
ডা. আশরাফুল আলমকে আটক করেছে র্যাব। একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটিয়ে সিগন্যাল অমান্য করায় তাকে আটক করা হয়। গতকাল সন্ধ্যার পর তাকে আটক করে মামলাসহ চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। ডা. আশরাফুলকে আটকের জন্য ধাওয়া করতে গিয়ে র্যাবের গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এ ঘটনায় কয়েক র্যাব সদস্য আহত হন।
র্যাব এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় র্যাবের সিগন্যাল অমান্য ও বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে সড়ক দুর্ঘটনার কারণে হাতিকাটার মোড় থেকে প্রাইভেটকারসহ তাকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন র্যাব-৬ চুয়াডাঙ্গা ক্যাম্পের সদস্যরা। ডা. আশরাফুল অবশ্য বলেছেন, তিনি কালীগঞ্জের একটি ক্লিনিকে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি মেহেরপুর সূর্যের হাসি ক্লিনিকে মেডিকেল অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
জানা গেছে, পিজি হাসপাতালের ডা. আশরাফুল আলমের পোস্টিং মেহেরপুর সূর্যের হাসি ক্লিনিকে। তিনি গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় দর্শনা থেকে বেপরোয়া গতিতে প্রাইভেটকার চালিয়ে চুয়াডাঙ্গার দিকে আসছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব জানতে পারে তিনি দর্শনা থেকে ২৫ বোতল ফেনসিডিল কিনে শাদা ব্যাগে করে নিয়ে আসছেন। এ খবর পেয়ে সন্ধ্যায় পুলিশ লাইনের সামনে র্যাব সদস্যরা তাদের গাড়ি দিয়ে প্রাইভেটকারটির গতিরোধ করার জন্য রাস্তায় বেরিকেড দেয়। বেরিকেড অমান্য করে প্রাইভেটকারটি দ্রুত গতিতে বের হয়ে যায়। র্যাবের ২টি গাড়ি পেছনে ধাওয়া করে। এ সময় কেদারগঞ্জ নতুন বাজারে দর্শনা জয়নগরের বাবলুর ছেলে আল মামুন (৫) র্যাবের গাড়িতে ধাক্কা খেয়ে আহত হয়। আল মামুনকে বাঁচাতে গিয়ে রাস্তার পাশে বিদ্যুতের পোলের সাথে ধাক্কা লেগে র্যাবের গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শেষ পর্যন্ত হাতিকাটায় গিয়ে প্রাইভেটকারসহ ডা. আশরাফুল আলমকে আটক করে র্যাব। ফেনসিডিল পান করায় আটকের সময় তিনি অস্বাভাবিক ছিলেন। প্রাইভেটকারসহ তাকে আটকের পর থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি জানান, ইতঃপূর্বে আমি এ রাস্তায় ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছি। এজন্যে ভয়ে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলাম। ডা. আশরাফুল আলম চুয়াডাঙ্গা দর্শনার জামাই। তিনি ডা. আঁখির ছোট বোন ডা. লাখির স্বামী বলে জানা যায়।
ডা. আশরাফুল আলম দর্শনা থেকে ফেরার পথে ৩/৪ স্থানে দুর্ঘটনার শিকার হন বলে জানা যায়। এতে তার প্রাইভেটকারের সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায়। তিনি চুয়াডাঙ্গা জেলখানার সামনে এসে ১টি ইজিবাইককে ধাক্কা দিলে বাইকের যাত্রী চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোয়ার্টারের আবুল হোসেন মোল্লার ছেলে লালুসহ ২ জন আহত হন।
চুয়াডাঙ্গা র্যাব-৬’র ডিএডি এইচএম নুরুল ইসলাম জানান, র্যাবের বেরিকেড অমান্য করে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালিয়ে আসার সময় র্যাব তার পিছু নেয়। এ সময় র্যাবের গাড়িতে ধাক্কা খেয়ে আহত হয় দর্শনা জয়নগর থেকে নানির বোনের বাড়ি বেড়াতে আসা শিশুপুত্র আল মামুন। তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। র্যাবের গাড়িতে আহত হওয়ায় চিকিৎসার সকল খরচ র্যাব বহন করবে।
আটককৃত ডা. আশরাফুল আলমকে র্যাব ধাওয়া করলে তিনি গাড়ি থেকে ফেনসিডিলের ব্যাগটি ফেলে দেন। ধারণা পোষণ করে এ তথ্য জানিয়েছে র্যাব। এ ঘটনায় র্যাব বাদি হয়ে সদর থানায় একটি মামলা করেছে।
ডা. আশরাফুলের গাড়ি বেশ কয়েকটি স্থানে নসিমন, করিমন ও ইজিবাইকের সাথে ধাক্কা মারে। চুয়াডাঙ্গা ভিমরুল্লা জেলগেটের সামনে ইজিবাইকের সাথে ধাক্কা মারে। ইজিবাইকচালক সজল আহত হন। একই সাথে আহত হন ইজিবাইক আরোহী পূর্বাশা পরিবহনের পরিদর্শক লালু। এরপর প্রাইভেটকারটি পুলিশ লাইন পার হয়ে একটি করিমনকে ধাক্কা দেয়। করিমন আরোহী বাঁশব্যবসায়ী আলমডাঙ্গা কেশবপুরের মফিজউদ্দীনের ছেলে মহিউদ্দীন (৫০) ও একই গ্রামের শামসুদ্দিনের ছেলে লিয়াকত (৫০) আহত হন। এদেরকে আহত অবস্থায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, মহিউদ্দীনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
মুল স্ংবাদ
এইখানে দেখুন
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে নভেম্বর, ২০১০ রাত ১০:৪৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



