মা সবসময় খাওয়ার ব্যাপারে সিরিয়াস।ছোটবেলায় মাকে জিজ্ঞেস করতাম তুমি সবসময় খাও খাও করো কেন? মা বলতেন ভালো মত খাওয়া দাওয়া করলে তাড়াতাড়ি বড় হয়ে যাবি। দেশ বিদেশ ঘুরবি কেমনে না খেলে?উত্তর শুনে দেশ বিদেশের স্বপ্নে বিভোর হতাম। মা সবসময় মুখে তুলে খাইয়ে দিতেন। সেটা কলেজ পযন্ত গড়িয়েছে। মা খাইয়ে না দিলে পেট ভরতোনা যেন।এই নিয়ে পরিবারের অন্য সদস্যরা হাসিঠাট্টা করতো।তাদের খুশি করতেই যেন মাঝে মাঝে মা বলতেন তোকে এইভাবে আজীবন কে খাইয়ে দেবে ?এখন থেকে নিজের হাতে খেতে শেখ।আমি কোন উত্তর দিইনা, আরামে চোখ বুঝে খাবারের স্বাদ নিতাম। ইন্টারমেডিয়েট শেষ করার মাঝামাঝিতে মা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন মাস দুয়েক তখন বাধ্য হয়ে আমাকে নিজের হাতে খেতে হতো।এরপর থেকে আমি নিজ হাতেই খাই।
মায়ের কড়া নিদেশ ছিলো যেন খাওয়ার সময় অবশ্যই বাসায় উপস্থিত থাকি। তাই ঐসময় থাকার চেষ্টা করতাম ।কোন কারণে মিস হলে ফোন করে জানিয়ে দিতাম।বাসায় ফিরলে মা সবার আগে জিজ্ঞেস করতেন খেয়েছিস তো?উত্তর যদি হ্যাঁ দিতাম তাহলে মা খুশি আর না হলে চরম রাগ করতেন। আমি যত অপরাধই করি তাতে মা এত রাগ করতেন না।
যেদিন উচ্চশিক্ষার্থে ইংলেন্ড এর উদ্দেশ্যে পাড়ি দেবো সেদিন বিদায় বেলায় মার কান্নাজড়িত মুখে একটি কথাই বললেন, খাওয়া দাওয়া করিস বাপ ঠিকমত।
তিন বছর হতে চললো এই দেশে। প্রতি সপ্তাহেই ফোন করি।এখনও ভেসে আসে সেই পরিচিত প্রিয় কনঠস্বর খাওয়াদাওয়া ঠিকমত করছিস তো বাপ?
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই অক্টোবর, ২০০৬ রাত ৯:৪৭