পর্বে, প্রকাশ করা হলো তৃতীয় অধ্যায়।]
(তৃতীয় পর্ব পড়ুন এখানে)

তিন
‘বাবা,’ বললাম আমি। ‘আর কিছু বলার দরকার নেই। নিজেকে আমি তোমার কাছে সমর্পণ করলাম। তোমার যা ইচ্ছে হয়, আমাকে নিয়ে তা-ই কর। সেদিন তোমাদের আলাপ শুনে আমার মন খারাপ হয়েছিল, কারণ আমি ভেবেছিলাম, তোমরা বুঝি আমাকে বিশ্বাসের যোগ্য ভাবছ না। সেজন্যেই সারাক্ষণ মন খারাপ থাকত। তুমি যেরকম যশস্বী হয়েছ, আমিও তেমন যশলাভ করতে চাই। মানুষের কাছেও শুনেছি এ-পৃথিবী বড় নিষ্ঠুর, স্বার্থপর—যদিও আমি নিজে এখনও পৃথিবীর কিছুই দেখিনি। তাই পার্থিব কোন ব্যাপারে আমার আগ্রহ নেই। তোমাদের সম্প্রদায়ের সদস্য হবার জন্যে ব্যাকুল হয়ে আছি। আমার বিশ্বাস, আমি তোমার পথ অনুসরণ করি—এ আল্লারই ইচ্ছা। মৌলানা আমাকে মোল্লা হতে বলেছিল। বলেছিল মানুষকে কোরআন শিখিয়ে জীবন কাটিয়ে দিতে। তার পেশা পবিত্র হতে পারে, কিন্তু তাতে কোন উত্তেজনা নেই। একঘেয়ে, নিরানন্দ জীবন। সৈনিক হব বলেও ভেবেছিলাম একবার। ইচ্ছে ছিল সিন্ধিয়ার রাজসৈনিক হয়ে অবিশ্বাসী ফিরিঙ্গিদের সঙ্গে যুদ্ধ করব। কিন্তু এখন আর সেই ইচ্ছে নেই। আমি এখন ঠগ হতে চাই। তোমাকে আমি নিরাশ করব না। আমার খ্যাতিলিপ্সা এতই তীব্র যে, মৃত্যু ছাড়া আর কোনকিছুতে সে-তৃষ্ণা নিবারণ অসম্ভব।’
‘মরার কথা মুখেও আনিস না, বাপ,’ আবেগে বুজে এল বাবার গলা। ‘আমার জীবনের একমাত্র সান্ত্বনা এখন তুই। আমার একমাত্র ধ্যান-জ্ঞান এখন তোর উন্নতি দেখা। আমি জানি, তুই আমাকে নিরাশ করবি না।
‘আমার ধন-সম্পদ তুই দেখেছিস, কিন্তু আমার ক্ষমতা কতটুকু তা কল্পনাও করতে পারবি না। হিন্দুস্তানের এই অংশে যত ঠগ আছে, তারা সবাই আমার অধীন। এক হপ্তার ফরমানে হাজারজনের একটা দল দাঁড়িয়ে যাবে আমার হুকুম তামিল করার জন্যে। কয়েকদিন বাদেই বিজয়া দশমী। তখনই দেখিস, আমার কথা সত্যি কি মিথ্যে। দশমীতে একত্র হব আমরা। তখনই ঠিক করা হবে, আগামী বছরের কাজ কীভাবে শুরু করব। হোল্কার আর সিন্ধিয়ার সঙ্গে তুমুল যুদ্ধ চলছে ফিরিঙ্গিদের। ফলে সবখানেই এখন বিশৃঙ্খল অবস্থা। এই বিশৃঙ্খলার সুযোগ নিয়ে বড় দাঁও মারতে হবে নতুন বছরে। এবার সম্ভবত অনেক কাজ পাব। বছরটাও পাব সুবিধেজনক। অনেকদিন ধরে অলস বসে আছে আমাদের লোকেরা। শুয়ে-বসে থাকতে-থাকতে একেবারে হাঁপিয়ে উঠেছে ওরা। এবার আমরা মিলিত হব শিওপুরে। ওখানকার জমিদার আমাদের বন্ধু। লোকটা আমাদের নানাভাবে সাহায্য করে। তোকেও নিয়ে যাব এবার। ওখানেই ঠগি হবার জন্যে দীক্ষা দেব তোকে। দলের বাকিদের সঙ্গেও পরিচয় করিয়ে দেব।’
বাবার সঙ্গে কথা শেষ করে, ফুরফুরে মেজাজে শুতে চলে গেলাম।

এক কি দু’দিন পরের কথা। বাচ্চা-সহ এক বাঘিনী এসে আশ্রয় নিল আমাদের গাঁয়ের জঙ্গলে। প্রথম দিনেই এক রাখাল প্রাণ হারাল ওটার হাতে। পরদিন আরেকজন জীবন দিল, ছেলেটার দেহ খুঁজতে গিয়ে। তৃতীয় দিন গ্রামের প্যাটেল গুরুতর আহত হলেন ওটার হাতে। সে-রাতেই মারা গেলেন তিনি। গাঁয়ের লোকেরা খুব ভালবাসত ওঁকে, শ্রদ্ধা করত। ফলে তাঁর মৃত্যুতে মহাখাপ্পা হয়ে উঠল সবাই বাঘিনীটার ওপর।
পশুটাকে কীভাবে শায়েস্তা করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করার জন্যে জড় হলো গ্রামবাসীরা। আলোচনা করে ঠিক হলো, গ্রামের শক্ত-সমর্থ লোকেরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বাঘিনীটাকে মারতে বেরোবে।
পরদিন ভোরে, আলো ফোটার আগে, জঙ্গলের ধারে জড় হলাম সবাই। লম্বা দাড়িঅলা এক পাঠান থাকত আমাদের গাঁয়ে। স্বেচ্ছায় বাঘশিকারি দলটার নেতৃত্বভার নিজের কাঁধে তুলে নিল সে। কিন্তু লোকটা কোমরে-কাঁধে যেভাবে অস্ত্রশস্ত্র ঝুলিয়ে এসেছে, তাতে তার পক্ষে হাঁটাই দায়। দুটো তলোয়ার আর বিভিন্ন আকার-আকৃতির অনেকগুলো ছুরি গোঁজা লোকটার কোমরে। বাম কাঁধে ঝোলানো একটা দু’ধারী তলোয়ার। তলোয়ারটার ডগা মাটি ছুঁই-ছুঁই করছে। লোকটার পিঠে ঢাল, ডান হাতে বন্দুক।
‘সেলাম আলেইকুম, ইসমাইল সাহেব,’ বাবাকে দেখে বলল সে। ‘আপনার মত শান্ত-শিষ্ট লোকও যাবেন? সাহেবজাদাকেও দেখছি যে!’
‘হ্যাঁ, খান,’ জবাব দিল বাবা। ‘এমন বিপদের দিনে সাধ্যমত সাহায্য করা সবারই কর্তব্য। পশুটাকে না মারলে হয়তো দেখা যাবে কাল আমার ছেলেরই প্রাণ গেছে ওটার হাতে।’
‘ইনশাল্লা!’ গোঁফ মোচড়াতে-মোচড়াতে বলল খান। ‘জানোয়ারটা আজই মারা পড়বে। বহু বাঘ পটল তুলেছে এই বন্দুকের গুলি খেয়ে। আর এটা তো নেহাতই একটা বাঘিনী! এখন ওটা না পালালেই হয়। বাকি দায়িত্ব আমার।’
‘আশা করি পালাতে পারবে না,’ বলল বাবা। ‘তবে, খান, এতসব অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তুমি চলাফেরা করবে কী করে? ওটা তোমাকে তাড়া করলে, দৌড়ে পালাতেও তো পারবে না।’
‘পালাব!’ চেঁচিয়ে উঠল খান। ‘আপনি কী করে ভাবতে পারলেন, সবাইকে রেখে পিঠটান দেব আমি? জানোয়ারটাকে একবার কেবল বেরোতে দিন, তারপরই দেখবেন আমার অস্ত্রের তেলেসমাতি।’ এই বলে তলোয়ার কোষমুক্ত করে সাঁই-সাঁই করে বাতাসে ঘোরাতে লাগল সে। সেই সাথে সামনে-পিছে, ডানে-বাঁয়ে লাফিয়ে বেড়াতে লাগল।
‘কেমন, এভাবে তলোয়ার চালালে বাঘ মরবে না?’ হাঁপাতে-হাঁপাতে বলল পাঠান। ‘এসব ব্যাপারে আমি মহাবীর রুস্তমের চেয়ে কোন অংশে কম নই। সামান্য একটা বাঘ মারা তো দিলদার খানের বাঁয়ে হাতকা খেল্! বলতে কী, একটা বাঘ আমি লেজ-সহ কোঁত করেই গিলে ফেলতে পারি। যাক গে, কথা বলে আর সময় নষ্ট কোরো না। খেলা শুরু হলেই বুঝবে দিলদার খান কী জিনিস। শিকার শুরু হলে কিন্তু আমার সামনে পোড়ো না কেউ,’ সমবেত জনতার উদ্দেশে বলল সে। ‘আজ তোমাদের দেখিয়ে দেব কী করে একা হাতে বাঘ মারতে হয়।’
লোকটাকে সঙের মত হম্বিতম্বি করতে দেখে প্রাণপণ চেষ্টায় হাসি আটকাচ্ছে সবাই।
‘এ ব্যাটার চেয়ে ভীতু মানুষ আর দুটো নেই,’ আমাকে বলল বাবা। ‘যাক গে, এখন আয় দেখি কী করে।’
‘লোকটা এভাবে বাঘের সামনে পড়ে গেলে নির্ঘাত ওটার পেটে যাবে,’ বললাম আমি।
‘তাতে আমাদের কিছু এসে-যায় না,’ উত্তর দিল বাবা। ‘কিন্তু লোকটা যা ভীতুর ভীতু, দেখিস, বাঘটা যেদিকে আছে, সেদিকে যাবেই না।’
দিলদার খানের পিছু-পিছু চললাম আমরা জঙ্গলের দিকে। খানিক বাদেই ঢুকে পড়লাম জঙ্গলে। ভেতরে ঢোকার পর মনে হলো, দিলদার খান একটু যেন ভয় পেয়ে গেছে। আগের মত বিশাল গোঁপ-জোড়ায় তা দিচ্ছে না একটু পর-পর।
‘জানোয়ারটা বোধহয় সামান্য কালোচিতা,’ বলল সে। ‘এসব ছোটখাটো জানোয়ার মারার জন্যে এত ঝুট-ঝামেলা করা দিলদার খানের শোভা পায় না। তারচেয়ে আমি বরং এখানেই অপেক্ষা করি। ওটা যদি সত্যি-সত্যিই বাঘ হয়, তাহলে খবর দিয়ো। আমি গিয়ে মেরে আসব।’
সাথে-সাথে তুমুল আপত্তি জানালাম আমরা। বললাম, সে না গেলে সব ভজকট হয়ে যেতে পারে। অগত্যা খানিকক্ষণ গাঁইগুঁই করে চলল সে আমাদের সঙ্গে।
‘বলেছিলাম না, লোকটা ভীতুর ডিম? দেখ্ না শেষতক কী নাটক জমায় ব্যাটা,’ চাপাস্বরে বলল বাবা।
খানিকটা এগোতেই হাড়গোড় ও ছেঁড়া কাপড় পড়ে থাকতে দেখলাম এক জায়গায়। কাছেই, এক ঝোপের ধারে, বাঘিনীর হাতে প্রাণ দেয়া এক হতভাগার ছিন্ন-মুণ্ড পড়ে আছে। এসব দেখে আতঙ্কে নীল হয়ে গেল খানের চেহারা। বলল, ‘লোকে একে পুরুত বাঘ বলে। শয়তানের ছেলে, পাগলা ফকির, শাহ ইয়াকুবের অপবিত্র আত্মা ভর করেছে পশুটার ওপর। গুলিতে ওটার কিছু হবে না। শয়তানের সাথে লাগতে গিয়ে শুধু-শুধু জীবনটা দেব কেন, বলো?’
‘না, খান,’ গ্রামের এক ডেঁপো ছোকরা বলল। ‘তুমি নিশ্চয়ই মজা করছ। কে কবে শুনেছে, মাদি বাঘের ওপর শয়তানের আত্মা ভর করে? আর হলেই বা কী? ওই দুরাত্মা শাহ ইয়াকুবের দাড়ি পুড়িয়ে দেব আমরা।’
‘চুপ!’ চেঁচিয়ে বলল খান। ‘অমন অসম্মানজনক কথা বোলো না। পুরুত বাঘ যে বানানো যায়, তা জানো না তোমরা? আশিরগড়ে এক ফকিরকে ওরকম বাঘ বানাতে দেখেছি আমি। ফকির বাঘটা কেন বানিয়েছিল, জানো? ওই গ্রামের লোকেরা তাকে একটা করে কুমারী মেয়ে দিতে রাজি হয়নি বলে।’
‘বাঘটা কেমন ছিল দেখতে?’ সমস্বরে জানতে চাইল সবাই। মুহূর্তের জন্যে ভুলে গেল আসল বাঘিনীটার কথা।
‘ওটা,’ এক হাতে গোঁপে তা দিল খান, ‘সাধারণ বাঘের চেয়ে দ্বিগুণ বড় ওটার মুণ্ড। দাঁতগুলো একেকটা একহাত লম্বা। চোখ দুটো জ¦লন্ত কয়লার মত টকটকে লাল; রাতের আঁধারে জ্বলতে থাকা মশালের মত। কোন লেজ ছিল না ওটার। আর...’
আচমকা পিলে চমকানো গর্জন ভেসে এল খানিক তফাত থেকে। সাথে-সাথে থেমে গেল খানের গল্প। মুহূর্তকাল পর, শাবক নিয়ে, ঝড়ের বেগে লেজ উঁচিয়ে আমার পাশ দিয়ে ছুটে পালাল বাঘিনীটা।
‘খান সাহেব,’ সেই ডেঁপো ছোকরাটা বলল। ‘এটা তো ভূতে ধরা পুরুত বাঘ না। দেখলে না বিরাট বড় লেজটা কেমন তোমাকে লক্ষ্য করে নাড়ছে?’
‘লেজ থাক আর না-ই থাক,’ বলল পাঠান, ‘ওই পাপাত্মা ইয়াকুবের অভিশপ্ত আত্মা ভর করেছে পশুটার ওপর। ওটার ব্যাপারে আমি কিছু করতে পারব না। শয়তানকে মারার চেষ্টা করে কোন লাভ নেই। ওটা চাইলেই এক নিঃশ্বাসে জাহান্নামে ছুঁড়ে ফেলতে পারে আমাদের।’
‘নমরুদ! নমরুদ! ভীতু! কাপুরুষ!’ চেঁচিয়ে উঠল কয়েকজন। ‘গ্রামে তো খুব বড়-বড় কথা বলছিলে। এখন কোথায় গেল ওসব কথা?’
‘কে আমাকে নমরুদ বলে রে?’ গর্জে উঠল খান। ‘এসো আমার পিছু-পিছু। দেখিয়ে দিচ্ছি কে ভীতু আর কে সাহসী।’ ঝড়ের বেগে সামনে এগোল সে; তবে বাঘটা যেদিকে গেছে, তার উল্টো দিকে।
‘ওদিকে না, ওদিকে না,’ চেঁচিয়ে উঠল কয়েকজন। অগত্যা ফিরে এল সে।
‘এসব ছেলেমানুষি রাখো তো,’ বিরক্ত হয়ে বলল বাবা। ‘বাঘটাকে যদি সত্যিই মারতে চাও, তাহলে ভালমত খুঁজতে হবে।’
এবার প্রাণীটা যেদিকে গেছে, সেদিকে এগোলাম আমরা। গাছে-ঘেরা ছোট একটা ফাঁকা জায়গার দিকে চলে গেছে পথটা। মাঠটার একপাশে ছোট একটা পাহাড়। পাহাড়ের ওপর নিবিড় অরণ্য।
এক বৃদ্ধ শিকারি বললেন, ‘আমার অভিজ্ঞতা বলছে, ওই পাহাড়ে আছে বাঘটা।’
পাহাড় থেকে তিরিশ কদম মত দূরে থাকতে আর এগোতে রাজি হলো না দিলদার খান। নিচু স্বরে বলল, ‘দেখ, আমি এমন অনেক বাঘ মেরেছি। ওগুলোকে কী করে সামলাতে হয় ভালমতই জানি। তাছাড়া আমার কাছেই সবচেয়ে ভাল অস্ত্রশস্ত্র আছে। ওই ঝোপটার পাশে অবস্থান নিচ্ছি আমি। ওই যে, ওখানে একটা পথ আছে। তাড়া খেয়ে পালানোর সময় জানোয়ারটা ওখান দিয়েই বেরোবে। বেরোলেই দেখবে দিলদার খান কেমন যত্ন-আত্তি করে ওটাকে। তলোয়ারের এক কোপে ফেলে দেব ওটার মাথা।’
সে যে-জায়গাটার কথা বলেছে, সেদিকে তাকালাম আমরা। জায়গাটা এখান থেকে দুশো কদম দূরে। হ্যাঁ, ওখানে ঝোপ একটা আছে বটে। পথও একটা আছে—তবে গ্রামে ফেরার পথ।
‘ওখান থেকে তো বাঘটাকে দেখতেই পাবে না। না, না, ওখানে থাকতে পারবে না,’ আপত্তি জানাল বাবা।
‘খুব পাব। বিশ্বাস না হলে, পরে দেখবেন,’ এ-কথা বলে ত্রস্ত পায়ে ঝোপটার দিকে চলে গেল লোকটা।
‘ভাল জায়গা বেছেছে ব্যাটা,’ বিদ্রƒপের সুরে বলল বাবা। ‘বাঘিনীটাকে বেরোতে দেখলেই, গাঁয়ের দিকে ছুট লাগাবে ল্যাজ গুটিয়ে। যাক গে, খান সাহেব তো ওখান থেকেই বাঘ মারবেন। আমাদের তো সে-উপায় নেই। চলো এগোই।’
তিনটে দলে ভাগ হয়ে ছড়িয়ে পড়লাম আমরা। দু’পাশ থেকে বন ঘেরাও করতে চলল দুটো দল। তৃতীয় দলটা ঠিক করল, আঁকাবাঁকা পথটা ধরে, পেছনদিক দিয়ে, যদ্দূর সম্ভব পাহাড়টার ওপরে উঠবার চেষ্টা করবে। যাতে বাঘিনীটাকে দেখা গেলেই, ওপর থেকে গুলি করা যায়। আর দেখা না দিলে পাথর ছুঁড়ে জঙ্গল থেকে বের করে আনার চেষ্টা করবে ওটাকে।
আমরা তখন বন থেকে মাত্র কয়েক গজ দূরে। বাঘিনীর টিকিটারও দেখা নেই। একবার তাড়া খেয়ে চুপ মেরে গেছে। সহজে আর বেরোবে না আশ্রয় ছেড়ে। একটা দলের সঙ্গে বন ঘেরাও করতে জুটে গেলাম আমি। হালকা একটা ঢাল ও তলোয়ার ছাড়া সঙ্গে আর কোন অস্ত্র নেই। আসলে শিকার করার জন্যে আসিনি আমি—এসেছি দেখব বলে। মিনিট কতক পর পেছনদিক থেকে যারা পাহাড়ে উঠতে গিয়েছিল, তাদের একজনকে দেখা গেল চূড়ায়। তারপর আরও তিনজনকে।
‘সব ঠিক আছে তো?’ চেঁচিয়ে জিজ্ঞেস করল ওদের একজন। ‘পাথর ছোঁড়া শুরু করব?’
‘বিসমিল্লা! শুরু করো!’ চেঁচিয়ে অনুমতি দিল বাবা।
সর্বশক্তি খাটিয়ে বড় একটা পাথর গড়িয়ে দিল ওরা ওপর থেকে। বজ্রনিনাদে অজস্র টুকরো হয়ে গড়াতে-গড়াতে নিচে নেমে এল পাথরটা। মুহূর্তের উদ্বেগ, উত্তেজনা। কিন্তু বাঘিনী বেরোল না।
‘বাঘটা কোথায় আছে দেখার চেষ্টা করো,’ নিচ থেকে চেঁচিয়ে বলল বাবা। ‘দেখতে পেলে গুলি করে দাও। আমরা প্রস্তুত আছি।’
এদিক-ওদিক খুঁজল ওরা তন্ন-তন্ন করে। কিন্তু কিছু দেখতে পেল না। শেষতক একদিকে কী যেন দেখাল একজন আঙুল তুলে। বাকি দু’জনকেও দেখতে বলল সেদিকে।
‘এবার দেখতে পেয়েছে,’ বাবা বলল। ‘সবাই তৈরি হও। ভাববারও সময় পাবে না, বিজলির মত বেরিয়ে আসবে ওটা।’
বন্দুক উঁচিয়ে, দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে গেল সবাই। বন্দুক তুলে গুলি ছুঁড়ল পাহাড়চূড়ার একজন। পাহাড়ের গায়ে ধাক্কা খেয়ে প্রচণ্ড প্রতিধ্বনি তুলল গুলির আওয়াজ। সাথে-সাথে গগনবিদারী আওয়াজে বাঘের ছানাটা বেরিয়ে এল গুহা ছেড়ে। দেখে মনে হয় আহত হয়েছে। কেননা কয়েক কদম দৌড়ে আর এগোতে পারল না। মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়ে, দাঁত খিঁচিয়ে গর্জাতে লাগল। শাবকটা একেবারে ছোট নয়—বেশ বড়সড়। ওটাকে লক্ষ্য করে গুলি করল আমাদের একজন। গুলি লাগতেই নিথর হয়ে গেল ওটা।
‘এবার সবচেয়ে কঠিন কাজটা বাকি,’ বাবা বলল। ‘বাঘিনীটা এখন উন্মত্ত ও মরিয়া হয়ে উঠবে। এখানে থাকা আর নিরাপদ নয়। তবে ভালমত নিশানা করে দাঁড়িয়ে থাকো তোমরা। জানোয়ারটা হয়তো এদিকে আসবেই না। তবে এলেও যাতে কেউ আহত না হয়। আজ পর্যন্ত আমার কোন গুলি ফস্কায়নি। তবে ওতে হয়তো বাঘটা মারা পড়বে না। তাই সবাই সাবধান থেকো।’
পাহাড়ের লোকগুলোকে ডেকে ফের একখণ্ড পাথর গড়িয়ে দিতে বলল বাবা। অনেকক্ষণ ধস্তাধস্তির পর বড় একখণ্ড পাথর স্থানচ্যুত করতে পারল ওরা। আগেরটার মত এটাও শত টুকরো হয়ে নিচে নামতে লাগল সগর্জনে।
এবার তীরের মত গুহা ছেড়ে বেরিয়ে এল বাঘিনী। বেরিয়েই মুহূর্তের জন্যে দাঁড়িয়ে গেল আমাদের সামনে। আগে কখনও বাঘ দেখেনি আমি। মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে গেলাম হিংস্র পশুটার ভয়ঙ্কর সৌন্দর্য দেখে। খানিকক্ষণ দাঁড়িয়ে লেজ নাড়ল ওটা। অস্থির, উজ্জ্বল চোখ দুটো ঘুরতে লাগল আমাদের ওপর। পাশে পড়ে থাকা শাবকের মৃতদেহটা এখনও খেয়াল করেনি। কী করবে বুঝে উঠতে পারছে না।
মৃত্যুপুরীর নীরবতা নেমে এসেছে পাহাড়ে। নিথর দাঁড়িয়ে আছি আমরা। প্রত্যেকের কাঁধে যার-যার বন্দুক ওঠানো। বাবা গুলি করল, তারপর বাকিরা। আমার কাছে বন্দুক ছিল না বলে, প্রত্যেকের গুলি ছোঁড়া দেখতে পেলাম স্পষ্টভাবে। বাবা গুলি ছুঁড়তেই টলে উঠেছিল বাঘিনী। তার গুলি লেগেছে ওটার গায়ে, কিন্তু লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে বাকিদের গুলি।
আরেকটা কলজে-কাঁপানো গর্জন করে, লাফ দিয়ে, সিধে আমাদের দিকে ছুটে আসতে লাগল জানোয়ারটা। আমরাও চেঁচাতে লাগলাম গলা ফাটিয়ে, অস্ত্র দোলাতে লাগলাম। ফলে ঘাবড়ে গিয়ে আগের চেয়ে মন্থর গতিতে দিলদার খান যে-ঝোপের ধারে অবস্থান নিয়েছিল, সেদিকে ছুটল ওটা।
‘ইয়া আল্লা!’ চেঁচিয়ে বলল বাবা। ‘লোকটা যেমন কাপুরুষ, নির্ঘাত মারা পড়বে বাঘিনীটার হাতে। ওটা যেরকম খেপে রয়েছে, কাউকে রেহাই দেবে না। এখন কী করা যায়?’
ততক্ষণে বনের ওদিকে যারা ছিল, তারা পশুটাকে দেখতে পেয়ে গুলি করতে লাগল। আবার বোধহয় গুলি খেল ওটা। কেননা দাঁড়িয়ে পড়ে ঘুরল প্রাণীটা—তারপর দাঁত খিঁচিয়ে গর্জে উঠল। কিন্তু মাটিতে পড়ল না, লাফিয়ে সামনে বাড়ল আবার। ঝোপের আড়ালে লুকিয়েছিল দিলদার খান। তাই কী হচ্ছে না হচ্ছে, কিছু দেখতে পাচ্ছে না।
‘দিলদারকে বাঁচানোর কী উপায়?’ আবার চেঁচিয়ে উঠল বাবা।
তার প্রশ্নের জবাব দিল না কেউ। আমিও আর সাত-পাঁচ না ভেবে, তলোয়ার বের করে, বাঘিনীর পিছু নিলাম।
‘আমির আলি, যাসনে,’ পিছু ডাকল বাবা।
তার কথায় কান দিলাম না। কয়েকজন আমার পিছু নিল। গুলি খেয়ে দুর্বল হয়ে পড়লেও, এখনও তীরবেগে দৌড়ে চলেছে বাঘিনী। ঝোপটার দিকে এগিয়ে গেল। সবেগে ঝোপের ভেতর থেকে বেরিয়ে এল দিলদার খান। পড়ল একেবারে বাঘিনীর মুখের সামনে। ব্যস, হাত দুটো বাড়িয়ে দিয়ে স্থির দাঁড়িয়ে পড়ল সে। আতঙ্কে জমে গেছে।
বুকের ওপর ভর দিয়ে বসল পশুটা। পরক্ষণেই জ্যা-মুক্ত তীরের মত ছুটে গিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ল হতভাগা লোকটার ওপর। পশুটার নিচে চাপা পড়ে হাঁসফাঁস করছে দিলদার খান। ওকে আঁচড়ে-কামড়ে ক্ষতবিক্ষত করছে জানোয়ারটা। টের পেলাম, চিৎকার করে পালিয়ে যাচ্ছে আমার সঙ্গীরা। বাড়িয়ে দিলাম ছোটার গতি।
কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই পৌঁছে গেলাম পশুটার কাছে। এক মুহূর্ত না ভেবে প্রাণপণে তলোয়ারের কোপ চালালাম ওটার ওপর। সৃষ্টিকর্তার দয়ায় বাঘিনীর ঘাড়ে কেটে বসল তলোয়ারের কোপটা। ঝট করে লাফিয়ে উঠল পশুটা। তারপর পিছু ফিরতে গেল। কিন্তু পুরোপুরি ঘুরতে পারল না। তার আগেই ধপ করে থুবড়ে পড়ল মাটির ওপর।
একপাশে ঝুঁকে পড়লাম আমি ওটাকে দেখার জন্যে। মরেই গেছে প্রায়—পা-গুলো সামান্য কাঁপছে। তবে দিলদার এখনও চাপা পড়ে আছে ওটার নিচে। হতভাগা কাপুরুষ! ভয়ে পেয়ে ঝোপ থেকে না বেরোলে জানোয়ারটা ওকে আক্রমণ করত না।
ক্ষত-বিক্ষত দেহ নিয়ে মাটিতে পড়ে আছে বেচারা। নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে পড়েছে বাঘিনীর থাবায়। পৃথিবীর মায়া কাটিয়েছে অনেক আগেই। খানিক বাদেই হাঁপাতে-হাঁপাতে হাজির হলো বাবা। উৎকণ্ঠায় পাণ্ডুর হয়ে গেছে চেহারা। আমাকে সুস্থ দেখে আবেগে জড়িয়ে ধরল; কেঁদে ফেলল ঝরঝর করে।
‘ওর মত একটা কাপুরুষের জন্যে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিতে গেলি কেন, বাপ,’ কাঁদতে-কাঁদতে বলল। ‘বলেছিলাম না, ও একটা কাপুরুষ? যাক গে, তোর বীরত্ব আমাদের লজ্জা দিয়েছে। আজ এই ছেলের দুঃসাহস আমাদের মুখে কালি দিয়েছে। তোমাদের কেউ কখনও বাঘের ঘাড়ের অত গভীরে তলোয়ারের কোপ বসাতে পেরেছ? একেবারে হাড় পর্যন্ত কেটে বসেছে। শাবাশ, বাপ। আমার মুখ উজ্জ্বল করেছিস তুই।’ আবার জড়িয়ে ধরল বাবা আমাকে।
‘এই প্রশংসার কিছুটা আমারও প্রাপ্য,’ বললেন বৃদ্ধ বেণী সিং। তাঁর কাছেই শরীরচর্চা শিখতাম আমি। ‘ইসমাইল, তোমাকে তো সবসময়ই বলতাম, বাপের মান রাখবে তোমার ছেলে।’ তারপর আমার দিকে ফিরে বললেন, ‘দারুণ তলোয়ার চালিয়েছ তুমি, বাছা। এমন নৈপুণ্য খুব কম লোকেই দেখাতে পারে। আর সামান্য চর্চা করলেই আমার সমকক্ষ হয়ে উঠবে।’
‘আপনাকে পুরস্কার দিতে হয়,’ বলল বাবা। ‘আজ বিকেলে একবার বাড়িতে আসবেন। ইনশাল্লা, আপনাকে নিরাশ করব না।’ সত্যি-সত্যি তাঁকে উপযুক্ত পুরস্কার দিয়েছিল বাবা।
বেণী সিঙের তত্ত্বাবধানে সত্যি-সত্যিই অনেক কিছু শিখেছিলাম আমি। তিনি আমাকে গুলি করতে শিখিয়েছেন, বর্শা ছুঁড়তে শিখিয়েছেন, শিখিয়েছেন কুস্তি লড়তে। তলোয়ার চালনার প্রতিটা খুঁটিনাটি শিখেছিলাম তাঁর কাছ থেকে।
সেদিন রাতে বাবা আমাকে ডেকে বলল, ‘আমির, বাপ, কাল আমার সঙ্গে শিওপুরে যেতে হবে তোকে। আজ তুই যে বীরত্ব দেখিয়েছিস, তা শুনলে তোর ভবিষ্যৎ-সঙ্গীরা তোকে খুব সম্মানের চোখে দেখবে। কাল যে আমরা যাচ্ছি, সে-খবর আগেই পাঠিয়ে দিয়েছি। সাথে তোর বীরত্বের খবরও পাঠিয়েছি খানিকটা। এতক্ষণে নিশ্চয়ই তোর সঙ্গে দেখা করার জন্যে উদগ্রীব হয়ে উঠেছে ওরা। এতদিন দলের অনেকে তোর সামর্থ্য নিয়ে সন্দিহান ছিল। আমি জমাদার না হলে অনেক আগেই তোর ব্যাপারে ফয়সালা দিতে হত ওদের কাছে।আজকের ঘটনা শুনে সবাই আগের চেয়ে বেশি আন্তরিকতা ও শ্রদ্ধার সাথে গ্রহণ করবে তোকে।’
‘এ-সবই স্রষ্টার ইচ্ছা,’ সবিনয়ে বললাম আমি। ‘নইলে আমার মত অল্পবয়স্ক ছেলে কি আর এমন কাজ করতে পারে?’
‘তুই আর ছোট ছেলেটি নেই,’ জবাব দিল বাবা। ‘ছেলেমানুষির ছিটেফোঁটাও আর নেই তোর মধ্যে। আশা করি সারাজীবনই এই পরিপক্কতা দেখিয়ে যেতে পারবি।’
‘ঠিকই বলেছ, বাবা,’ উৎফুল্ল কণ্ঠে বললাম। ‘আমি আর আগের মত ছেলেমানুষ নেই। এই প্রথম রক্তপাত দেখলাম আমি। আমার ধারণা, এ-ই শেষ নয়।’

(চলবে...)
পুনশ্চ ১: চূড়ান্ত সম্পাদিত অনুবাদটি এখানে প্রকাশ করা হয়নি, তাই কিঞ্চিৎ ভুল-ত্রুটি থাকতে পারে। সেজন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী।
পুনশ্চ ২: অনুবাদটি উৎসর্গ করা হয়েছে বাংলা থ্রিলার সাহিত্যের নক্ষত্র, কাজী আনোয়ার হোসেন-কে।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মার্চ, ২০১৯ দুপুর ১২:০৬
৪টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×