কে? কী? কেন?
Part-2
সাউথ চায়না সি, মাছ ধরার একটি ছোট ট্রলার আস্তে আস্তে সান্তুবং জেটি হতে গভীর সমুদ্রের দিকে চলছে। প্রচণ্ড রোদ, স্বভাবতই আইমান হারিস এর মেজেজ টা আজ অন্যান্য দিনের চাইতে চরা। কারণ, হারামজাদা পুত্র আমির মাছ ধরার ফিশিং রডটি আসার সময় বোটে তুলতে ভুলে গেছে। আইমান ভেবে পায় না, এই হারামজাদা পুত্রের কী জীবনেও বুদ্ধি হবে না? সে এই রকম বয়সে তার বাবার সাথে কত কাজই না করেছে। তার বাবার মৃত্যুর পর নিজে কষ্ট করে ভাইবোনদের মানুষ করেছে। আর তার হারামজাদা পুত্র, ফিশিং রড আনতে ভুলে যায়। সে মনে মনে হারামজাদা পুত্রকে আরও খান কতেক গালি দিয়ে কেবিন থেকে Heineken Beer এর একটি ক্যান নিয়ে ডেকে এসে দাঁড়াল। নাহ, আজকে সূর্য প্রচণ্ড রকমের খেপে গেছে। এই শেষ ডিসেম্বর এর রোদ সত্যি অসহয্য, মেজেজ ঠিক রাখা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আইমান এর সহকারী জেলে আদি এসে বলল, আবাং (ভাই) জাল কি ফেলব। আইমান ক্ষেপেগিয়ে বলল, তুই জাল ফেলবি না তো কি বসে বসে আঙ্গুল চুষবি? হঠাৎ টলারটা টলে উঠল। আইমান রেলিং ধরে পতন ঠেকাল। রাগী রাগী চোখে আদির দিকে তাকিয়ে বলল, এত দিনে টলারটাও ঠিকমত চালাতে শিখলি না। এই সময় ট্রলার এর প্রপেলার কিসের সাথে যেন লেগে ভেঙে গেল। একজন আর একজন এর দিকে অবাক হয়ে তাকাল। ট্রলারে অতিরিক্ত প্রপেলার মওজুদ আছে, কিন্তু আশ্চর্জের বিষয়, প্রপেলার কিসের সাথে বাড়ি লেগে ভাংল। হঠাত তারা একটি কাল পাইপকে পানির নিচ হতে উঠেতে দেখল, আমির ভীত স্বরে তার বাবাকে জিজ্ঞ্যাসা করল, বাবা ওটা কী? আইমান ভাল করে দেখে বলল, ভয়ের কিছু নেই, ওটা একটি পেরিস্কোপ, নিচে হয়ত সাবমেরিন আছে, আমাদের ট্রলার এর প্রপেলার এই সাবমেরিন এর সাথে লেগেই ভাঙ্গেছে। কিন্তু এটি তো সাবমেরিন নয়, তাহলে এটি কি?
আগেল কাল নলটির পাশে আরও একটি অপেক্ষাকৃত মোটা নল উঠে আসতে দেখা গেল। হারামজাদা পুত্র আমির তার বাবাকে নতুন নলটি সম্পর্কে নতুন করে প্রশ্ন করার সময় পেল না। তার আগেই বিকট শব্দে চারদিক কেপে উঠল। ছোট মাছ ধরার ট্রলারটি মুহুর্তের মধ্যে অগ্নিকুণ্ডে পরিণত হল।
নতুন জেগে উঠা নল থেকে ছুটে আসা একটি মর্টার শেলই এই সব এর জন্য দায়ি। সান্তুবং জেটির কন্ট্রোল টাওয়ার এর রাডার হতে আইমান হারিস এর ছোট মাছ ধরার ট্রলার এর GPS সিগনাল এর ব্লিপিং চিরদিনের মত হারিয়ে গেল। কন্ট্রোল টাওয়ার এর অপারেটর স্টিক জ্যাক্সন মনে মনে বুড়ো আইমান হারিসকে গালি দিয়ে বিড়বিড় করে বলল, বুড়োকে কত করে বলেছি GPS টা পরিবর্তন করতে, কিন্তু কে শোনে কার কথা, আমার এত মাথা ব্যাথার দরকার কি?
রনীর নাম মরভিন হওয়ার সাথে এই বুড়ো আইমান হারিসের ট্রলার সহ পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়ার মধ্যে খুব শুক্ষ একটি সম্পর্ক আছে। কি সেই সম্পর্ক? তা শুধু একজন লোকই জানে, সে হচ্ছে ভারত এর অতি প্রতিভাধর বিজ্ঞানী মইন চৌধুরী। যে কিনা অতি প্রতিভাধর হওয়া সত্ত্বেও তার প্রতিভা কোন ভাল কাজে ব্যাবহার করেনি। যার অতি প্রতিভার জন্য মাঝে মাঝে পৃথিবীবাসীকে চরম ঝুঁকির মধ্যে পরতে হয়। সে সাউথ চায়না সি তে কি করছে? কি আছে তার প্রতিভা ভরা মাথায়। নতুন কোন ষড়যন্ত্র পৃথিবীবাসীর বিরুদ্ধে? কে থামাবে এই পাগলা হাতিকে?
চলবে..................
মোহাম্মাদ মাইনুল ইসলাম
২০.১২.২০১৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




