somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পিলখানা হত্যাকান্ডের পিছনে নেপথ্য নায়কদের প্রকৃত উদ্দেশ্য কি ছিল?

১৪ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৩:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পিলখানা হত্যাকান্ড ছিল বৃহত পরিকল্পনার শুধু প্রথম পর্যায়ের বাস্তবায়িত কিছু দৃশ্য। কি ছিল পরবর্তি পর্যায়ে, কারা কারা সংস্লিষ্ট ছিল সর্বশেষ পর্যায় কি হত এবং তদন্তের কি হাল হতে পারে ইত্যাদি বিষয়ে আমার প্রথম লেখায় (২৮শে ফেব্রুয়ারী আমার দেশ পাঠক ফোরামে ১ম প্রকাশিত) Click This Link বেশ কিছু ধারণা দিয়েছিলাম। বিস্ময়কর হলেও সত্যি যে আমার ধারণাগুলোর বেশকিছু ইতিমধ্যেই সত্যে পরিনত হয়েছে। আজ আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো অবাস্তবায়িত অংশের পরবতী পর্যায়ে কি ছিল তা নিয়ে।

দেশী-বিদেশি শক্তিশালী মুসলিম বিদ্বেশী মিডিয়া এবং সরকারের শত চেষ্টার পরেও এদেশের আপামর জনসাধারণের কাছে এটা মোটামুটি পরিস্কার যে পিলখানা হত্যাকান্ডের সাথে আওয়ামীলীগের হাইকমান্ডো ওতপ্রোতভাবে জরিত। বিস্তারিত আলোচনায় যাওয়ার আগে আমরা একটু দেখে নিই জনগনের এই অতি বিশ্বাসের পিছনের কারণ গুলো কি কি।

1. আকক্মিকভাবে BDR বিদ্রোহের আগে PM(Prime Minister)-এর আগের বাসভবন (পিলখানার সন্নিকটে) পরিবর্তন করে যমুনায় স্হানান্তর।
2. PM-এর পিলখানা যাওয়ার দিনের পরিবর্তে তথাকথিত বিদ্রোহ হল ঠিক তার পরের দিন।
3. সেদিন MUA(Moyeen U Ahmed)-কে অত্যন্ত অস্বাভাবিক এবং বিমর্ষ দেখা গেছে।
4. বিদ্রোহ্বের আগের দিন হটাৎ করেই 25 তারিখের ডিনারে PM-এর যোগদান কর্মসুচী বাতিল ঘোষনা করা।
5. সামরিক বিদ্রোহকে সামরিকভাবে মোকাবেলা না করে রাঝনৈতিকভাবে মোকাবেলা করা।
6. প্রথম পর্যায়ে গুটিকয়েক বিদ্রোহিকে Army action-এর মাধ্যমে অতিদ্রুত মোকাবেলা করার যথেষ্ট সময় ও সুযোগ থাকার পরেও সেনাবাহীনিকে অনুমতি না দেওয়া।
7. বিদ্রোহীদের সাথে নেগশিয়েশনের নামে সিনিয়র কাউকে না পাঠিয়ে সর্বপ্রথম নানক-আজম কে পিলখানায় পাঠানো।
8. DAD তৌহিদের সাথে নানক-এর বহুল আলোচিত ব্যক্তিগত সর্মপর্ক এবং ঘটনার আগে থেকেই মোবাইল যোগাযোগ।
9. PM-এর সাথে আলোচনা করতে আসা চৌদ্দজন খুনির নাম-ঠিকানা ইচ্ছা করেই না রাখা।
10. DAD তৌহিদকে সরকার কতৃক BDR-এর নতুন DG ঘোষনা এবং হাস্যকরভাবে তার কাছেই অস্ত্রসর্পণের ড্রামা মন্চায়ন করা।
11. নানক-আজম-সাহারাসহ অন্যান্য MP, Minister-দের কথিত JMB-পরিচালিত বিদ্রোহিদের কাছে সম্পূর্ন নিরস্ত্র অবস্হায় ঘন ঘন আসা-যাওয়া করা।
12. শুরুতেই খুনিদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষনা করে ও সব দাবী মেনে নিয়ে খুনিদেরকে অধিকতর খুনের ব্যাপারে উৎসাহিত করা।
13. সরকার খুনিদের সাথে আলোচনা করে সব দাবি-দাওয়া মেনে নিলো অথচ যাদেরকে হত্যা করে তাদের ফ্যামিলিকে জিন্মি করা হলো তাদের ব্যাপারে কোন খোজ-খবর না নেয়া।
14. আওয়ামী ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া কর্তৃক খুনিদের মিডি্যা কাভারেঝ দেয়া।
15. স্হানীয় আওয়ামীলিগ নেতার নেতৃত্বে পিলখানার আশে-পাশে খুনিদের পক্ষে মিছিল-সমাবেশের ব্যবস্হা করা।
16. বিদ্রোহের পর প্রথম রাতে পিলখানা ও এর আশে-পাশে বিদ্যুত বন্ধ করে দেয়া।
17. নানক-আজম ও সাহারা খাতুনের উপস্হিতিতে বিদ্রোহের প্রথম রাতে আত্মসমর্পনের নামে সারা রাত তামাসা করা।
18. অন্যদিকে পিলখানায় তাদএর অবস্হানকালীন সময়ে গনকবর খোড়া এবং অবশিষ্ঠ অফিসারকে খুজে এনে গনকবরের সামনে গুলি করে মাটি চাপা দেওয়া এবং অফিসারদের বাসায় বাসায় গিয়ে ব্যাপক লুটপাট ও নির্যাতন চালানো।
19. PM-এর ভাষণ প্রথম দিনের পরিবর্তে সব খুনিদের পালিয়ে যাওয়া নিশ্চিত হওয়ার পর প্রচার করা।
20. আইন-শৃংখলা বাহীনির সামনেই ঘন ঘন মাইক্রোবাস ও আ্যাম্বুলেন্স (কাল কাঁচের শেড দেয়া) নির্বিবাদে আসা-যাওয়ার সুযোগ দেয়া।
21. প্রায় আট হাজার BDR সদস্যকে পালাতে সহায়তা করা।
22. পালনোর সুবিদার্থে স্হানীয় MP ব্যারিষ্টার তাপস নুরের নির্দেশে পিলখানার আশে-পাশের তিন কিলোমিটার এলাকা জনশুন্য করার জন্য মাইকিং করা।
23. যার বিরুদ্ধে হত্যাকন্ডের সম্পৃক্ততার অভিযোগ তার নেতৃত্বে জাতিয় তদন্ত কমিটি গঠন করা।
25. সেনাকুন্জে PM-এর সাথে প্রায় দুই হাজার সেনাকর্মকর্তার মতবিনিময় সভায় মতিয়া ছাড়া আগত অন্যান্য এমপি-মিনিষ্টারদের ক্যান্টনমেন্ট থেকে বের করে দেয়া।
26. ঐ মিটিং-এ নানক-আযম-সাহারাসহ অনেকের বিরুদ্ধে হত্যাকান্ডের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠার পর হাসিনার তরফ থেকে এর সন্তোষজনক উত্তর না পাওয়া।
24. 'রেবেল হান্ট' ওপারেশন শুরুর পর সরকার কর্তৃক ক্যাবিনেট মিটিং-এর মাধ্যমে BDR সদস্য ছারা অন্য কাউকে গ্রেফতার নিষিদ্ধ করা।
25. সব দল বিরোধিতা করলেও অতি উৎসাহি হয়ে তদন্তের কাজে FBI ও Scottland Yard-কে আমন্ত্রণ জানানো।
26. AL-এর প্রভাবশালী মহলের সহযোগিতায় চার খুনিকে বিমানের সাহায্যে পালানোর সুযোগ করে দেয়া।

তদন্তের নামে এখন যত নাটকই করা হোক, সম্মানিত পাঠক বুঝতেই পারছেন উপরোক্ত অভিযোগ গুলোর জবাব দেয়া সরকারের পক্ষে মোটেই সহজ ন্য়। তবে পরবর্তি পর্যায় অর্থাৎ Army action(সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে) বাস্তবায়ন করা যদি সম্ভব হতো তাহলে এইসব প্রশ্ন আর এইভাবে উঠার সুযোগ ছিলনা।

Army-কে উত্তেজিত করার জন্য বেশ কিছু কাজ ভিতরে-বাহিরে করা হয়। যেমনঃ
1. দেশী-বিদেশী গোয়েন্দা সংস্হাসহ সেনাবাহীনির নিজস্ব গোয়েন্দা সংস্হার মারফত তারা প্রথম দিনই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল যে তাদের প্রিয় সহকর্মীদের অধিকাংশকেই হত্যা করা হয়েছে।
2. সেনা Officer-দের বাঁচাতে কার্যকর কোন পদক্ষেপের পরিবর্তে দুইদিন ধরে PM এবং MUA মাঝে-মাঝে রুদ্ধদার বৈঠকের নামে যে সময়ক্ষেপন করছে সেটা তাদের কাছে পরিস্কার হয়ে যায়।
3. পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গনমাধ্যম গুলোর সহযোগিতায় সেনাবাহীনির বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকার অপপ্রচার চালানো হয়।
4. পিলখানার আশে-পাশে সহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকার সমর্থীত চিহ্নিত গোষ্টি কতৃক Army-র বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক মিছিল-মিটিং করানো হয়।
5. পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পিলখানার লাইট নিভিয়ে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের পাশবিক নির্যাতনের ব্যবস্হা করা হয় এবং যথাসময়ে সামরিকবাহীনি তা জেনেও যায়।
6. মন্ত্রী-এমপিরা রাত জেগে জেগে যে রকমারী নাটক-ড্রামা করছিলেন গোয়েন্দাদের কল্যানে সেনাবাহীনির কাছে তা আর গোপন থাকে না।
7. কথা ছিল Army action এর পর পালিয়ে যাওয়া খুনিদের নেতৃত্বে BDR-রা সারা দেশব্যাপি প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। কিন্তু সময়মত সেই পরিকল্পনা কার্যকরী না হওয়ায় Army action ত্বরান্বিত করার জন্য পরের দিন সারাদেশে BDR বিদ্রোহ ছরিয়ে দেওয়া হয়।
8. এছারা সেনাবাহীনির ভিতর 'র'-এর এজেন্টদের মাধ্যমে সরকার ও BDR-এর বিরুদ্ধে Army কে action-এ নিয়ে যেতে বিভিন্নভাবে অপচেষ্টা চালানো হয়।

যে সেনাবাহীনি অসংখ্য 'কু' ও বিভিন্ন অঘটনের ইতিহাস বহন করে বেড়াচ্ছে, এত কিছুর পরও তারা শান্ত নদীটির মত নিশ্চুপ হয়ে থাকবে এবং খুনি ও তাদের রাজনৈতিক মদতদাতাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষনিক কোন action-এ যাবে না এটা কি ভাবা যায়! স্বাভাবিকভাবে ভাবা যায়না কিন্তু তারপরেও সম্ভব যদি মহান সৃষ্টিকর্তা তার নিজস্ব কিছু পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ইচ্ছা রাখেন।

বিশাল অজগরের মুখে ডিম সদৃশ পন্চান্ন হাজার বর্গমাইলের এই ছোট্ট দেশটি কোন প্রতিবেশি মুসলিম দেশের সংস্পর্শ ছারাই দেশী-বিদেশী অজস্র চক্রান্ত-ষড়যন্ত্রের মুখে এখনো টিকে আছে সেটাইতো একটা অপার বিস্ময়। এই বিস্ময় আর কতদিন স্হায়ী হবে জানিনা তবে মহান সৃষ্টিকর্তা এই জাতিকে সংশোধান হওয়ার জন্য হয়তো আর একটিবার সুযোগ দিতে চাইছেন। তবে এটা মনে রাখতে হবে যে, সুযোগের সদব্যবহার করে তা থেকে ফায়দা হাসিলের দায়িত্ব তার নয় আমাদের।

যাইহোক শত উস্কানীর মাঝেও সেনাবাহীনিকে শান্ত রাখার মত সৃষ্টিকর্তার একটা ক্ষুদ্র প্ল্যান নেপথ্যে মদতদাতাদের পরিকল্পনার সাথে সংমিশ্রনের ফলে তাদের পরবর্তী পর্যায় গুলোর বাস্তবায়ন আপাতত মাঠে মারা গেছে। যার ফলস্রুতিতে আজ AL এবং India তাদের স্বভাবসুলভ আক্রমনাত্মক ভুমিকার পরিবর্তে আপাতত আত্মরক্ষামূলক অবস্হনে। এখন বাধ্য হয়েই তাদের সব পরিকল্পনা আবার নতুন করে ঢেলে সাজাতে হচ্ছে। এখন সব তালগোল পাকিয়ে সরকার নিজেকে এবং ভারতকে এই ঘটনার সম্পৃক্ততার দায় থেকে আঁড়াল করার জন্য বিভিন্ন যুক্তি বুদ্ধি খুজে বেড়াচ্ছে। তাদের যুক্তিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে অকাঠ্য যুক্তি হলোঃ
1. সেনাবাহীনির বদান্যতায় AL এতবড় নিরংকুশ সংখ্যাগড়িষ্ঠতায় ক্ষমতা পাবার পর কোন দুঃখে সেনাবাহীনির বিরুদ্ধে এতবড় রিস্ক নিতে যাবে।
2. আর আমরা ভারতের অন্ধ দালালেরা যেখানে ক্ষমতায় আসতে না আসতেই দেশ ও জনগনের স্বার্থ জলান্জলী দিয়ে ভারতকে তার বহুল কাংক্ষিত ট্রান্জিট, বন্দর, কোরিডর দিয়ে দিচ্ছি সেখানে ভারত কেন এত বড় একটা অঘটন ঘটাতে গিয়ে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের পরিবর্তে সুযোগ হাতছাড়া করার মত রিস্ক নিবে।
যুক্তিদুটো খুবই প্রাসংগিক এবং এর ভিত্তি খুবই মজবুত। কিন্ত সোনার চাঁন, তাদের বৃহত পরিকল্পনার দ্বিতীয় অংশটি যদি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হতো তাহলে আজ আর এই অবস্হায় পড়তে হতোনা এবং এমন যুক্তিও দেওয়ার প্রয়োজন পড়তোনা।
সুপ্রিয় পাঠক আবারও প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে, কি ছিল সেই অবাস্তবায়িত অংশ যার কারণে AL এবং India-কে এই রকম ঝুকি নিতে উৎসাহিত করেছে?
আমরা অবশ্যই ঐ বিষয়ে আসব তবে আলোচনার সুবিদার্থে উপরোল্লেখিত বিষয়বস্তু মনে রাখার সাথে সাথে নিচের বিচ্ছিন্ন কিছু বিষয়ের উপর একটু চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাকঃ
1. ওয়ান ইলেভেন ও তার পরবর্তি দুই বছর এবং একটা অবাস্তব ইলেকশনে Army-কে সরাসরি ভূমিকায় নিয়ে আসার মধ্য দিয়ে নেপথ্যের নায়করা সেনাবাহীনিকে পুরোপুরি গনবিচ্ছিন্ন করে ফেলে।
2. তাদের ক্ষমতায় আসা শুধু পাঁচ বছরের জন্য নয়, বরং তাদের বক্তব্য থেকেই পরিস্কার- যে করেই হোক 2021 শাল পর্যন্ত তাদের ক্ষমতায় থাকতেই হবে।
3. ক্ষমতায় আসার লোভে নির্বাচনের আগে AL দশ টাকা কেজি চাল, বিনে পয়সায় সার এবং ঘড়ে ঘরে চাকরী দেওয়ার মত বেশ কিছু অবাস্তব প্রতিশ্রুতি জনগনকে দেয়। ক্ষমতায় আসার পর অতিদ্রুত সেই প্রতিশ্রুতি থেকে সরে এসে জনগনের কাছে মিথ্যাবাদী বলে ইতিমধ্যেই চিহ্নিত হয়েছে।
4. হাসিনার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয় নির্বাচনের পূর্বে আমেরিকার এক ইহুদী সামরিক কর্মকর্তার সাথে একটা যৌথ প্রবন্ধ প্রকাশ করে। প্রবন্ধে কিভাবে সেনাবাহীনি থেকে মৌলবাদী ভুত তারানো হবে এবং সেনাবাহীনিকে সেকুলার বানানো হবে তার একটা পরিকল্পনা পেশ করা হয়।
5. কর্নেল গুলজারসহ বেশ কিছু প্রচন্ড মেধাবী কর্মকর্তাকে সম্পূর্ণ অগ্গাত করণে সল্প সময়ের নোটিশে BDR-এ বদলী করা হয়।
6. নেপথ্যের নায়করা অনেক আগে থেকেই গোয়েন্দা সংস্হাগুলোকে দেশ ও জনগনের সার্বিক নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব থেকে সরে এনে রাজনৈতিক নেতাদের পিছনে লেলিয়ে দেয়।
7. BDR বিদ্রোহের একদিন আগে কাউকে কোন আলোচনার সুযোগ না দিয়ে তরিঘড়ি করে সেনাবাহীনির বিরুদ্ধে সংসদে একটা বীল পাশ করা হয় যাতে ভবিষ্যতে কোন নির্বাচনে Army নির্বাচন সুষ্ঠ করার ব্যাপারে কোন ভুমিকা না রাখতে পারে।
8. JMB-র গ্রেনেড হামলার হুমকির সম্মুক্ষিন খালেদা জিয়ার এসএসএফ নিরাপত্তা প্রত্যাহার করা হয়। অন্যদিকে আকক্মিকভাবে বিদ্রোহ্বের আগে PM-এর আগের বাসভবন (পিলখানার সন্নিকটে) পরিবর্তন করে যমুনায় স্হানান্তর করা হয়।
9. BDR বিদ্রোহ সকাল আটটায় শুরু হলেও বেলা এগারোটা পর্যন্ত শুধুমাত্র 40/45 জন BDR সদস্য বিদ্রোহে অংশ নিয়েছিলো। শিগগিরই সেনা অভিযান শুরু হচ্ছেনা এটা নিশ্চিত হওয়ার পর হত্যাকান্ড শুরু হয়। সরকার BDR-দের পক্ষেই আছে এটা নিশ্চিত করার পর হাজার হাজার BDR-সদস্যকে বিদ্রোহে সামিল করানো সম্ভব হয়।
10. নিজের জীবনহানী আশংকায় খালেদা জিয়া বিদ্রহের দুইদিন নিজের ক্যান্টনমেন্ট বাসভবনের পরিবর্তে বাইরে অবস্হান করেন।
11. বিদ্রহীদের আত্মসমর্পণকালীন শেষ পর্যায়ে হাসিনার নিরাপত্তা বাড়ানোর লক্ষ্যে তার বাসভবনের সামনে ট্যাংক-কামান সহ সৈন মোতায়েন করা হয়।

পাঠকদের ধৈর্যের পরীক্ষা আর না নিয়ে এইবার আমরা আসি মূল পিরকল্পনার সেই অবাস্তবায়িত দৃশ্যে যেটা পুরণ না হওয়ায় আজ আওয়ামীলিগকে এইভাবে খাবি খেতে হচ্ছে।
1. সেনাবাহীনি সরকারের নির্দেশ অমান্য করে পিলখানায় হামলা চালাবে। সেখানে বেশ কিছু সংঘর্ষ হবে। যেহেতু মূল খুনিরা আগেই পালিয়েছে সেহেতু নিরিহ কিছু BDR-সদস্য এতে মারা পরবে। নতুন এই হতাহতকে কেন্দ্র করে গোটা দেশে বিডিআর-দের মনে আগুন জ্বলে উঠবে। ইতিমধ্যেই পিলখানা থেকে পালিয়ে যাওয়া খুনিদের নেতৃত্বে তারা সেনাবাহীনির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করবে এবং সব যায়গায় যুদ্ধ শুরু হবে। এই অবস্হায় PM আবারও শান্তির আহবান জানিয়ে সেনাবাহীনিকে ব্যারাকে ফিরার আবেদন জানাবেন। কিন্ত সেনাবাহীনির পিছু হটার আর কোন পথ থাকবেনা। তারা মইনকে পদচ্যুত করে বংগভবন দখল করবে এবং দেশে মার্শাল 'ল' জারি করবে। সংগত কারনেই খালেদা জিয়া মার্শাল 'ল'-কে সমর্থন না করে গনতন্ত্রের পক্ষে অবস্থান নিয়ে হাসিনার শান্তির আহবানকেই গুরুত্ব দিবেন।
2. অন্যদিকে সেনাবাহীনির ভিতরে মইন সমর্থক 'র'-এর এজেন্টরা সময়-সুযোগ বুঝে বেগম খালেদা জিয়াসহ BNP,AL-এর বেশ কিছু প্রবীন নেতাকে হত্যা করবে। মইন বিরোধীরা হাসিনার কিছু করতে পারবেনা কারণ মইন সমর্থিত অংশ(আপাতত আকারে ছোট হলেও) পিজিআর(PGR)-এর সাথে মিলে PM-এর বাসভন 'যমুনার' নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
3. পূর্ব থেকেই গনবিচ্ছিন্ন করে ফেলা সেনাবাহীনির হাতে খালেদাসহ BNP,AL-এর বেশ কিছু প্রবীন নেতা(যারা বিভিন্ন সময় সেনাবাহীনির নির্যাতনের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন) নিহত হওয়ার ফলে গোটা দেশের জনগন বিডিআর-এর পক্ষে সেনাবাহীনির বিরুদ্ধে অবস্থান নিবে। ফলস্রুতিতে দেশে শুরু হবে গৃহযুদ্ধ। এই পর্যায়ে আমাদের 'Daughter of Peace' অর্থাৎ 'শান্তির দেবী' হাসিনা নিজ দেশের শান্তি ফিরিয়ে আনতে ভারতের সাহায্য চাইবেন।
4. ঐতিহাসিক কাল থেকে এদেশের জনগনের শান্তির ও মুক্তির নির্ভেজাল দেবতা 'ভারত' আমাদের 'Daughter of Peace'-এর সে আহবানে সাড়া না দিয়ে পারবেনা। তারা 'Peace Mission'-এর নামে তাদের সেনাবাহীনি পাঠাবে।
5. এই পর্যায়ে সেনাবাহীনির মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা মইন সমর্থীত অংশটিও শান্তির পক্ষে অবস্থান নিয়ে স্লোগান তুলবে এবং জনগনকে সাথে নিয়ে গনঅভ্যূথান ঘটাবে। একাত্তরে পাকিস্তানী সেনাবাহীনি আত্মসমর্পণ করেছিল যাদের কাছে এইবার আমাদের সেনাবাহীনিও আত্মসমর্পণ করবে ঠিক তাদের কাছেই।
6. আর আমাদের উচ্ছলা, চপলা তরুণী 'Daughter of Peace' নিজের বয়সের কাছে আপাতত আত্মসমর্পণ করে 'Mother of Nation'-এর মুকুট পড়বেন। এবং নতুন করে জন্ম নেয়া সরকারের প্রধানমন্ত্রী হয়ে মনের আনন্দে হিন্দি গান গাইতে গাইতে অনির্দিষ্টকাল রাষ্ট্র পরিচালনা করতে থাকবেন। কি মজা। তবে এইবার আর তাকে তার বাপের ভাগ্য বরণ করতে হবেনা কারণ বিয়ের রাতেই বিড়াল মারা শেষ অর্থাৎ সেনাবাহীনির খেল সম্পুর্ণ খতম।

এইবার দেখা যাক এক ঢিলে কত পাখী মরার কথা ছিলঃ
1. অবধারীত ভাবেই খালেদাবিহীন বিএনপি-র অস্তিত্ব কয়েকটি ব্রাকেটে বন্দী হয়ে যেত।
2. সেনাকর্মকর্তামুক্ত বিডিআর-এর অবস্থা হত মূলতঃ একটা রক্ষিবাহীনির মত।
3. মৌলবাদী ভুত তাড়ানো এবং বিভিন্ন ধরনের সাফ-সুতোর ও যাচাই-বাছাই অভিযানের ফলে সেনাবাহীনি পরিনত হত মূলতঃ একটা মুহাফিজ বাহীনিতে যাদের কাজ রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিধান নয়, বরং নব্য বাকশালকে পাহারা দেয়া।
4. সর্বপরি সম্ভব হত 75-এর প্রতিষোধ সুদে-আসলে উসুল করা।
5. এবং আরও অনেক কিছু।

এক ঢিলে আওয়ামীলিগের ঝুরিতেই যদি এতগুলো পাখী জমা হয় তাহলে ভাবুনতো-মূল পরিকল্পনাকারীদের ঝুড়িতে জমা পাখীর সংখ্যা কত? মিথ্যাবাদী বলে সাব্যাস্ত হওয়া আড়াইমাস ব্য়সী সরকারের দলীয় ক্যাডারদের অত্যাচারে দেশের আইন-শৃংখলা পরিস্থির এখনই যে ভয়াবহ অবস্থা, সেই সরকার অনির্দিষ্টকাল বা 2021 শাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকা দুরে থাক, মেয়াদ পূর্ণ করতে পারে কিনা তাতেই বিস্তর সন্দেহ। সম্মানীত পাঠক এই বার বিচার করুন, এমন আশংকার মধ্যে 'র', মোসাদের এই রকম লোভনীয় প্রকল্পে AL-এর(যারা ক্ষমতার জন্য গোলাম আযমের পা ধরতে পারে) জরিত না হয়ে পিছিয়ে থাকা কি সম্ভব?

সেনাবাহীনি যদি সেদিন ঐ ভুল পথে পা বাড়াত তাহলে আজকের এই পুনরুদ্ধার হওয়া জনসমর্থন ও সহানুভূতি কোনটাই তাদের পক্ষে আসত না। আজকের এই শহীদ কর্মকর্তাদের মৃত্যু ও পুরো ঘটনার জন্য দায়ী করা হত উল্টো সেনাবাহীনিকেই। বিচার দুরে থাক প্রচার করা হত- শান্তির পথে না গিয়ে, সরকারী নির্দেশ অমান্য করে সেনাবাহীনির পিলখানায় হামলা করার কারণেই বিডিআর-এর হাতে কর্মকর্তাদের এই প্রাণহানী।

পরিশেষে বলি, জনগন ও সেনাবাহীনি যদি এখনই সচেতন না হ্য় এবং ষড়যন্ত্রের মূল হোতাদের এবারও চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয় তাহলে অদুর ভবিষ্যতে এদেশের জন্য খুব ভয়াবহ পরিনতি অপেক্ষা করছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মার্চ, ২০০৯ সকাল ৭:৩৪
১৭টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×