somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিছু কিছু নাম্বার থেকে, আর আসবেনা টেলিফোন!

৩১ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্কুলের গল্প বলা খুব ঝামেলার কাজ।
কিছু গল্পের শুরু আছে, শেষটা নেই। কিছু গল্পের শুরু শেষ কিছুই নেই, মাঝখান টা আছে। গল্পগুলোও যেন কেমন, সংশ্লিষ্ট মানুষগুলোকে হাসায়, বাকিদের বিরক্তি উদ্রেক করে।

কি নেই স্কুলের গল্পে! হাফ-প্যান্ট থেকে ফুল প্যান্ট পরা, রোকেয়া-মহসিন-শের ই বাংলা-তিতুমীর এর কমলা-নীল-হলুদ-লাল এর গল্প, স্কুল পিকনিক, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছে বকা মার খাওয়া আবার ছেড়ে যাওয়ার সময় তাঁদের জন্য চোখের পানি, হলদেটে বিল্ডিং আর সামনের ছোট্ট সবুজ মাঠকে সাদা শার্ট-নীল প্যান্ট পরে সাদা জুতোয় দাবড়ে বেড়ানো, আর হালকা গোঁফ দেখা দিতেই ছেড়ে আসার সময় হয়ে যাওয়া। স্কুলের গল্পে কখনো হানা দেয় ছোট্ট ভালোবাসার গল্প, প্রেমের উপাখ্যান। কোনটা ছেড়ে কি বলব? স্কুল জীবন গল্পের সংকীর্ণতা দিয়ে বাঁধা যায়না, এ এক উপন্যাস।

৩৬ জন ছিল ৯৬ এর ব্যাচে, ঠিক মাথা গুনে ১২ জন মেয়ে, ২৪ জন ছেলে। তার'ই একজন ছিল নূর। সে বয়সেই ইংরেজি রক মেটাল গান শুনত। আজ গান বাজনা করি, তার শুরু ওর কাছ থেকে "গোল্ড স্টার" ক্যাসেটে রেকর্ড করা গান শুনেই।

সেবার টেস্ট পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে সাধারণ গণিতে ফেল করে বিশেষ বিবেচনায় এস.এস.সি পরীক্ষা দেয়ার অনুমতি পাই। সাধারণ গণিত পরীক্ষা ৩ ঘন্টার, হলে ঢুকার আগে নূর বলে গেল "উত্তর না মিলায়ে বের হবিনা"! ঠিক ২ ঘন্টা পরে দেখি রুমের সামনে দিয়ে খুব ধীরে হেটে হেটে আসছে। "উত্তর মিলানোর" হিসাব টা মিলিয়ে আংগুলের ইশারায় পাটিগণিত মিলিয়ে নিলাম। ওহ হ্যা, ভুগোলের নৈর্ব্যক্তিক অংশে ১-১০ এর উত্তর একটানে মিলিয়ে নেয়াতেই মনেহয় সেই দুর্দান্ত এস.এস.সি'র রেজাল্ট।

আমাদের ক্লাসে দুইটা শুভ, একটাকে ডাকতাম ন্যাড়া, নিয়ামুল থেকে ন্যাড়া! অযৌক্তিক কিন্ত এটাই নাম। দেশ থেকে গেলো খুব ভাল ছেলে, বিদেশ থেকে ফিরলো, যেন "পাঠালাম জ্যুসের বোতল, ফিরে এলো এলকোহল"! খুব ভালো গল্প বলত, ক্লাসে স্যার রা "সি.সি.এ" নামের ক্লাসে এসেই ডাকত "নিয়ামুল কাদির"!। আর সেও কইত্থেকে যেন কি সব গল্প আমদানি করত যা ঠিক ৪৫ মিনিটে শেষ হতো! যাঁরা সোজা মনে করছেন, একটা ৪৫ মিনিট দাঁড়িয়ে গল্প বলে চেষ্টা করে দেখতে পারেন, কাজটা সহজ না!

এইস.এস.সি পরীক্ষার পর পরই সুমদ্রডুবি তে নূর, আর ক্যান্সারের সাথে লড়ে বছর বছর সাতেক হলো ন্যাড়া "শুভ", আমাদের ছেড়ে চলে গেছে!

"অনেক আড্ডায়, অনেক হাঁসিতে
হয়না খোঁজা সেই মুখ
হারানোর বেদনা পিছু ফেলে
সমসাময়িক সুখ
অনেক একায়, অনেক ভীড়ে
তোকেই খুঁজি ফিরি
একটু দাঁড়া আসছি আমি
হচ্ছে নাহয়, একটু দেরী!"

ভালো থাকিস তোরা সবাই!

* আগামীকাল আমার স্কুলের রিইউনিয়ন। সেখানে তরুণ ব্যান্ড গান পরিবেশন করবে। একসাথে অনেক আনন্দ আর ভালোবাসা যখন মিলে মিশে যায়, তখন মানুষ হতবাক হয়ে যায়। আজ আমার সেই অবস্থা।
বৃহস্পতিবার টা যায়না কেন!!

শুভ সপ্তাহান্ত!
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিনেতা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৫



বলতে, আমি নাকি পাক্কা অভিনেতা ,
অভিনয়ে সেরা,খুব ভালো করবো অভিনয় করলে।
আমিও বলতাম, যেদিন হবো সেদিন তুমি দেখবে তো ?
এক গাল হেসে দিয়ে বলতে, সে সময় হলে দেখা যাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×