somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বর্তমান প্রেক্ষাপট এবং আমার কিছু কথা

০৭ ই মে, ২০১২ ভোর ৪:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার বিশ্ববিদ্যালেয়র বর্তমান পরিস্থিততে কিছু কথা ব্লগারদের সাথে শেয়ার করতে চাই (তারনা হালিমের "বিশ্ববিদ্যালয়ে এত রঙের কী দরকার" শীর্ষক লেখায় মন্তব্য হিসেবে এই পোস্টটটি লেখা)।

আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সাড়ে পাঁচ বছর পড়ার পর সবে মাত্র মাস্টার্স শেষ করেছি। বিএনপি সরকারের শেষ বছর, মাঝে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুই বছর এবং বর্তমান সরকারের তিন বছর আমরা পেয়েছি। সুতরাং ক্যাম্পাসে সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ না করলেও বিগত পাঁচ বছর এর ছাত্র এবং শিক্ষক রাজনীতি সম্পর্কে কিছু ধারনা আমার রয়েছে। আমি আলোচক নই, সুতরাং বিস্তারিত আলোচনায় আমি যেতে চাই না। সামান্য কয়েকটা পয়েন্ট উল্লেখ করতে চাই।

অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবিরের কিছু কর্মকান্ড যা সাধারন ছাত্র-ছাত্রী পছন্দ করেনিঃ
১. ক্যাম্পাসের প্রধান প্রবেশপথ সহ বিভিন্ন স্থানে বৃক্ষনিধন,
২. ক্যাম্পাসের লেক ইজারা দেয়া,
৩. ক্যাম্পাসে খাবারের মূল্য বৃদ্ধি,
৪. ক্যাম্পাসের প্রধান আড্ডার জায়গাগুলো ভেঙ্গে দেয়া/ স্থানান্তরিত করা,
৫. ঘন ঘন বিদ্যুতে আসা-যাওয়া,
৬. মেডিকেল সেন্টারের মান উন্নয়ন না করা,

অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবিরের কিছু কর্মকান্ড যা ভিসি বিরোধীরা মানতে পারছেননাঃ

১. সেশনজট কমিয়ে পাঁচ বছরের কোর্স পাচঁ বছরেই শেষ করা (উদা: নগর ও অন্চল পরিকল্পনা),
২. ক্যাম্পাসের তথাকথিত ছাত্ররাজনীতিকে বিদায় করে শিক্ষার পরিবেশ স্থাপন করা (সকাল-সন্ধ্যা রাজনৈতিক দলের মিছিল-মিটিং এ যেতে হয়না),
৩. অতি অল্প সময়ে অবকাঠামোগত উন্নয়ন (ছা্ত্র হল, বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র, একাডেমিক ভবন নির্মান),
৪. অতি অল্প সময়ে নতুন দশটি বিভাগ খোলা (এবছর আরও ৪ টি খোলার কথা রয়েছে),
৫. নতুনদের আসন সংখ্যা ১২০০ থেকে বাড়িয়ে ২৫০০ তে উন্নীত করা,
৬. সাধারন ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য দুটি ভলভো এবং একাধিক নতুন বিআরটিসি বাসের ব্যবস্থা করা,
৬. যেখানে বিগত ৪০ বছরে মাত্র ৪ বার সমাবর্তন হয়েছে সেখানে দেড় বছরের ব্যবধানে দ্বিতীয়বারের মত সমাবর্তনের ব্যবস্থা করা,
৭. মতভেদে তিন বছরে ১৫০-১৭৫ শিক্ষক নিয়োগ দেয়া,
৮. খেলোয়ার এবং সাংস্কৃতিক বিকাশের জন্য কোটা সুবিধার মাধ্যমে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ করে দেয়া,
৯. হল পর্যায়ে বিনামূল্যে ইন্টারনেট সেবা চালু করা ইত্যাদি….

আমার কিছু কৌতুহলঃ
১. জুবায়েরের মৃত্যু কখনই মানা যায়না, কিন্তু আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাড়ে পাঁচ অবস্থান করার পরেও তার মত পরিনতি ভোগ করলাম না কেন? (জা.বি তে একটা কথা খুব প্রচলিত, তা হলেো এখানে যে অন্যকে আঘাত করে সে তার প্রতিদান ক্যাম্পাস খেকেই পায় হতে পারে তা দশ বছর পরে)

২. একজন সাংস্কুতিককর্মী এবং শিক্ষার্থী (শাকিলা) কিভা্বে একজন অধ্যাপককে ঝেঁটিয়ে বিদায় করার মত মন্তব্য করতে পারে? কথাবার্তায় এতটা উদ্ধত কি করে হয়? এটাই কি আমাদের শিক্ষা?

৩. বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়স ৪০ পার হয়েছে, অনেক প্রবীন শিক্ষক বিদায় নেয়াতে শূন্য পদরে সৃষ্টি হয়েছে। নতুন দশটি বিভাগে গড়ে ৮ শিক্ষক নিলেও ৮০ জন শিক্ষকের প্রয়োজন, সাথে প্রবীনদের শূন্যপদ এবং শিক্ষাছুটিজনিত শূন্যপদ রয়েছে, তাহলে কিভাবে গননিয়োগ হলো? নতুন বিভাগগুলোতে এবং শূন্যপদের নিয়োগ কি তাহলে পরবর্তী সরকারের জন্য সংরক্ষিত রাখা উচিত ছিল?

৪.ভিসি বিরোধী আন্দোলনে সাধারন ছাত্র এবং শিক্ষক কতজন ছিল এবং সাধারন ছাত্র ব্যানারে একাধিক প্রাক্তন ছাত্র (’স্বাধীন, মামুন’ “ছদ্মনাম ব্যবহার করা হলো”) অংশগ্রহন করেছিল, এরা কারা এবং কাদের উদ্দেশ্য সফল করতে এসেছিল? প্রাক্তন ছত্রের ব্যানারে না এসে বর্তমান সাধারন ছাত্রদরে ব্যানারে আসার কারন কি?

সংক্ষেপে ঘটনা প্রবাহঃ
ক. বিশ্ববিদ্যালয়ে সচেতন শিক্ষক সমাজের আবির্ভাব হলো ২০১১ সালের শেষদিকে,
খ. শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে ভিসি বিরোধী তখা সচেতন শিক্ষক সমাজ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেল,
গ. তার কিছুদিন পর জুবায়ের নির্মমভাবে নিতহ হল,
ঘ. এই ঘটনার বিচারের দাবীতে সচেতন শিক্ষক সমাজের আন্দোলন শুরু হলো,
ঙ. সাধারন ছাত্র-ছাত্রীরাও আন্দোলনে অংশগ্রহন করলো,
চ. বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশন ১৩ জনকে স্থায়ী/অস্থায়ীভাবে বহিষ্কার করলো এবং মামলা করলো (যাদের মধ্যে ২ জন এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছে),
ছ. সাধারন ছাত্ররা আন্দোলন প্রত্যাহার করলো,
জ. সচেতন শিক্ষক সমাজ আন্দোলন (ক্লাস বর্জন, ভিসি অফিস ঘেরাও ইত্যাদি) অব্যাহত রাখলো শিক্ষক নিয়োগসহ অন্যান্য ইস্যুতে,
ঝ. বর্তমান ভিসি বিরোধী আন্দোলন ব্যাপকভাবে শুরু হবার আগে সচেতন শিক্ষক সমাজের কতিপয় শিক্ষক উদ্ভিদ বিদ্যা বিভাগরে চেয়ারম্যাকে (ভিসিপন্থী) প্রহার করলো, এবং যার ফলে পুলিশ সেই শিক্ষকদের গ্রেফতার করলো, এবার শুরু হলো ভিসি পতনের একদফা আন্দোলন…

..... ঘটনাগুলি যোগসূত্র খুঁজে পেতে কি খুব বেশি মাথা খাটানোর প্রয়োজন রয়েছে?…
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৬

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট



পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:

وَجَعَلۡنَا... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×