সারাটা দিন বুঁদ সামাজিক যোগাযোগ রক্ষায়:
ফেসবুক, টুইটার কিংবা সামাজিক যোগাযোগের যেকোনো ওয়েবসাইটে আপনার নিশিদিন বিচরণ। আড্ডায় আপনার মুখে খই ফোটে। সপ্তাহের একটা ছুটির দিন, সেই দিনেও ঘরে মন টেকে না, সদা চঞ্চল আপনার মন। আবার দেখা গেল বন্ধুরা যেসব বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনায় আগ্রহী না, যেমন ধরুন বৈশ্বিক উষ্ণতা, তেমনই কোনো বিষয়ে আপনার তুমুল আগ্রহ। অথবা বন্ধুরা আপনাকে ডাকে ‘বাচাল’ নামে। এতসব চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কারণে হয়তো হরহামেশাই কটুবাক্য হজম করতে হয় আপনাকে। কিন্তু জেনে রাখুন, এই বৈশিষ্ট্যগুলোই হতে পারে আপনার মনের মতো একটি চাকরির সহায়ক উপাদান!
ইন্টারনেট আসক্তি = সামাজিক যোগাযোগকর্মী:
সারা দিন ফেসবুক, টুইটার কিংবা ইউটিউবে পরে থাকলে কপালে জোটে ‘অকর্মার ঢেঁকি’ উপাধি। তবে বিশ্বের উন্নত দেশগুলো এই ‘অকর্মা’দের নিয়ে বিস্তর গবেষণা করেছে। গবেষণা বলছে, যার যেটা ভালো লাগে, তাকে সেটা করতে দেওয়াই উত্তম। মা-বাবারা প্রশ্ন করতে পারেন, তাই বলে এভাবে সময় নষ্ট করবে, আর আমরা চেয়ে চেয়ে দেখব? মোটেও না। এই ইন্টারনেট আসক্তিই হতে পারে কাজের হাতিয়ার। দেখা গেছে, সামাজিক যোগাযোগকর্মী হিসেবে এই ইন্টারনেট আসক্তরাই ভালো করে।
নাটকীয় বাচনভঙ্গি, সাবলীল উপস্থাপনা = শিক্ষকতা:
একটা কক্ষে ১০০ জন শিক্ষার্থীকে সামলানো চাট্টিখানি কথা নয়। তার ওপর তাদের শিক্ষাদান মোটেও হেলাফেলার বিষয় নয়। চাই মন্ত্রমুগ্ধ করার ক্ষমতা। বন্ধুদের আড্ডায় প্রায়ই দেখা যায়, যে কোনো একজন পুরো মাতিয়ে রাখছেন একটি আড্ডাকে। সদাবাঙ্ময় ওই মানুষটিই পারেন একসঙ্গে অনেকগুলো মানুষকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে। তাই এই বৈশিষ্ট্যগুলোই পারে একজন ভালো শিক্ষক হয়ে উঠতে। বলাবাহুল্য, তার সঙ্গে শিক্ষাটুকু তো লাগবেই।
খোশ গল্পকার = ব্লগার:
কেউ কেউ আছেন গল্প হলে নাওয়া-খাওয়া ভুলে যান। দুনিয়ার যাবতীয় বিষয় নিয়ে তার ব্যাপক কৌতুহল, সঙ্গে জানাশোনা। ব্যস, তাকে আর কে থামায়! কোনো একটা ঘটনা ঘটলেই হলো, সেটার চুলচেরা বিশ্লেষণ নিয়ে তিনি হাজির পরিচিতমহলে। মোটকথা, কোনো কিছু ঘটলে, সেটা নিয়ে আর দশজনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা না করতে পারলে অনেকেই শান্তি পান না। মানুষের এই বৈশষ্ট্যটিকেও কাজে লাগানোর কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, ব্লগার হিসেবে এরা সিদ্ধহস্ত। আর তাই ব্লগ সংশ্লিষ্ট যেকোনো চাকরি এদের জন্য উপযুক্ত। হতে পারে সেটা ব্লগ সঞ্চালক কিংবা কোনো ব্লগের পরিচালক।
কাজ পাগল, সদা চঞ্চল=করপোরেট চাকরি:
সপ্তাহের একটা ছুটির দিন। সেই দিনেও অনেকের ঘরে মন টেকে না। কিছু একটা করতে হবে, না হলে শান্তি নেই। হতে পারে কাজটা খুবই সামান্য, তার পরও ওই কাজটি করেই স্বস্তি চান সদাচঞ্চল মানুষটি। বলা হয়, করপোরেট দুনিয়ায় ছুটি বলে কিছু নেই। যে যতটা তৎপর, উন্নতির সিঁড়ি তার জন্যেই খোলা। তাই আপাত দৃষ্টিতে চঞ্চলতা কিংবা কাজপ্রীতি বৈশিষ্ট্যগুলো চোখে লাগলেও, করপোরেট দুনিয়ায় এর মার নেই।
কম প্রচলিত বিষয়ে আগ্রহ = সবার থেকে আলাদা চাকরি:
বন্ধুদের মধ্যে এমন কেউ একজন আছেন, যার আগ্রহের বিষয় একদম আলাদা। যেমন ধরা যাক, বৈশ্বিক উষ্ণতা। এই বিষয়টি নিয়ে তার ব্যাপক কৌতূহল, কৌতূহল থেকে পড়াশোনা, অনেক সময় সেটা গবেষণা পর্যন্তও গড়াতে পারে। অনেকে বিষয়টি দেখে আড়ালে হাসলেও, ফেলনা নয় এই বৈশিষ্ট্য। এমন অনেক কম প্রচলিত বা কম আলোচনায় আসা বিষয় নিয়ে অনেকের আগ্রহ। আর এই আগ্রহ থেকেই হতে পারে ভালো কিছু। যেমন ধরা যাক বৈশ্বিক উষ্ণতার কথাই। এই বিষয়টি এখন গোটা বিশ্বেই গুরুত্ব পাচ্ছে এবং এটা নিয়েই হচ্ছে বিস্তর গবেষণা, লক্ষ্য করা যাচ্ছে ব্যাপক কর্মতৎপরতা। তাই এই বিষয়টি নিয়ে যারা ঘাটাঘাটি করেন, তাদের জন্যেই বসে আছে ওই পদের চাকরি।
সূত্র: প্রথম আলো

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




