somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফিরে পাওয়া স্বাধীনতা : মুক্ত বাতাসে স্নান

১২ ই মে, ২০১০ রাত ১১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব শেষ করলাম। বিশাল কর্মযজ্ঞ। এখন নিজেকে অনেক স্বাধীন মনে হচ্ছে। স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার করলাম।
বিদায়ী সভাপতি হিসেবে দু‘বার বক্তৃতা দিতে হয়েছে আজ। একটি লিখিত আর একটি অলিখিত। লিখিতটা রাখলাম সামুতে......



বার্ষিক সাধারণ সভা
কার্যনির্বাহী কমিটি-২০০৯

সভাপতির বক্তব্য

প্রিয় সহযোদ্ধাবৃন্দ,
সালাম ও বিদায়ী শুভেচ্ছা জানবেন। ২০০৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিকতা শুরু করে আপনাদের সাথে নানা ঘটনার সুখকর স্মৃতি নিয়ে আজ বিদায়ী বক্তৃতা দিতে দাড়িয়েছি। ঘটনাবহুল একটি বছর আপনাদের নিয়ে অনেক বেশী আনন্দে কাটাতে পেরে বেশি ভালো লাগছে। গত একটি বছর আপনাদের সাার্বিক সহযোগিতায় যেভাবে সাংবাদিক সমিতি পরিচালিত হয়েছে তা নিশ্চয়ই ভবিষ্যত ইতিহাসে লেখা থাকবে। আর সে ইতিহাসের ভাষ্য পড়ে নিশ্চয়ই ভবিষ্যত প্রজন্ম প্রভাবিত হবে। বক্তৃতা শুরুতেই আমি সমিতির নবনির্বাচিত নেতৃত্বকে অভিনন্দন জানাই।

সুহৃদগণ
গত এক বছরে নানা সীমাবদ্ধতার মাঝেও আমরা গতানুগতিক কার্যক্রমের পাশাপাশি কিছু ব্যতিক্রমী কর্মসূচি পালন করেছি। সমিতির ওয়েব সাইট নির্মাণ, প্রস্তাবের বিশেষ প্রকাশনা ও সেমিনার, আন্তর্জাতিক ট্যুর, ব্রিটিশ কাউন্সিলে কোর্স, ওয়ার্কশপ, রাষ্টপতির সঙ্গে সৌজন্য সাাত, ইফতার ও সাংবাদিক মনোয়ার আহম্মেদ স্মৃতি ট্রাস্ট ফান্ড গঠন, বার্ষিক সেমিনার ও সুভ্যেনির প্রকাশ করেছি। এসব কর্মসূচি সাংবাদিক সমিতির মার্যাদাকে যেমন বাড়িয়েছে, তেমনি সমিতির সদস্য ও ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকদের জন্য ছিল উপভোগ্য।
এতো আনন্দের মাঝেও সবচেয়ে ব্যর্থতা ও কষ্টকর বিষয় ছিল সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনাগুলো। গত এক বছরে একাধিক ক্যাম্পাস রিপোর্টার ছাত্রনেতা নামধারী সন্ত্রাসীদের হাতে নির্যাতিত হয়েছেন। কিন্তু বরাবরের মতো আমরা সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার পেতে ব্যর্থ হয়েছি। এ ব্যর্থতা মেনে নিয়ে নির্যাতিত সাংবাদিকদের প্রতি সমবেদনা জানাই। একই সাথে আমি মনে করি, ব্যর্থতার পেছনে দায়ী কারণগুলো চিহিৃত করে প্রতিকারে উদ্যোগী না হলে আমাদের জন্য ভবিষ্যতের পথচলা আরো পঙ্কিল হবে। সাংবাদিক সমিতির সদস্যরা আরো বেশি সচেতন ও সামগ্রীকভাবে ঐক্যবদ্ধ থাকলে ভবিষ্যতে যে কোন নির্যাতনের শাস্তি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

প্রিয় বন্ধুরা,
গত এক বছরে আমাদের গৃহীত কর্মসূচিগুলো আপনাদের কাছে অনেক বেশি উপভোগ্য বলে আমার বিশ্বাস। প্রতিটি কর্মসূচি শেষে আপনাদের তৃপ্তিময় প্রতিক্রিয়া আমার এই বিশ্বাসকে আরো অটুট করেছে। তবে আমি তৃপ্তির ঢেকুর তুলছি না। আমার মনে হচ্ছে অনুষ্ঠানগুলোতে আরো শ্রম যোগ হলে সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির পাশাপাশি আপনাদের জন্য উপভোগ্য হতো। পুরো বছরের কর্মযজ্ঞে আপনাদের স্বতষ্ফুর্ত উপস্থিতি আমাদের কাজকে অনেক সহজ করেছে। তবে কারা আমাদের অগ্রযাত্রায় কান্ডারী হয়েছেন, তা আপনাদের ভালো করেই জানা আছে। আমি এখানে নাম উল্লেখ করে তাদের ছোট করতে চাই না।

প্রিয় সহযাত্রীগণ,
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিক হিসেবে সামগ্রিক পথচলায় আমরা একই পরিবারের সদস্যের মতো। নীতি-আদর্শগত ভিন্নতা সত্ত্বেও আমাদের বড় পরিচয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির মতো একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠনের সদস্য আমরা। যখন আমরা এ বিষয়টি ভুলে যাই তখনি বিপত্তি ঘটে। সাম্প্রতিক সময়ে সমিতিতে সংগঠিত ঘটনাবলী এই
বিষয়টিকে আরো স্পষ্ট করে আমাদের সামনে নিয়ে এসেছে। অনেক ছোট বিষয়ে আমাদের মধ্যে মতবিরোধ হয়েছে। যদিও সমিতির সকল সদস্য এসব বিষয়ে জড়িত নন, তপানি অনাকাঙ্খিত বিষয়গুলো এড়াতে সকলের সচেষ্ট থাকা দরকার বলে আমি মনে করি। যারা অনাকাঙ্খিত ঘটনার জন্ম দেন, তারা পরবর্তীতে অনুতপ্ত হন বা না হন; জনসম্মুখে কিন্তু আপনাদের মুখোশ খুলে পড়ে এবং অনেকগুলো প্রশ্নের অবতারণা করে। প্রত্যদর্শীরা হয়তো আপনাদের পুরো জীবনের কর্মকান্ডের মধ্য থেকে অবতারিত প্রশ্নগুলোর জবাব মেলাতে চাইবেন।

সম্মানিত সাংবাদিকবৃন্দ
আমরা দেশে ছাত্র রাজনীতির আদর্শবাদী চরিত্র দেখতে চাই। ঐতিহ্যগতভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি কখনো ছাত্র রাজনীতির বিপে নয়। কিন্তু চলমান ছাত্র রাজনীতির অনেক বিষয়ের সাথেই হয়তো আমরা একমত হতে পারি না। যার উদ্দেশ্য ছাত্র রাজনীতির আদর্শবাদী ধারা ফিরিয়ে আনা। এেেত্র আমরা সচেতন থাকবো। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি যেন ছাত্র রাজনীতির ক্রীড়ানকে পরিণত না হয়, এ ব্যাপারে সাংবাদিক সমিতির সদস্যদের সচেতন থাকা উচিত। বিশেষ করে নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে এ বিষয়ে অনেক বেশি যতœবান হবেন বলে আমি মনে করি।

প্রিয় কলম যোদ্ধারা,
একটু পরেই নতুন নেতৃত্ব সমিতির দায়িত্বভার গ্রহন করবে। অত্যন্ত যোগ্য সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী কমিটি সাংবাদিক সমিতির দায়িত্ব পাচ্ছে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব আসার কথা থাকলেও আমরা এবারও তাতে ব্যর্থ হয়েনি। নির্বাচন বাদ দিয়ে সিলেকশনে যেতে হয়েছে আমাদের। তবে ভবিষ্যতে গঠনতন্ত্র পুরোপুরি মেনে কমিটি হবে বলে আমি আশাবাদী।

সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা,
দীর্ঘ প্রায় ছয় বছর ক্যাম্পাস সাংবাদিকতা ও সাংবাদিক সমিতির সাথে জড়িত থাকায় এই পেশার সাথে অনেক বেশি জড়িয়ে গেছি। বিশেষ করে সাংবাদিক সমিতির সাথে চলতে গিয়ে এমন কিছু বিষয় শিখেছি, যা নিজেকে বাস্তববাদী করবে। পুরো দায়িত্ব পালনকালে অনেকে আমাদের সঙ্গী হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে শুরু করে সহযোগিতার জন্য সবার কাছে চির কৃতজ্ঞতা রইল। তাদের দীর্ঘায়ু ও পেশাগত জীবনে সমৃদ্ধির প্রত্যাশায় রইলাম। সকলের সবাঙ্গীন মঙ্গল কামনা করে শেষ করছি। সামগ্রিক কর্মকান্ডে আমার অনেক ভুল-ভ্রান্তি থাকতে পারে, এজন্য সকলের কাছে মার্জনা চাচ্ছি।

অশেষ ধন্যবাদ।

শুভেচ্ছান্তে,


শাহজাহান শুভ
সভাপতি,
কার্যনির্বাহী কমিটি- ২০০৯
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি।
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×