somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্বামী বিবেকানন্দ-এক ধর্মগুরুর আদর্শীক রুপঃ

২৬ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(শাস্ত্রীয় ধর্ম গুলো সম্পর্ক এ আমার ব্যাক্তিগত অবস্থান হচ্ছে আমি মানব কল্যানকর প্রগতির পক্ষের যাবতীয় উপাদান গুলো ধর্ম থেকে গ্রহণ করতে পিছপা হই না।)

১৮২৩ সালে আমেরিকার শিকাগোতে ‘বিশ্বধর্ম মহাসম্মেলন’ অনুষ্ঠিত হয় আর এর আয়োজক ছিলেন ক্যাথলিক ক্ষ্রিস্টধর্মীয়রা তাদের উদ্দেশ্য ছিল উক্ত সম্মেলনে সকল ধর্মর প্রতিনিধিরাই উপস্থিত থাকবে আর তখন সেখানে সকলে নিজ নিজ ধর্মর বৈশিষ্ঠকে তুলে ধরবেন এবং ক্যাথলিক ক্ষ্রিস্টধর্মই একমাত্র সত্য বলে প্রমানিত হবে। কিন্তু তাদের এ মনোবাসনায় ছাই ছুড়ে দিলেন ভারত থেকে আগত এক নবীন সন্যাসী- ‘স্বামী বিবেকানন্দ’।

স্বামী বিবেকানন্দ ছিলেন শ্রী রামকৃষ্ঞের শিষ্য,আর একাডেমিক শিক্ষা বিবর্জীত স্বভাব সুলভ কবি (রামকৃষ্ঞ) এই মানুষটি বাংলার লোকসমাজে স্বতঃপ্রবাহমান ধর্মবোধের ঐতিহ্য ধারণ করতেন তার হৃদয়ে। তার ধর্ম চেতনা ছিল সম্প্রদায়ের গন্ডীহীন। স্বামী বিবেকানন্দ ছিল রামকৃষ্ঞের আদর্শ এ পুষ্ট একজন প্রকৃষ্ট শিষ্য।

বিবেকানন্দ ঐ সম্মেলনটিতে উপস্থিত হয়ে (যদিও বা তিনি হিন্দু ধর্মর একজন প্রতিনিধি ছিলেন) কোনও বিশেষ ধর্মমতের শ্রেষ্ঠত্ব লাভের বিষয়টি বাতিল করে দিলেন,কি এক চমৎকার ভাবে তিনি বললেন- “সাধুচরিত্র,পবিত্রতা,দয়াদাক্ষিন্য জগতের কোন একটি ধর্মমন্ডলীর নিজস্ব সম্পত্তি নয়। প্রত্যেক ধর্ম পদ্ধতির মধ্যেই অতি উন্নত চরিত্রের নরনারী জন্মগ্রহণ করেছেন”।

ঐ সম্মেলনের শেষ দিনে তিনি বলেছিলেন - “কেউ যদি এরুপ স্বপ্ন দেখেন যে অন্যান্য ধর্ম লোপ পাবে এবং কেবল তার ধর্মই টিকে থাকবে,তবে তিনি সত্যিই করুণার পাত্র ; তার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। তাকে আমি স্পষ্টভাবে বলে দিচ্ছি তার মতো ব্যাক্তির বাঁধা সত্বেও শিঘ্রই সকল ধর্মর পতাকার উপর লিখিত হবে : বিবাদ নয়,সহায়তা চাই ; ধ্বংস নয়, পরস্পরের মিলন চাই ; মতবিরোধ নয়,চাই মিলন ও শান্তি।”

এই মানুষটির ভিতরে একটি বৈজ্ঞানিক দৃষ্টি ভঙ্গি সবসময় বিরাজমান ছিল যা দিয়ে তিনি সমাজকে ব্যাখ্যা করতেন,তিনি স্পষ্ট দেখতে পেয়েছিলেন যে সমাজ থেকে শোষনের মূল উৎপাটন না করতে পারলে মানুষ প্রকৃত মানবিক বোধে উদ্দিপ্ত হতে পারবে না। এজন্য ‘সমাজতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠাকে তিনি অপরিহার্য মনে করতেন। এই বিশাল উপমহাদেশের আধ্যাত্মবাদী সন্যাসী হিসাবে স্বামী বিবেকান্দই প্রথম স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছিলেন যে - “আমি একজন সমাজতন্ত্রী”।

তিনি সমাজের শ্রেণীর রুপটিকে বর্ণরুপে ব্যাখ্যা করেছিলেন এইভাবে যে - “সমাজের চারটি শ্রেণী বিদ্যমান - ব্রাক্ষণ,ক্ষত্রিয়,বৈশ্য,শ্রুদ্র। প্রভূত প্রথম দুটির পালা শেষ হয়েছে এখন চলছে বৈশ্যের শাসন এরপর আসবে শুদ্রের শাসন বা প্রলেতারিয় শাসনের যুগ। অর্থ্যাৎ প্রতিষ্ঠিত হবে সমাজতন্ত্র।”

আর এই শুদ্রযুগ প্রথম কোথায় আসবে সেসম্প ের্কও তিনি আগাম বলে দিয়েছিলেন - “নবযুগের সূচনা হবে যে অভ্যুথ্থানের মধ্য দিয়ে তা ঘটবে চীন অথবা রাশিয়ায়,আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি না কোথায় তবে এ দুয়ের মধ্যে একটিতে হবেই’।

আর তার এ ভবিষ্যতবাণী কতটুকু সত্যি হয়েছিল তা আজ ইতিহাসের পাতায় ই প্রমাণ মেলে।

কেবলই মনে হয় আহা ! এমন ধর্মগুরু হলে,মানুষ তাকে অনুসরন করলে জানলে পেত মহাসত্যের সন্ধান,পেত চিরকাঙিখত মুক্তির সুমিষ্ট স্বাদ।
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৩

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো
অজানার পথে আজ হারিয়ে যাব
কতদিন চলে গেছে তুমি আসো নি
হয়ত-বা ভুলে ছিলে, ভালোবাসো নি
কীভাবে এমন করে থাকতে পারো
বলো আমাকে
আমাকে বলো

চলো আজ ফিরে যাই কিশোর বেলায়
আড়িয়াল... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকরি বয়সসীমা ৩৫ বৃদ্ধি কেনো নয়?

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪২



চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি এটা ছাত্র ছাত্রীদের/ চাকরি প্রার্থীদের অধিকার তবুও দেওয়া হচ্ছে না। সরকার ভোটের সময় ঠিকই এই ছাত্র ছাত্রীদের থেকে ভোটের অধিকার নিয়ে সরকার গঠন করে। ছাত্র ছাত্রীদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×