কীভাবে একটি স্যটেলাইট টিভি চ্যানেল কাজ করে ?
আমি যখন , বয়েসে খুব ছোট ছিলাম, এই ১৩ কি ১৪ ( আনুমানিক ), তখন শুধূ বিটিভি দেখতে পেতাম ।
খূব বেশী আলোড়িত হয়েছিলাম - যারপর নাই বিষ্মিত হয়েছিলাম, কীভাবে এক টিভিতে , দুই তিনটা টিভি ( টিভি চ্যানেল ) দেখা
যাবে ? কোন দিয়ে ঢূকবে >? কীভাবে সম্ভব ? মাথায় মোটামুটি প্যাচগোচ লেগে যেতো ।
মানুষের জীবন কতো অদ্ভুদ , সেই আমি কোনোদিন নিজের হাতে দু, তিনটা টিভি চ্যানেলের স্যাটেলাইট ফ্রি কোয়িন্স সংযুক্ত করতে সাহায্য করবো - তা ছিলো কল্পনার অধিক ।
আমার সেই ছোট্ট বেলার অদ্ভুদ যে ক্ষুধা ছিলো, কৌতুহল ছিলো , তা অনেকেরই থাকবে , স্বাভাবিক ।
কীভাবে কাজ করে একটি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল ?
ক্যামেরায় ধারণকৃত ছবি সমূহ এডিট করবার মাধ্যমে বিশেষ একটি ফর্মেটে , এমপিইজি ২ ( এমটুপি ) বা এমপিইজি ৪ এ রূপান্তর করে , একটি সার্ভার থেকে আর্থ ষ্টেশন এর মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট স্যাটেলাইটে , ডিশ এন্টেনার মাধ্যমে ছুড়ে মারাকে বলে , আপলিংক , ভিডিও সিগনাল যখন একবার স্যাটেলাইটে আপলিংক হয়, পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান থেকে ক্যাবল অপারেটররা বা ব্যক্তিরা ডিশ এন্টেনার মাধ্যমে সেই সিগনাল রিসিভ করেন । তারপর , ফ্রিকোয়েন্সি , সিম্বল রেট, ক্যারিয়ার , প্রভৃতি তথ্যের ওপর চ্যানেল ফিক্সড করেন এবং তা, রিসিভার হয়ে , মডিউলেটর হয়ে , ট্রান্মমিটার হয়ে দর্শকদের টিভি সেটে পৌঁছে যায় একটি টিভি চ্যানেলের সিগনাল ।
আমাদের মতো কয়েকজন মানুষ , যারা এক গ্লাস পানি খাওয়ার মতো সহজে কাজটা করি, তাদের কাছে একটি টিভি চ্যানেল মানে একটি সিগনাল , কিছূ অনুষ্ঠান আর একটি লগো । এই তো । আর তো কিছু নয়, যদিও , সরকার আর রাজনৈতিক দলের কাছে এটি বিরাট রাজনৈতিক প্রশ্ন !!
আর্থ ষ্টেশন হলো সেই বস্তু, যা দ্বারা , ভিডিওকে সিগন্যাল রূপে , মাটি থেকে মহাকাশে ছূড়ে দেয়া হয় ।
রিসিভার হলো, ভিডিও সিডি প্লেয়ারের মতো দেখতে একটি বক্স, আর মডিউলেটর হচ্ছে - রিসিভ করা অডিও ভিডিওকে মিক্স করে ট্রান্সমিটারে পাঠানোর যন্ত্র ।
একটি স্যাটেলাইট , ২০০/৩০০ এর অধিক টিভি , রেডিও , নেট সহ অনেক ধরনের সার্ভিস দিয়ে থাকে ।
মহাকাশে একটি স্যাটেলাইটের স্থাপণ খরচ ২ থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা । এরুপ স্যাটেলাইটের সংখ্যাও কম নয় ।
১০০ এর ওপর তো হবেই ।
অপরদিকে একজন ক্যাবল অপারেটর একটি কন্ট্রোল রূম বানাতে বা ফিড অপারেটর হবার জন্য খরচা করেন ৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকা ।হেডেন কন্ট্রোল গুলোতে আরো বেশী বিনিয়োগ হয় কখনো কখনো ।
দর্শকদের চোখে যা বিষ্ময় , সরকারের চোখে যা বিরাট রাজনৈতিক প্রশ্ন , একটি স্যাটেলাইট কোম্পানির কাছে - তা একটি
খুচরা খরিদ্দার, সাধারন কাষ্টমার ছাড়া কিছু নয় ।
একজন ব্রডকাষ্টিং ইঞ্জিনিয়ারে চোখে , তা একটি ভিডিও সিগন্যাল , এবং একটি পাসওয়ার্ড আর জেপিইজি অথবা জিআইএফ ইমেজ।
আকারে , প্রকারে টিভি চ্যানেল এতো বিস্তুত যে- একটি অমূলক ভয়ে , তটস্থ থাকেন এর ইনভেষ্টররা।
বিজ্ঞানকে আমরা ভয় করি , অজ্ঞতার কারনে ।
আর বিজ্ঞানকে কেউ কেউ , ধর্মের , প্রতিপক্ষ হিসেবে দাড় করানোর চেষ্টা করেছে বিভিন্ন ভাবে ।
যেদিন থেকে ,
ধর্মের জন্য বিজ্ঞান আর বিজ্ঞানের জন্য ধর্ম , সমান ভাবে সুব্যবহারযোগ্য হবে , সেদিন থেকে , মানুষের আত্মিক মুক্তির জায়গাটি আরো স্বচ্ছ হবে । ধোয়াটে থাকবে না । ধর্ম থাকবে । ধর্মীয় কু সংস্কার থাকবে না ।
টিভি চ্যানেলের বিজ্ঞাপন মার্কেট
প্রতিটি টিভি চ্যানেল , ১ থেকে ৩ কোটি টাকার বিজ্ঞাপন পেয়ে থাকে বর্তমান বাজার থেকে ।
তবে, প্রথম ২ বছর , টিকে থাকাটাই বড় সাফল্য মনে করতে হবে ।
বাংলাদেশে মিনিমাম ৫০ টি টিভি চ্যানেল টিকে থাকবার মতো মার্কেট আছে।
নেপালের মতো ছোট দেশে ৩০ টি টিভি চ্যানেল টিকতে পারলে, জার্মানিতে ২৫৬ টি টিভি চ্যানেল থাকতে পারলে,
বাংলাদেশে এই ইন্ডাষ্ট্রি আরো বিকশিত হবে- এ আর এমন কি !!
আই টি সেক্টরকে এগিয়ে নেবার জন্য সরকারের বিনা সুদে লেঅন দেবার প্রথা বা পলিসি রয়েছে।
এ সেক্টরকে ও আরো এগিয়ে নেবার জন্য , সরকারের এরুপ দৃষ্টিভঙ্গী , সরকারকে আরো বেশী মুক্ত দৃষ্টির পরিচয়ে পরিচিত করতে পারে । জার্মানে , ইনসেনেটিভ প্রথা আছে।
টিভি চ্যানেল বানাতে কি দরকার ?
১. একটি লাইসেন্স ।
২.অনুষ্ঠান
৩.লগো ।
৪. কিছু ক্যামেরা ।
৫.এডিটিং প্যানেল
৬. ক্যামেরাম্যান, এডিটর, এনিমেটর, জনবল ।
৭. যে কোনো কমন কোম্পানিরর কমন ষ্টাফস , যেমন এক্যাউন্টেন্ট, মার্কেটিং পারসনস, অফিস এসিসটেন্টস
৮.স্যাটেলাইট ফ্রি কোয়েন্সি ।
টিভি চ্যানেলের লঅইসেন্স বের করা , মস্তো কোনো বাহাদূরী নয় ।
এটি চালানো বা শুরু করাও বিরাট কোনো সাফল্য নয় ।
তবে, এটি যদি সমাজ নির্মানে , মানসিকতা পরিবর্তনে, দেশ প্রেম এ উজ্জীবিত করনে , কাজে লাগানো যায়, এটি বিরাট বিজয় হতে পারে ।
যেহেতু এটি একটি ইন্ডাষ্টি্, ব্যবসা হবে বলাই বাহূল্য ।
আর , লস হলেও লস নয়, কারণ - ২/৪ বছরে ইমেজ ভ্যালু দাড়িয়ে যায় . কল্পনার অধিক ।
বাংলাদেেশের স্যাটেলাই টিভি চ্যানেল ইন্ডাষ্ট্রি আরো এগিয়ে যাক - এই শুভ কামনা ।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ, তিনি - এই ইন্ডাষ্ট্রিকে আকারে বড়ো করেছেন ।
এই ইন্ডাষ্ট্রির পূর্ণ বিকাশের ওপর নির্ভর করছে , পরোক্ষভাবে অন্তন ৩০০ ইন্ডাষ্ট্রির বিকাশ ।
কারণ - এটি প্রচার যন্ত্র ।
প্রচারেই প্রসার।
প্রসারেই বাড়ে বিক্রয় ।
বিক্রয় বাড়লেই বেঁচে থাকে শত শত ইন্ডাষ্ট্রির কোটি কোটি লোক ।
এগিয়ে যায় দেশ ।
কমে আসে বেকারত্বের হার ।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১:৩৩