somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হাত বাড়ালেই জাল সার্টিফিকেট

১০ ই মার্চ, ২০১০ রাত ১০:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হাত বাড়ালেই নামমাত্র দামে পাওয়া যাচ্ছে জাল সার্টিফিকেট। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, ঢাকা মেডিকেলসহ নামিদামি সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সার্টিফিকেট জাল হচ্ছে অহরহ। সার্টিফিকেট জাল করে অবৈধভাবে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পর্যায়ে কর্মরত আছেন অনেকে। এই তালিকায় আছেন সরকারি কর্মকর্তা, ডাক্তার, সাংবাদিক, শিকসহ বিভিন্ন পেশার লোক। যাচাই-বাছাই করে জাল সার্টিফিকেটের প্রমাণ পাওয়ায় টনক নড়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপরে। প্রতিদিনই জাল সার্টিফিকেট যাচাই করার আবেদন আসছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা তদন্ত করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপরে কাছে পাঁচ শতাধিক যাচাই আবেদনের প্রেেিত এ পর্যন্ত ৫০ টিরও বেশি জাল সার্টিফিকেট শনাক্ত করা হয়েছে। জাল প্রমাণের পর প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অনেক কর্মকর্তা চাকরি খুইয়েছেন ও বিদেশে অধ্যয়নরত অনেকে হারিয়েছেন ছাত্রত্ব। র‌্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে ধরা পড়ছে জাল সার্টিফিকেট তৈরীর কারখানা ও কারিগররা। দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো যাচাই বাচাইয়ের কাজ শুরু হয়নি। কত লোক জাল সার্টিফিকেট নিয়ে চাকরি করছেন তার কোন পরিসংখ্যানও কারো কাছে নেই। এদিকে সার্টিফিকেট জালকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হচ্ছে সরকার ও প্রশাসন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীা নিয়ন্ত্রক দপ্তর জনতা ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মোঃ আকবর আলী মিয়ার সার্টিফিকেট যাচাই-বাছাই করার একটি আবেদন পায়। ব্যাংক কর্তৃপরে আবেদনের প্রেেিত নিরীণ করে তার সার্টিফিকেটটি জাল প্রমাণ পায়। ওই সার্টিফিকেটে লেখা ছিল, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ থেকে ১৯৭২ সালে দ্বিতীয় বিভাগে বিএ পাস করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে সংরতি কাগজপত্রে ওই সালে ওই নামের কোনো ছাত্র পাস করেনি। মোঃ নাজমুল বারী নামে একজন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সমন্বিত বগুড়া জেলা কার্যালয়ে কাজ করছেন। তার কাগজপত্র যাচাইয়ের জন্য দুদকের বগুড়া জেলা কার্যালয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপকে চিঠি দেয়। পরে দেখা যায়, নাজমুল বারী আদৌ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন না। সেনা কল্যাণ সংস্থার কর্মকর্তা আহমেদ হোসেনের সার্টিফিকেট জাল প্রমাণিত হয়েছে। তার সার্টিফিকেটে লেখা ছিল, তিনি ১৯৮৬ সালে বিকম পাস করেছেন। তবে নির্দিষ্ট কোনও কলেজের নাম সার্টিফিকেটে লেখা নেই। শুধু লেখা আছে এক্সটারনাল কলেজ। ডা. মোহাম্মদ শহিদুর রহমান নামের এক ব্যক্তি রাজধানীর উত্তরার উপশম হেলথ কমপ্লেক্স (প্রাঃ) লিমিটেডে চিকিৎসক হিসাবে দায়িত্ব পালন করতেন। তার ভুল চিকিৎসার বিষয়টি সন্দেহজনক হলে প্রতিষ্ঠানটি শহিদুর রহমানের সার্টিফিকেট যাচাইয়ের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠায়। তার সার্টিফিকেটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের নাম রয়েছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় নিশ্চিত করে, ওই নামের কোনও শিার্থী ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ থেকে পাস করেনি।
মনোয়ার হোসেন বরগুনার হলতা ডৌয়াতলা ওয়াজেদ আলী খান কলেজে শিকতা করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ দেখিয়ে। কলেজ কর্তৃপরে আবেদনের কারণে সনদটি যাচাই করে ভুয়া প্রমাণিত হয়। প্রামীণফোনে কর্মরত সজল চৌধুরীর সার্টিফিকেটে লেখা আছে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগ থেকে ২০০২ সালে পাস করেছেন। কিন্তু যাচাই করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপ সজল চৌধুরীর সার্টিফিকেটটি ভুয়া বলে জানিয়েছে।
ব্রিটিশ কাউন্সিলে কর্মরত কাউসার বখত চৌধুরীর সার্টিফিকেটটিও ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে। রুহুল জামান নামে একজন কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় চাকরি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট দেখিয়ে। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির এক আবেদনের পর যাচাই করে দেখা গেছে, রুহুল জামান কখনও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুয়া সার্টিফিকেট ব্যবহার করে পদ্মা লাইফ ইন্স্যুরেন্সে কর্মরত ছিলেন সাইফুল আজম ও রফিকুল ইসলাম নামের দুই ব্যক্তি। শিামন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন নিরীা দপ্তরের কর্মকর্তা গিয়াসউদ্দিন। মন্ত্রণালয়ের আবেদনের পর যাচাই করে গিয়াসউদ্দিনের সার্টিফিকেটটি ভুয়া প্রমাণিত হয়।
সিঙ্গাপুরের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এক্সিকিউটিভ পদে কর্মরত এ ইসলাম। প্রতিষ্ঠানটিতে জমা দেওয়া সার্টিফিকেটে লেখা আছে, তিনি জগন্নাথ কলেজ থেকে ১৯৭৯ সালে বিকম ও ১৯৮১ সালে এমকম পাস করেন। সম্প্রতি ওই প্রতিষ্ঠানটির এক আবেদনের পরিপ্রেেিত প্রমাণিত হয়েছে তার সার্টিফিকেট ভুয়া। গুরুদাস চন্দ্র হালদার নামের একজন নিউইয়র্কের সিটি ইউনিভার্সিটিতে আবেদন করেছিলেন। তার আবেদনের পর সিটি ইউনিভার্সিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে যাচাইয়ের জন্য সার্টিফিকেট পাঠায়। যাচাই করে দেখা গেছে, সার্টিফিকেটটি ভুয়া।
সম্প্রতি তথ্যমন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির নির্দেশে বাসসের ২০ সাংবাদিকের কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়। কাগজপত্র যাচাই করে দেখা গেছে, দুজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নন। এরা হলেন খায়রুল আলম ও অহিদুজ্জামান। খায়রুল আলম যে সার্টিফিকেট বাসসে জমা দিয়েছেন তাতে লেখা আছে, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সরকারি জগন্নাথ কলেজ থেকে ১৯৮২ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স অব আর্টস পাস করেছেন। তার সার্টিফিকেটটি ভুয়া প্রমাণ করে ঢাবি কর্তৃপ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা সার্টিফিকেটে নাম, শিা প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দেখতে হুবহু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেটের মতোই। তফাৎ শুধু একটাই ওই সার্টিফিকেটটির বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ, হল অফিস ও প্রশাসনিক ভবনে রেকর্ড নেই। ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানটি থেকে পাস করা সব শিার্থীর কাগজপত্র সংরতি থাকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়ানস্টপ সার্ভিসের আওতায় সার্টিফিকেট যাচাই-বাছাই শেষে জাল সার্টিফিকেট প্রমাণিত হচ্ছে। এমনকি ১৯২১ সালে পাস করা ছাত্রের তথ্য ও কাগজপত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের রেকর্ড বইয়ে রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীা নিয়ন্ত্রক বরাবর দরখাস্ত করে যে কেউ সার্টিফিকেট যাচাই করে নিতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীা নিয়ন্ত্রক বাহলুল হক চৌধুরী বলেন, সাংবাদিক, ডাক্তার, শিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষেরই ভুয়া সার্টিফিকেট পাওয়া যাচ্ছে।

১২ হাজার টাকায় ভুয়া ডাক্তারি সার্টিফিকেটে
ভারত থেকে এমবিবিএস ও মেডিসিন বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রী এমডি-এর সার্টিফিকেট মাত্র ১২ হাজার টাকায় ক্রয় করে এনে কথিত ডাঃ গোলাম কিবরিয়া ৫ বছর যাবৎ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সেজে প্র্যাকটিস চালিয়ে আসছিলেন। ভেজাল বিরোধী মোবাইল কোর্টের ম্যাজিষ্ট্রেট আনোয়ার পাশার নেতৃত্বে র‌্যাব-৪ এর সদস্যরা মিরপুর স্টেডিয়াম সংলগ্ন পিসিল্যাব নামের একটি বিলাস বহুল প্রাইভেট চেম্বারে অভিযান চালিয়ে ভুয়া বিশেষজ্ঞ ডাক্তার গোলাম কিবরিয়াকে গ্রেফতার করেন। এরপর র‌্যাবসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা রাজধানীর অলিগলি ও অভিজাত এলাকায় অনুসন্ধান চালিয়ে গোলাম কিবরিয়ার মত আরো দেড়শতাধিক ভুয়া ডাক্তারের সন্ধান পান। ডাক্তারদের রেজিস্ট্রেশন প্রদানকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মেডিক্যাল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) সূত্রে জানা যায়, রাজধানীতে দেড় সহস্রাধিক ভুয়া ডাক্তার রয়েছে। এ ছাড়া ভুয়া ডিগ্রীধারী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সংখ্যা অনেক। তারা এমবিবিএস পাস করার পর ভুয়া উচ্চতর ডিগ্রী ব্যবহার করে বছরের পর বছর প্রাইভেট প্র্যাকটিস করে আসছেন। এ ঘটনার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রী ডাঃ আ ফ ম রুহুল হক ভুয়া ডিগ্রীধারী চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার লক্ষ্যে বিএমডিসিকে ঢেলে সাজানোর কথা বলেন।

রাবির সার্টিফিকেট জাল করে প্রভাষক
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট জাল করে সৈয়দপুর মহিলা মহাবিদ্যালয়ে প্রভাষক পদে চাকরি নেয় মো. হাবিবুল হক নামে এক শিক। পরে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল মো. মোখলেছুর রহমান বাদী হয়ে স্থানীয় থানায় এ মামলা করেন। পরে মহাবিদ্যালয় কর্তৃপ তার সনদের ব্যাপারে জানতে চেয়ে পরীা নিয়ন্ত্রক বরাবর আবেদন করে। এ আবেদনের প্রেেিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীা নিয়ন্ত্রক গত বছরের ১ ও ৭ জুলাই পৃথক পত্রে হাবিবুল হকের জাল সনদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপরে কাছ থেকে ঘটনাটি নিশ্চিত হওয়ার পর কর্তৃপ জাল সনদপত্র দিয়ে চাকরি নেওয়া ওই শিকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে ধরা পড়ছে
র‌্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে নিয়মিতই ধরা পড়ছে জাল সার্টিফিকেট ও সার্টিফিকেটর জাল করার সরঞ্জামসহ কারিগররা। গত দুই মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন নীলক্ষেত, কাকরাইল, ফকিরাপুল ও গুলিস্তানে র‌্যাবের বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালিত হয়। এসব অভিযানে র‌্যাব সদস্যরা বিপুল পরিমান জাল সার্টিফিকেট এবং সার্টিফিকের তৈরীর সরঞ্জামসহ বেশ কয়েকজনকে আটক করে। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর জাল সার্টিফিকেট তৈরীর অভিযোগে ফকিরাপুল থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। গোপন খবরের ভিত্তিতে ওই দিন দুপুর দেড়টায় পুলিশ ফকিরাপুলের জনতা অনুবাদ সেন্টারে অভিযান চালায়। এ সময় কিয়ারেন্স সার্টিফিকেট, জাল ন্যাশনাল আইডি কার্ড, জাল মেডিকেল সার্টিফিকেট ও বিভিন্ন শিাগত যোগ্যতার জাল সনদ তৈরির কাজে ব্যবহৃত কম্পিউটার এবং প্রিন্টার উদ্ধার করা হয়। পুলিশ ওই সেন্টারের মালিক মো. ফারুককে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে ফারুক পুলিশকে জানান, তিনি দুই হাজার টাকার বিনিময়ে কিয়ারেন্স সার্টিফিকেট এবং পাঁচ হাজার টাকার বিনিময়ে মেডিকেল সার্টিফিকেট তৈরি করতেন।
গত ১৯ জানুয়ারি নীলক্ষেতের বাকুশাহ মার্কেট থেকে র‌্যাব-২ এর সদস্যরা সার্টিফিকেট জালকারী একটি চক্রকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের জাল সনদপত্র, নম্বরপত্র, জাতীয় পরিচয়পত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ব্যাংক সার্টিফিকেট এবং এসব তৈরির সরঞ্জাম।
র‌্যাব-২-এর মেজর মো. আবদুল মালেক জানান, তাঁদের কাছে খবর ছিল, নীলতে এলাকার বাকুশাহ মার্কেটের একটি দোকানে এ ধরনের জাল সনদের ব্যবসা চলে আসছে। এরপর অভিযান চালিয়ে শামীম কম্পিউটার্স নামের একটি দোকান থেকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের জাল সনদপত্র, নম্বরপত্র, মুক্তিযোদ্ধা সাময়িক সনদপত্র, জাতীয় পরিচয়পত্র, বিভিন্ন ধরনের সিল, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ব্যাংক সার্টিফিকেটসহ প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার ও প্রিন্টার জব্দ করেন। সেখান থেকে গ্রেপ্তার করা হয় রিয়াদ ও মুরাদ নামের দুই ভাইকে। র‌্যাব জানায়, এর আগেও তারা নীলতে এলাকা থেকে এ ধরনের একাধিক চক্র গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু গোপনে তাঁদের কর্মকাণ্ড চলে আসছে।
ওই ঘটনার দুই মাস আগে একই মার্কেটে অভিযান চালিয়ে র‌্যাব সদস্যরা বিপুল পরিমাণ সরকারী ও বেসরকারী জাল সার্ফিফিকেট ও জাল সার্টিফিকেট তৈরীর সরঞ্জামাদিসহ দুই জনকে গ্রেফতার করে।
র‌্যাবের অন্য এক অভিযানে ঢাকার গাবতলী থেকে মেডিক্যাল ডিপ্লোমা ট্রেনিং একাডেমী নামে ভূয়া প্রতিষ্ঠান হতে বিপুল পরিমান ভূয়া ডাক্তারি সার্টিফিকেটসহ মিসেস জলি (৩৫), ডাক্তার মোঃ জাহাঙ্গীর (৪৫) কে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, উক্ত ট্রেনিং একাডেমী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া দীর্ঘদিনয যাবৎ এমবিবিএস, ডেন্টাল ডিপ্লোম, বিডিএস কোর্স, নার্সিং ডিপ্লোমা, রেডিওলজি ডিপ্লোমা ইত্যাদি কোর্সে ছাত্র ভর্তি করে ভূয়া সার্টিফিকেট দিয়ে আসছিল।

সার্টিফিকেট জাল কারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হচ্ছে সরকার-প্রশাসন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, জাল সার্টিফিকেট ব্যবহারকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ুণœ করেছেন। এরই মধ্যে যাচাই-বাছাই করে বেশকিছু সার্টিফিকেট জাল পাওয়া যায়। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নন, এরা বিভিন্ন জায়গা থেকে ভুয়া সার্টিফিকেট ব্যবহার করেছেন। এর পেছনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও প্রতারকচক্র জড়িত রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপ জাল সার্টিফিকেটধারী ও সহায়তাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আবেদনের প্রেক্ষিতে আমরা যাচাই-বাচাই করি। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকেও অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। র‌্যাব-২ এর অপারেশন অফিসার এসপি এহসান জানান, এ ধরনের অভিযানে প্রায়ই অপরাধীরা ধরা পড়ে। আমরা আটক করে থানায় হস্তান্তর করি। পরবর্তীতে কোর্ট জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেন।
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×